Sylhet Today 24 PRINT

‘ঋণ আদায়ের চাপে’ বিয়ানীবাজারে ব্যাংক কর্মকর্তার আত্মহত্যা, সহকর্মীসহ গ্রেপ্তার ২

বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি |  ০১ আগস্ট, ২০১৭

সিলেটের বিয়ানীবাজারে এক ব্যাংক কর্মকর্তার আত্মহত্যার পেছনে রয়েছে ঋণ আদায়ের চাপ, ঋণ পরিশোধে অস্বীকৃতি ও এক সহকর্মীর আত্মহত্যার প্ররোচনা, এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (৩১ জুলাই) নিজ ফ্ল্যাটে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। পুলিশ নিহতের বাসা থেকে চার পাতার একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে, যেখানে তিনি তার মৃত্যুর কারণ লিখে গেছেন বলে দাবি পুলিশের।

এঘটনায় নিহতের ভাই সুজিত দাস বাদী হয়ে আলী আহমেদ সেলিম ও কামরুন্নাহার স্বপ্না দম্পতিকে আসামী করে লিখিত এজাহার দায়ের করলে বিয়ানীবাজার থানার মামলা নং-০১, তারিখ-০১/০৮/২০১৭খ্রিঃ, ধারা-৩০৬ পেনাল কোড রুজু হয়।

মামলার পর বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় আসামী আলী আহমেদ সেলিম ও কামরুন্নাহার স্বপ্না দম্পতিকে সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকা হতে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তার আলী আহমেদ সেলিম একজন ব্যবসায়ী এবং সেলিমের স্ত্রী কামরুন্নাহার স্বপ্না যমুনা ব্যাংক সিলেট বন্দরবাজার শাখার এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে কর্মরত।

নিহতের রেখে যাওয়া চিরকুটের উদ্ধৃতি দিয়ে সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আলী আহমেদ সেলিম ও কামরুন্নাহার স্বপ্না দম্পতি যমুনা ব্যাংকের ডাইরেক্টরের আত্মীয়ের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে যমুনা ব্যাংক লিমিটেড, বিয়ানীবাজার শাখা হতে বিপুল অংকের ঋণ গ্রহণ করে ঋণের টাকা ফেরত প্রদানে অস্বীকার করেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, ভিকটিম, যমুনা ব্যাংক লিমিটেড, বিয়ানীবাজার শাখার ব্যবস্থাপক হওয়ায় তার উপর সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব থাকায় তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে উক্ত ব্যক্তিদ্বয়ের নিকট ব্যাংকের আমানত ফেরত আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

"উক্ত ব্যক্তিদ্বয় ঋণ গ্রহণের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে এবং উক্ত ঋণ গ্রহণের বিষয়টি কারো নিকট জানালে ভিকটিমের সন্তানদের ক্ষতিসাধন করবে নতুবা ভিকটিমকে আত্মহত্যা করার জন্য বলে।"

উল্লেখ্য, যমুনা ব্যাংক লিমিটেড, বিয়ানীবাজার শাখার ব্যবস্থাপক সজল কান্তি দাস উপজেলা শহরের দক্ষিণ বাজারস্থ মোহনা বিল্ডিং এর ৩য় তলার মধ্য ফ্ল্যাটে ভাড়াটিয়া হিসাবে বাস করতেন। সোমবার সকালে অফিসে আসলেও দুপুরের খাওয়ার কথা বলে বাসায় যান। এরপর সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি অফিসে না ফিরলে সহকর্মীরা তার বাসা পর্যন্ত খোঁজ নেন। বাসায় গিয়ে তারা ভেতর থেকে দরজা বন্ধ অবস্থায় পান। এমতাবস্থায় ব্যাংকের সহকারী ব্যবস্থাপক সাহেদ আহমদ থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। সন্ধ্যা অনুমান ০৭:৩০ ঘটিকায় পুলিশ ঘরের দরজাটি ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ সজল কান্তি দাসের আত্মীয়-স্বজনগণ দেখেন যে, ব্যাংক কর্মকর্তা তার বাসার বৈদ্যুতিক পাখার সাথে নাইলনের রশি দিয়া গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় আছেন।

সজল কান্তি দাসের বাসায় রক্ষিত টেবিলের উপরে লেখা মোট ৪ পাতার একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.