Sylhet Today 24 PRINT

কাউন্সিলরদের বিরোধিতার মুখেই দায়িত্ব নিচ্ছেন কয়েস লোদি

নিউজ ডেস্ক |  ১১ জানুয়ারী, ২০১৫

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাবেক অর্থমন্ত্রি শাহ কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি হওয়ার কারণে তার মেয়র পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে। একইভাবে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে প্যানেল মেয়র-১ ও সিটি কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদি ভারপ্রাপ্ত মেয়র হয়েছেন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে। কিন্তু সরকারি আদেশ আসার পর বিরোধিতার মুখে পড়েছেন কয়েস লোদি।



কাউন্সিলরদের এই বিরোধিতার মুখেই রোবরার ১১ জানুয়ারি ভারপ্রাপ্ত মেয়রের পদে বসছেন কয়েস লোদি। এ নিয়ে উত্তপ্ত সিটি কর্পোরেশন। মহানগরীতে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। এদিকে সিটি কাউন্সিলররা কয়েস লোদিকে ঠেকানোর ঘোষণার প্রেক্ষিতে সিসিক কার্যালয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করছেন অনেকেই।



জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত মেয়র কয়েস লোদি একাধিক মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি। কয়েক দিন আগে তিনি নিজেও জেলে ছিলেন, জামিন নিয়ে বেরিয়ে এসেছেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিয়োগ দানের ক্ষেত্রে তাঁর মামলাগুলো আমলে নেয়নি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। একই অভিযোগে অভিযুক্ত থাকার কারণে তাঁর ভারপ্রাপ্ত মেয়রের বৈধতা তুলেছেন অপরাপর কাউন্সিলররা।



কয়েস লোদির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযো ওঠেছে সিলেট কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার ভাঙচুর মামলার আসামি হিসেবে, সে হামলার সময়ে একজন লোক নিহত হয় এবং কয়েস লোদি এই মামলায় জেলেও ছিলেন বেশ কিছু দিন।



এদিকে, কয়েস লোদি ও তাঁর বিরুধিপক্ষ গত তিন দিন ধরে নিজেদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক করে নিজেদের দল ভারি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর বিরোধিপক্ষ ইতোমধ্যেই সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। নেতৃত্বে আছে সিটি কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমেদ ও ফরহাদ চৌধুরী শামীম। তারা প্রয়োজনে আইনেরও আশ্রয় নেবেন বলে জানিয়েছেন।



সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্বগ্রহণ নিয়ে বির্তকের মধ্যে শনিবার (১০ জানুয়ারি) কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন রেজাউল হাসান কয়েস লোদি। দুপুরে হাউজিং এস্টেট এলাকায় কয়েস লোদির বাসায় এ বৈঠক হয়। বৈঠকের আগে তিনি মোবাইল ফোনে এসএমএস দিয়ে কাউন্সিলরদের আমন্ত্রণ জানান। বৈঠকে ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোস্তাক আহমদ, ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিক বক্স লিপন, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর দিনার খান হাসু, ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রকিবুল ইসলাম ঝলক, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমান ইলিয়াস ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিকন্দর আলী উপস্থিত হন। 



এ ব্যাপারে রেজাউল হাসান কয়েস লোদি  বলেন- আমি কাউন্সিলরদের দাওয়াত করেছিলাম। তাই আমন্ত্রণে তারা এসেছেন। এটা কোনো গোপন বৈঠক নয়। ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব নিতে আজ নগরভবনে যাবেন বলে জানিয়েছে কয়েস লোদি

 


অপরদিকে কয়েস লোদিকে দায়িত্ব গ্রহণ করতে দেওয়া হবে না বলে আবারও জানিয়েছেন তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব  আনা কাউন্সিলররা।



কয়েস লোদির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের পর আবারও তাকে ঠেকানোর কথা বলেছেন ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরর ফরহাদ চৌধুরী শামীম। তিনি বলেন- নগরবাসীর দায়িত্ব নিতে তাকে দেয়া হবে না। আমরা জনগণের জনপ্রতিনিধি। জনগণকে নিয়েই আমরা তাকে প্রয়োজনে বাঁধা প্রদান করবো। 




ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসবে ছালেহ আহমদ দায়িত্ব পালন করবেন জানিয়ে শামীম বলেন- যে ব্যক্তি শহীদ মিনারে হামলা করে আমাদের চেতনায় আঘাত করতে পারে সেই ব্যক্তিকে সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মানবে না নগরবাসী।



এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব বলেন, শুনেছি কয়েস লোদি আজ ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিতে আসবেন। এজন্যে আনুষ্ঠানিকতার কিছু নাই। তিনি যখনই চাইবেন তখন থেকেই দায়িত্ব নিতে পারেন।



অনুসন্ধানে জানা যায়, কয়েস লোদির বিপক্ষে দল ভারি হচ্ছে ক্রমশ। মন্ত্রণালয়ের চিঠি আসার পর ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানিয়েছিলেন- মন্ত্রণালয় যাকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র দিয়েছে তাকেই তিনি মেনে নিয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর অবস্থান পরিবর্তন করে বলেন- শহীদ মিনারে হামলার ঘটনার দায়েরকৃত মামলার চার্জশিটভূক্ত আসামী রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে অন্যান্য কাউন্সিলররা মেনে নিচ্ছেন না। এরকম অভিযুক্ত কোন ব্যক্তিকে তিনিও ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে চান না।


 

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রবল বিরোধিতার মুখে ভারপ্রাপ্ত মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদি। পাল্টাপাল্টি অবস্থান ও বিরোধিতার কারণে সিটি কর্পোরেশনে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির প্রবল আশঙ্কা। 

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.