Sylhet Today 24 PRINT

মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক সড়কে নাকাল চালক-যাত্রীরা

বড়লেখা প্রতিনিধি |  ১২ অক্টোবর, ২০১৭

মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম (বড়লেখা) আঞ্চলিক মহাসড়কের চান্দগ্রাম-জুড়ী কুইয়াছড়ি ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটারে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্তের কারণে নষ্ট হচ্ছে যানবাহনের যন্ত্রাংশ। ভাঙাচুরা রাস্তায় যানবাহনগুলোর গতি কমে গেছে। ফলে পৌর শহর এলাকায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। অন্যদিকে গাড়ির ঝাঁকুনিতে নাকাল চালক-যাত্রীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম (বড়লেখা) আঞ্চলিক মহাসড়কের চান্দগ্রাম-মাইজগ্রাম, খলাকান্দি, বড়লেখা পৌর শহরের উত্তর চৌমুহনী থেকে গাজিটেকা-যাত্রীছাউনি, ষাটমা স্কুল, ডাকবাংলা, মধ্যবাজার, লাইটেস স্ট্যান্ড, পাখিয়ালা, থানা এলাকা, উপজেলা, কাঁঠালতলী, দক্ষিণভাগ বাজারের উত্তর অংশ, ওয়াবদা, সফরপুর, হাতলিঘাট, কুয়াইয়াছড়ি এলাকার অবস্থা বেশি খারাপ। এসব স্থানে সড়ক ভেঙে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।

যাত্রী, স্থানীয় ও পরিবহন শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম (বড়লেখা) আঞ্চলিক মহাসড়কের এই ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে সফরপুর, হাতলিঘাট, কুয়াইয়াছড়ি এলাকায় গত পাঁচ মাসে কয়েক দফা বন্যার পানি ওঠে সড়ক বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। সড়ক থেকে পানি নেমে যাওয়ায় এসব স্থানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে সওজ যানচলাচলের জন্য ইট ও বালি দিয়েছে। তবে জোড়াতালির এ সংস্কারে কমেনি জনদুর্ভোগ। এছাড়া সড়কের অন্য অংশগুলো প্রায় একবছর ধরে একটু একটু করে ভাঙছে। সড়কের মধ্যে ছোট-বড় ফাটল ও ঢেউয়ের মতো অসমতল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে বৃষ্টিপাতের সময় সড়কে ফাটল ও টেউয়ের মতো স্থান ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়। এসব গর্তের মধ্য দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন। এই সড়ক দিয়ে বড়লেখা উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাসহ আশাপাশের উপজেলার মানুষ জেলা সদরে আসা যাওয়া করেন।

সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক দক্ষিণভাগ স্ট্যান্ডের ফারুক আহমদ বলেন, ‘ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চালাইতে গিয়া কষ্ট হয়। প্যাসেঞ্জার বিরক্ত হয়। নিজে একবার গাড়ি চালাইয়া গেলে আর মনে চায় না গাড়ি চালাইতাম। খুব খারাপ লাগে। গাড়ির বিভিন্ন জিনিসপত্র নষ্ট অয়। কোনদিন যে রাস্তা ঠিক অইবো? খালি ইট আর বালি দেওয়া অয় রাস্তাত।’

এই সড়কের নিয়মিত যাত্রী সরকারি কর্মকর্তা দিলীপ কুমার দাস বলেন, ‘গত প্রায় পাঁচ মাস থেকে এই সড়কে দুর্ভোগ চলছে। সীমাহীন কষ্ট হচ্ছে। এখন এটাকে সড়ক মনে হয়না। সড়কটির ৩টি স্পট পুকুরের মত হয়ে গেছে। পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে। গাড়ি গর্তে পড়ে ঝাঁকুনি দেয়। তখন ভয় হয়।’

খলিলুর রহমান নামের এক যাত্রী জানান, কুলাউড়া থেকে বড়লেখা আসি প্রতিদিন। রাস্তার মাঝে ঢেউ ঢেউ। সব সময় ঝাঁকুনি হয়। আসা যাওয়া খুব কষ্ট হয়। রাস্তা ভাঙা থাকার কারণে অফিসে পৌঁছাতে সময় বেশি লাগে। এক ঘন্টার রাস্তায় এখন প্রায় ২ ঘন্টা লেগে যায়।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ বলেন, ‘সড়কটির বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো দ্রুত সংস্কারের জন্য চেষ্টার কমতি নেই আমাদের। বারবার মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। ডিসি স্যারও চিঠি লিখেছেন। মন্ত্রণালয় থেকে একটি টিম সরেজমিনে অবস্থা দেখে গেছেন। এখনো বরাদ্দ হয়নি। বরাদ্দ হলে টেন্ডার করা হবে।’ তিনি জানান, এই সড়কের প্রায় ৯ কিলোমিটারের জন্য পিরিয়ডিক মেইনটেনেন্স প্রোগ্রাম (পিএমপি) আওতায় প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। ইস্টিমিট দাখিল করা হয়েছে। সওজের সিলেট জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে দরপত্র আহবান করা হবে। এছাড়া উক্ত সড়কের বিভিন্ন অংশের ১৪ দশমিক ৪ কিলোমিটার সড়ক মজবুতিকরণসহ একটি ব্রিজের কাজ করার জন্য একটি ডিপিপি পাশ হয়েছে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.