Sylhet Today 24 PRINT

মৌলভীবাজার ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক পদে ৭৯ প্রার্থী

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা |  ২৪ জুন, ২০১৫

জেলা ছাত্রলীগের নতুন কার্যকরি কমিটিতে সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী ৭৯ জন প্রার্থী কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে ৩ সদস্য বিশিষ্ঠ একটি টিম সাংগঠনিক সফরে মৌলভীবাজারে আসেন। এই সফররত টিমের কাছে  জীবন বৃত্তান্ত জমা দেন আগ্রহী প্রার্থীরা।  

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমূল আলম এর নির্দেশে আজ ( মঙ্গলবার) মৌলভীবাজারে সাংগঠনিক সফরে পাঠানো হয় একটি টিম। কেন্দ্রীয় কমিটির উপ প্রচার সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাসেলের নেতৃত্বে এই টিমে ছিলেন সহ সম্পাদক নজরুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক মো: সুমন। ছাত্রলীগের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে কেন্দ্র ঘোষিত ২০ জুন জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় নতুন কমিটির জন্য আগ্রহী সভাপতি-সাধারন সম্পাদক প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করতে কেন্দ্রীয় টিমের সাংগঠনিক সফর।

দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে উপ প্রচার সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাসেলের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ঠ টিম মৌলভীবাজার সার্কিট হাউসে আসেন। সেখানে জেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ তাদেরকে অভ্যর্থনা জানান। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে মৌলভীবাজার ছাত্রলীগের সভাপতি - সাধারন সম্পাদক প্রার্থীরা একে একে নিজেদের সমর্থকদের নিয়ে দল বেধে সার্কিট হাউসে যান। সেখানে কেন্দ্রীয় কমিটির উপ প্রচার সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাসেলের কাছে জীবন বৃত্তান্ত জমা দেন আগ্রহী প্রার্থীরা। দুপুর ১টা ৩০ মিনিট থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সার্কিট হাউসে বায়োডাটা জমা নেয়া হয়। প্রায় দুই ঘন্টা সময়ে সভাপতি পদে ১৪ জন এবং সাধারন সম্পাদক পদে ৬৫ জন বায়োডাটা জমা দেন সফররত টিম প্রধানের কাছে। এরপর সাংগঠনিক সফরে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ঢাকার উদ্দ্যেশে মৌলভীবাজার ত্যাগ করেন।

এদিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি- সাধারন সম্পাদক পদে আগ্রহী আরিফ নেওয়াজ রফি, গৌউস উদ্দিন নিকসন, সৌদ আল সুফিয়ান সাগর, জাকির আহমদ অপু, হাসান আহমেদ তারেক,  রাজীব আহমদ, আসাদুজ্জামান রনি, সাইফুল ইসলাম, অমিত রায়, মোহাম্মদ আলী, কিংশুক দে সহ ৭৯ জন প্রার্থী জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে আলাপ করে জানা যায়,দীর্ঘদিন ধরে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে জটিলতার অবসানের লক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটি ২০১০ সালে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি মোহাম্মদ জাকারিয়াকে সভাপতি, হোসেন মো: ওয়াহিদ সৈকতকে সাধারণ সম্পাদক ও যোবায়ের আহমদ তপুকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ঠ মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেয়।  তখন বঞ্চিতরা এ কমিটি মেনে না নিয়ে শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এরপর থেকে একাধিকবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ মৌলভীবাজারে আসলেও বিভক্ত ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দকে এক টেবিলে বসিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠনে ব্যর্থ হয়। মৌলভীবাজারে ছাত্রলীগের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে ২০ জুন জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন ও কাউন্সিলের সময়সূচী ঘোষণা করে কেন্দ্র কমিটি। কিন্তু কেন্দ্র নির্ধারিত তারিখে সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় নতুন কমিটি গঠনের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত নিতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মৌলভীবাজারে সাংগঠনিক সফর করেছেন।

জেলা ছাত্রলীগের একটি সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগ দুই ধারায় বিভক্ত । আর এর প্রভাব গিয়ে পড়েছে সহযোগী সংগঠনের উপর। আওয়ামীলীগ বা সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গ্রুপিং-লবিং আরো জোড়দাড় হয়ে উঠে। আওয়ামীলীগের দুই ধারার মধ্যে একদিকে রয়েছেন বর্তমান সমাজকল্যানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসীন আলী এমপি । অপরদিকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান জেলা পরিষদ প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান । এই বলয়ে আছেন সাবেক চীফ হুইপ ও জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি,  সরকার দলীয় হুইপ শাহাবউদ্দিন আহমদ এমপি এবং জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক নেছার আহমদ। বর্তমান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়া সমাজকল্যান মন্ত্রী বলয়ের আর সাধারন সম্পাদক হোসেন মো: ওয়াহিদ সৈকত বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বলয়ের বলে জেলায় পরিচিত।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হোসেন মো: ওয়াহিদ সৈকত জানান, কেন্দ্র কমিটির উপ প্রচার সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাসেলের নেতৃত্বে একটি টিম মৌলভীবাজারে সাংগঠনিক সফরে আসেন।জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের জন্য সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহীরা সেই টিমের কাছে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।  ত্যাগী ও প্রকৃত ছাত্রদের সমন্বয়ে নতুন কমিটি আসবে এই প্রত্যাশা করছি।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজারে সফররত টিম প্রধান কেন্দ্রীয় কমিটির উপ প্রচার সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাসেল এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, জেলা ছাত্রলীগ গত ২০ জুন সম্মেলন করতে ব্যর্থ হওয়ায় নতুন কমিটি গঠনের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত জমা নেয়া হয়েছে। সভাপতি- সাধারন সম্পাদক পদে ৭৯ জন আগ্রহী প্রার্থী জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। এই গুলো যাচাই-বাছাই করার পর কেন্দ্রীয় সভাপতি- সাধারন সম্পাদক স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ করে নতুন কমিটি ঘোষনা করবেন । তবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রত্ব আছে, বয়স সীমা ২৯, অবিবাহিত ও চাকুরী বিহীন প্রার্থীরা অগ্রাধীকার পাবেন।


টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.