Sylhet Today 24 PRINT

রোহিঙ্গাদের নামে সিলেটে অর্থ উত্তোলনের হিড়িক, বন্ধের নির্দেশ জেলা প্রশাসকের

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মায়ানমারে হামলার শিকার হয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। এই রোহিঙ্গা শরনার্থীদের সহযোগীতার নামে সিলেটজুড়ে চলছে অর্থসংগ্রহ। প্রতিদিন বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের উদ্যোগে এসব অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

তবে এভাবে লাগামহীনভাবে অর্থসংগ্রহকে চাঁদাবাজি উল্লেখ করে সিলেটের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার বলেছেন, এই চাঁদাবাজি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনেরও সহযোগীতা চেয়েছি। রোহিঙ্গাদের জন্য এভাবে অর্থ সংগ্রহের প্রয়োজন নেই।

গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এরপর থেকে সেখানে দেশটির সেনাবাহিনীর চালানো সহিংস অভিযানে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি পোড়ানো, গণহত্যা ও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। জাতিসংঘ বলছে, এর জের ধরে ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা।

রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জন্য ২৬ আগস্ট থেকে সিলেটে শুরু হয় অর্থসংগ্রহ। নগরীতে প্রতিদিনই ট্রাকসহযোগে ও দানবাক্স নিয়ে হেঁটে হেঁটে ত্রান সংগ্রহ করছে বিভিন্ন সংগঠন। বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠনের উদ্যেগেও ত্রান সংগ্রহ করা হচ্ছে। বেশকয়েকটি মাদ্রাসার উদ্যোগেও অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার নগরী ঘুরে দেখা যায়, নগরীর বিভিন্ন মোড়ে ট্রাক সহযোগে অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে। সিলেট মহানগর ইমাম সমিতি ও ইসলামী আন্দোলনের উদ্যোগে এসব অর্থসংগ্রহ করা হচ্ছে। ট্রাকে মাইক লাগিয়ে মজলুম রোহিঙ্গা মুসলিমদের' জন্য অর্থ প্রদানের আহ্বান জানানো হচ্ছে। এসব আহ্বানে সাড়া দিয়ে টাকাও দিচ্ছেন অনেকে।

এছাড়া সোবাহানীঘাট মাদ্রাসা ও এতিমখানার উদ্যোগেও সোবহানীঘাট পয়েন্টে মাদ্রাসা ছাত্রদের অর্থ সংগ্রহ করতে দেখা যায়।

হিউম্যানিটি ফর রোহিঙা ব্যানারেও সিলেট থেকে অর্থ সংগ্রহ করে বৃহস্পতিবার টেকনাফের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়।

এছাড়া বৃহস্পতিবার কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের উদ্যোগে নগরীর বিভিন্ন বিপনী বিতানে ও এমসি কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কলেজ ক্যাম্পাসে অর্থ সংগ্রহ করা হয়।

অর্থ সংগ্রহের ব্যাপারে এমসি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আলী হায়দার বলেন, সংগৃহীত অর্থ কলেজ প্রশাসনের সাথে আলাপ করে শরণার্থী রোহিঙ্গাদের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়া হবে।

তবে সিলেটের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার বলেন, এভাবে অর্থ সংগ্রহের প্রয়োজন নেই। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ইতোমধ্যে ফেসবুকে একটি একাউন্ট নাম্বার দিয়ে জানিয়েছেন কেউ রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা করতে চাইলে এই নাম্বারে প্রেরণ করতে পারেন। ফলে এরপর আর ব্যক্তি ও অন্য সংগঠনের উদ্যোগে টাকা উত্তোলনের প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, সিলেটের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে টাকা তোলা হচ্ছে। এভাবে টাকা উত্তোলন বন্ধে সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। আর নগরীতে রোহিঙ্গাদের নামে টাকা উত্তোলন বন্ধে সিলেট মহানগর পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.