Sylhet Today 24 PRINT

বাঁধ ভেঙ্গে মৌলভীবাজার শহরে ঢুকছে পানি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি |  ১৭ জুন, ২০১৮

টানা বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলের কারণে মনু নদের বাঁধ ভেঙে রাস্তা প্লাবিত হওয়ায় মৌলভীবাজারের সঙ্গে সিলেট ও জেলার চার উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছে বানভাসি মানুষ। সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের লোকজন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।

শনিবার (১৬ জুন) দিবাগত রাত ৩টার দিকে শহরতলীর উপজেলা বারইকোনা এলাকায় (উপজেলা কার্যালয়ের পেছন এলাকা) নতুন করে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে পানি আশপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে মৌলভীবাজারের সঙ্গে সিলেটের সব ধরনের যান চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এর আগে শনিবার মৌলভীবাজার-রাজনগর-সিলেট রোডের রাজনগর উপজেলাধীন কদমহাটা এলাকায় বন্যার পানিতে রাস্তা তলিয়ে গেলে এই রোডে যান চলাচল বন্ধ করা হয়। এর ফলে সিলেটের সঙ্গে মৌলভীবাজারের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এছাড়া জেলার রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মনুর ভাঙন দিয়ে দ্রুত গতিতে পানি প্রবেশ করে মৌলভীবাজার-সিলেট রোডে কোমরজল দেখা দিয়েছে। প্রবল বেগে পানি প্রবাহ বাড়ছে শহরের দিকে। এর ফলে এই রোডে যান চলাচল বন্ধ করে উদ্ধার তৎপরতা চলছে। রাস্তার দুই পাশে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন আটকে রাখা হয়েছে।

এদিকে, মনুর বাঁধ ভাঙায় মৌলভীবাজার শহরের একাংশ প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ড ও তিনটি ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্রমাগত পানি গড়াচ্ছে আশপাশের এলাকাগুলোতে। শহর ও শহরতলীর বাসাবাড়িতে পাঁচ থেকে ছয় ফুট পানিতে ডুবে আছে। এর ফলে বন্যা পরিস্থিতি মহামারি আকার ধারণ করেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন পানিবন্দিরা।

এদিকে দুপুরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের ভেতরে যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য কুসুমভাগ এলাকায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে একটি বাঁধ দেয়ার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী তা দিতে দেয়নি। এলাকাবাসীর দাবি এখানে বাঁধ দিলে তারা আরও পানিতে তলিয়ে যাবে।

মৌলভীবাজার জেলা খাদ্য গুদামের ইনচার্জ মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, রাতে হঠাৎ বন্যা দেখা দেয়ায় সরকারি খাদ্য গুদামের ভেতর প্রায় দুই হাজার মেট্রিকটন চাল ছিল, তা উদ্ধার করা যায়নি। কিছু চাউল উদ্ধার করা হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়ায় এই চাল নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে প্রশাসন।

অন্যদিকে, জেলার কুলাউড়া, রাজনগর ও কমলগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ঘরবাড়ি, দোকানপাট, স্কুল কলেজ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় এখনও পানি রয়েছে। সেনাবাহিনী বন্যার্তদের সহযোগিতায় কাজ করছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসন তৎপর রয়েছে। শহরের বাইরে থেকে নৌকা এনে পানিবন্দিদের উদ্ধার কাজ চলছে। শহরে পাঁচটি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। সেখানে মানুষ আশ্রয় নিচ্ছেন। উপজেলাগুলোতে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।

এদিকে গতকাল মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক পাঁচটি আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করেছেন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো হলো মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজ, প্রাইমারি টিচার্স ইনস্টিটিউট, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.