Sylhet Today 24 PRINT

ভরাট নয়, দখলমুক্ত করা হবে ধোপাদিঘী- দাবি সিসিকের

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ২৩ এপ্রিল, ২০১৮

ভরাট নয় বরং দখলমুক্ত করা হবে ধোপাদিঘী- এমনটি দাবি করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। সোমবার সিসিকের জনসংযোগ দপ্তর থেকে প্রেরিত এক ব্যাখ্যায় এমন দাবি করা হয়।

শনিবার সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরে ‌‘ধোপাদিঘী ভরাট করছে সিটি করপোরেশন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর সোমবার সিসিকের পক্ষ থেকে এমন ব্যাখ্যা আসলো।

এতে সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা জানায় ধোপাদিঘীর আকার ছোট হবে না, দিঘী দিঘীর মতোই থাকবে, বরং নোংরা পুতি দুর্গন্ধময় পরিত্যক্ত এই দিঘীকে নান্দনিক সৌন্দর্যে রূপ দেওয়ার জন্যই বর্তমানে সৌন্দর্যবর্ধন কাজ করা হচ্ছে। দিঘীর আশেপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ফলে বরং দিঘীর আকার আরও বাড়বে।

সিসিক জানায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে সিলেট মহানগরীর ধোপাদিঘীরপাড়ে অবস্থিত ধোপাদিঘীতে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন। ভারতীয় সরকারের অনুদানে বাস্তবায়িত এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ২১ কোটি ৮৫ লক্ষ ৬০ হাজার ৫শ টাকা।

এই প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে দিঘীর খননকাজ শুর হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দিঘীর চারদিকে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে, বসার জন্য থাকবে বেঞ্চ, শিশুদের জন্য রাইডের জায়গা থাকবে, পুকুরে নামার জন্য থাকবে দুটি দৃষ্টিনন্দন ঘাট, পুকুরের নোংরা পানিকে পরিস্কার করা হবে এবং সেই সাথে পুকুরের মধ্যে ঘোরার জন্য থাকবে প্যাডেল বোট, বৃক্ষপ্রেমীদের পরামর্শে সুদৃশ্যভাবে লাগানো হবে সবুজ বৃক্ষ, পুকুরের মধ্যখানে থাকবে নৌকার আদলে ভাসমান রেস্তোরা। এখানে থাকবে একাধিক টয়লেট।

এসব টয়লেট ও বর্জ্যের ব্যবস্থাপনার জন্য থাকবে আলাদা পাইপলাইন, যা পুকুরের পানির সাথে সংযোগ থাকবে না। সবার জন্য উন্মুক্ত এই জায়গাটির প্রবেশপথ থাকবে সিটি করপোরেশনের মসজিদের উত্তরপাশ দিয়ে এবং মহানগরবাসী সকাল-বিকেল ও সন্ধ্যায় যাতে এখানে এসে হাঁটতে পারেন সেজন্য রাতের বেলা আলোকিতকরণ সহ সংশ্লিষ্ট সকল সুবিধা রাখা হবে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা জানায়, বর্তমানে ধোপাদিঘীটির আকার অনেক বড় থাকলেও দীর্ঘদিন থেকে আশেপাশের দোকানপাট গড়ে তোলার মাধ্যমে অনেকে এই দিঘীর জায়গাও অবৈধভাবে দখল করে আছেন। এই প্রকল্পের আওতায় এসব অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করে দিঘীর পুরাতন অবয়বে ফিরে আনা হচ্ছে।
 
সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর জানান, ভারতীয় সরকার যে তিনটি প্রকল্পে বরাদ্দ দিয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধোপাদিঘীরপাড় প্রকল্প। পরিবেশের উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়েই সকল মন্ত্রণালয়ের যাচাই বাছাই করে এই প্রকল্প অনুমোদন করেছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এই এলাকার চেহারার আমূল পরিবর্তন হবে। নির্মল পরিবেশে কিছুটা সময় ব্যয় করার জন্য এই স্থানটি মহানগরবাসীর জন্য একটি আদর্শ জায়গা হয়ে উঠবে।
 
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে আমার একটি স্বপ্ন ছিল সিলেট মহানগরবাসীর হাঁটাচলার জন্য একটি নির্মল পরিবেশময় স্থান গড়ে তোলা, যেখানে নগরবাসী কিছুটা সময় নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে উপভোগ করবেন। ধোপাদিঘীকে কেন্দ্র করে এই রকম একটি আবহ তৈরি করা হচ্ছে।’

মেয়র আরিফ বলেন, আমি বিনয়ের সাথে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি, যে কেউ বর্তমান দিঘীটির করুন চিত্র গিয়ে দেখে আসতে পারেন। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে দিঘীটির পানি নোংরা হয়ে গেছে, চারিদিকে ময়লা আবর্জনার জঞ্জাল যা মশা তৈরিসহ পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিঘীর সাথে আশেপাশের বিভিন্ন দোকানপাটের টয়লেটের সরাসরি সংযোগ দেওয়ার কারণে দূষণ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে বাস্তবায়িত প্রকল্পের মাধ্যমে এসব অপসারণ করা হবে, অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পরিত্যক্ত এই দিঘীটির পুনরুজ্জীবন হবে বলেই মনে করেন মেয়র আরিফ।

দিঘীর আকার কমবে না, বরং বাড়বে এই প্রসঙ্গে মেয়র সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ‘বর্তমানে দিঘীটির মধ্যে পানির চারিধার আছে ৩.৪১ একর। দীঘির দখলকৃত জায়গা উদ্ধারের পর প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দিঘীর পানির চারিধার বৃদ্ধি পেয়ে কমপক্ষে ৩.৭৫ একরে উন্নীত হবে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.