Sylhet Today 24 PRINT

বড়লেখায় ফরিদা হত্যায় ‘প্রেমিকের’ স্বীকারোক্তি

বড়লেখা প্রতিনিধি |  ১২ জুলাই, ২০১৮

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ফরিদা বেগম হত্যার অভিযোগে তার ‘প্রেমিক’ গ্রেপ্তারকৃত মো. জুমেল আহমদ ওরফে জুবেল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) বড়লেখার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. হাসান জামানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। আদালতে আসামীর ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক ওয়াহেদ গাজী।

ফরিদা বেগম হত্যার অভিযোগে পুলিশ এ পর্যন্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গত ১৩ জুন উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকার জমি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীকালে ফরিদার মা পিয়ারা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় আসামীদের নামে বড়লেখা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-১৩।

এ ঘটনায় জুমেল ছাড়াও গ্রেপ্তার করা হয় উত্তর শাহাবাজপুর ইউনিয়নের ইটাউরি কান্দিগ্রামের মখলিছ উদ্দিনের ছেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি জাকির আহমদ (২৫)কে।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ জুন উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকার জমি থেকে ফরিদা বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়। ফরিদা ইসলামপুর গ্রামের খলকু মিয়ার মেয়ে। প্রায় ছয় বছর আগে ফরিদা বেগমের সাথে সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার পাথারিপাড়া গ্রামের গৌছ উদ্দিনের বিয়ে হয়। তিন বছর আগে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর থেকে ফরিদা বেগম বাবার বাড়িতে থাকতেন।

এদিকে নিজ বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ইটাউরি কান্দিগ্রামের সাইন উদ্দিনের ছেলে জুমেল আহমদের সাথে ফরিদা বেগমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর মধ্যে জুমেল অন্যত্র বিয়ে করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ফরিদা জুমেলকে মামলা মোকদ্দমায় জড়ানোর হুমকি দেন। এরপরই ফরিদাকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষে জুমেল। সে অনুযায়ী ঘটনার রাতে (১২ জুন) জুমেল কয়েকজন সহযোগী নিয়ে ফরিদার বাড়িতে গিয়ে তাকে মুঠোফোনে কল দিয়ে ঘর থেকে বের করে এনে সহযোগীদের নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে লাশ বাড়ির পাশের ক্ষেতে ফেলে রেখে চলে যান।

এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় জুমেল আহমদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায়। এরপর উত্তর শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন-চার্জ মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়াহেদ গাজী গত ২ জুলাই অভিযান চালিয়ে চান্দগ্রাম এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা গত ৯ জুলাই আদালতে জুমেলকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জুমেলের ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ৩ দিনের রিমান্ডে এনে জুমেল আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে সে হত্যার বিষয়ে প্রাথমিক স্বীকারোক্তি প্রদান করে সহযোগীদের নাম বলে।

তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি জাকির আহমদ (২৫) কে গ্রেপ্তার করে।

রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) বিকেলে বড়লেখার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. হাসান জামানের আদালতে জুমেলকে হাজির করলে তিনি হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে জুমেল ও তার সহযোগি জাকিরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

স্বীকারোক্তিমূলক এ জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়াহেদ গাজী বলেন, ‘তারা তিনজন মিলে হত্যা করে ফরিদাকে। প্রেমঘটিত বিষয়ে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকান্ড ঘটনানো হয়। জুমেল আদালতে সে সহ তিনজনের নাম বলেছে। এ পর্যন্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক অন্য আসামীকে গ্রেপ্তার চেষ্টা অব্যাহত আছে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.