Sylhet Today 24 PRINT

এখনো সিসি ক্যামেরার আওতায় আসেনি নগরীর বেশিরভাগ এলাকা

শাহ শরীফ উদ্দিন |  ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

নগরীরতে অপরাধ কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রনে পুরো নগরী ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যমেরার আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছিলো সিলেট সিটি কর্পোরেশন। তবে এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ এলাকাই রয়ে গেছে সিসি ক্যামেরার আওতামুক্ত। আবার যেসব ক্যামেরা বসানো হয়েছে সেগুলোর বেশিরভাগও কার্যকর নয় বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, এখন পর্যন্ত নগরীতে  ১১৫টি সিসি ক্যমেরা বসিয়েছে সিসিক।

সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, পুরো নগরী সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা সময়সাপেক্ষ ও অনেক ব্যয় প্রয়োজন। তবে পর্যায়ক্রমে পুরো নগরী সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

সিলেট মেট্রপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, সিসি ক্যামেরা প্রশাসনের কাজে সহায়ক হয়। কোন অপরাধ ঘটলে পুলিশ তাৎক্ষণিক অপরাধী সনাক্ত করতে পারে। এমনকি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে অপরাধীর গতিবিধি দেখে কোন অপরাধ সংগঠিত হওয়ার আগে প্রশাসন তা প্রতিহত করতে পারে।
 
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমান সময়ে সিসি ক্যামেরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিশ। সিসি ক্যামেরা যেমন একদিকে নগরীকে নিরাপদ রাখতে সহায়তা করে তেমনই বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড থেকে অপরাধীদের দুরে রাখে। সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকলে "সিসি ক্যামেরা ধারা নিয়ন্ত্রিত" লেখা থাকে এতে অপরাধীরা কিছুটা ভয় পায়। ফলে তারা অপরাধ থেকে দুরে থাকে, জনসাধারণরাও নিরাপদ থাকেন। কিন্তু সিলেট নগরীর পুরোটা এখনো সিসি ক্যামেরা ধারা নিয়িন্ত্রিত না হওয়ায় অজ্ঞাত হামলা, খুন, চুরি, ছিনতাইসহ নানা ধরণের অপরাধ করেও অপরাধীরা থেকে যাচ্ছে অধরা।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. রুহুল আলম বলেন, পুরো নগর সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে এখনো অনেক সিসি ক্যামেরার প্রয়োজন। তিনি বলেন, নগরীর প্রধান সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মিলে এখনো অন্তত ২৫০টি ও প্রতিটি ওয়ার্ডে অন্তত  ৩০ টি করে সিসি ক্যামেরা বসানো প্রয়োজন।

রুহুল আলম বলেন, প্রতিটি বাণিজ্যিক ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান যদি নিজ উদ্যোগে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে নেয় তাহলে প্রায় অর্ধেক নগরী সিসি ক্যামেরার আওতায় চলে আসবে।

ধাপে ধাপে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রধান সড়কের কিছু জায়গায় সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে জানিয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. রুহুল আলম বলেন, চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজার পর্যন্ত মোট ১২টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, যার মনিটর সিটি সেন্টারের নিচে।

তালতলা মোড় থেকে সারদা হল, সার্কিট হাউস, সুবিহানিঘাট মোড়, নাইয়রপুল এসব স্থানে মোট ২২টি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, যার মনিটর রাখা হয়েছে কোতোয়ালী থানায়।

সিলেট জজ কোর্ট আঙ্গিনায় মোট ৩২ টি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে যার ২টি মনিটর রয়েছে। একটি মনিটর জেলা জজের খাস কামরায় অন্যটি বার লাইব্রেরী মিলনায়তনে রাখা হয়েছে।

ক্বীনব্রিজ থেকে রেলস্টেশনে সামন হয়ে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, মুক্তিযোদ্ধা চত্তর, হুমায়ুন রশিদ চত্তর, শাহজালাল ব্রিজের দক্ষিণ প্রর্যন্ত মোট ১৭টি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে যার মনিটর কদমতলী পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে।

৬নং ওয়ার্ডের পুরো এলাকায় মোট ৩২টি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। যার মনিটর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসে রাখা হয়েছে। এছাড়াও ১৯ ও ১৫ নং ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন এই নির্বাহী প্রকৌশলী।

পুরো সিলেট নগরী সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা সময় সাপেক্ষে ও অনেক ব্যয় প্রয়োজন জানিয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনেরে নিবাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) রুহুল আলম বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে উন্নত মানের ক্যামেরা বসানোর জন্য কম পক্ষে ২০ লক্ষ টাকা করে প্রয়োজন। যা আপাতত বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে পুরো নগরী সিসি ক্যামেরার আওতায় আসবে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শুধু সিসি ক্যামেরা লাগালেই চলবে না সেই সাথে এর যথাযথ পর্যবেক্ষন করতে হবে। নগরীর যেসব স্থানেসিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে সেগুলো সঠিক পর্যবেক্ষন হচ্ছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সিসি ক্যামেরাভুক্ত এলাকায় কোন অপরাধ সংগঠিত হলেও অপরাধীরা ধরা পড়ে না। সিসি ক্যামেরার পর্যবেক্ষন সিটি কর্পোরেশনের নিয়িন্ত্রনাধিক থাকা উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি সিসি ক্যামেরার পর্যবেক্ষন প্রশাসনের কাছে না দিয়ে এর নিয়ন্ত্রণ সিটি কর্পোরেশন নিজে করা উচিত। প্রশাসন প্রয়োজনে সিটি কর্পোরেশন থেকে এর চিত্র সংগ্রহ করে নিতে পারবে।

পুরো নগরী সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে নাগরবাসির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৪ ঘন্টা সিসি ক্যামেরার যথাযথ পর্যবেক্ষন ব্যবস্থা করে পুরো নগরী দ্রুত সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে আনা উচিত বলে আমি মনে করি।

পর্যায়ক্রমে পুরো নগরী সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য চেষ্টা চলছে জানিয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী এনামুল হাবিব বলেন, ইতিমধ্যে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পুরো নগরী সিসি ক্যামেরার আওতায় আসবে। পুরো নগরী সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে বাংলাদেশ তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদপ্তর সহযোগিতা করবে বলে জানান তিনি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.