Sylhet Today 24 PRINT

তাবলীগ জামাতে যুক্ত ছিলেন ডা. মাহমুদ, ফেসবুকেও ধর্ম নিয়ে উগ্র পোস্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১৭ জুলাই, ২০১৮

রোগীর কিশোরী স্বজনকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষানবীশ চিকিৎসক মাকামে মাহমুদ তাবলীগ জামাতের সাথে যুক্ত ছিলেন। এমবিবিএস কোর্সের শেষ পরীক্ষা দিয়ে ২ মাসের জন্য চিল্লাতেও গিয়েছিলেন তিনি। গত মাসেই চিল্লা থেকে ফিরে ওসমানী হাসপাতালে শিক্ষানবীশ চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন।

মাকামে মাহমুদের ফেসবুক আইডি ঘেঁটে দেখা গেছে, ফেসবুকেও ধর্ম নিয়ে উগ্র পোস্ট দেন তিনি। ধর্মনিরেপক্ষতা নিয়েও সমালোচনা করেন। তবে বিকেলে মাহমুদকে পুলিশ আটক করার পর তার ফেসবুক আইডিও ডিএক্টিভ হয়ে যায়।

সোমবার (১৫ জুলাই) সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের  ৭নাম্বার ওয়ার্ডে মাহমুদ রোগীর সাথে থাকা এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।

অভিযুক্ত মাকামে মাহমুদ ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা এলাকারা মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেলের ৫১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ৩য় বর্ষে থাকাকালীন সময়েই তিনি বিয়ে করেছেন। তাঁর একটি সন্তানও আছে। তাঁর স্ত্রী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। বিয়ের পর স্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়িয়ে মাদ্রাসায় ভর্তি করেন মাহমুদ।

এই ঘটনায় মাকামে মাহমুদকে ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশে হস্তান্তর করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় বলে জানান কতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন।

গেল বছরের সেপ্টেম্বরে অভিযুক্ত মাকামে মাহমুদ নিজের ফেসবুক একাউন্টে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসে লিখেন-
'যার যার উৎসব সে সে পালন করবে এটাই স্বাভাবিক। যে সকল মুসলিম ভাইয়ের না জেনে পূজায় অংশগ্রহণ করছেন তাদের বলছি- আমাদের ধর্মের নিয়ম হচ্ছে- 'মূর্তিপূজার উৎসবে সানন্দে অংশগ্রহণ করলে আপনি আর মুসলিম থাকবেন না'।"

তিনি আরো লিখেন- 'অন্য ধর্মের লোকরাও যাতে তার ধর্মের অনুষ্ঠানে না আসে সেই সাথে কোন মুসলমান যে অন্য ধর্মের উৎসবে না যায়।'

সেই স্ট্যাটাসেই মাকামে লিখেন- 'যারা নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ বলেন তারা যেন তাদেরকে মুসলিম দাবি না করেন।'

তবে মাকামে মাহমুদের সহপাঠীদের দাবি, তাবলীগ জামাতের অনুসারী মাহমুদ ধর্ষণের মত কাজ করতে পারে তা তাদের ধারণাতীত ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাকামের এক সহপাঠী বলেন, ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে মাহমুদ ২ মাসের জন্য তাবলীগ জামাতের চিল্লায় যায়। আমরা যেখানে ২ মাস পূর্বেই ইন্টার্র্নি শুরু করেছি সেখানে সে আজ (সোমবার) থেকে ১৮ দিন আগে এসে যোগ দিয়েছে।

তিনি বলেন, সাধারণত তাকে এমন ছেলে বলে মনে হয়নি। তবে সে যদি অবশ্যই এই কাজ করে থাকে তাহলে তার উপযুক্ত শাস্তি হোক।

এই ঘটনার পর প্রশাসনের হাতে আমরাই উকে তুলে দিয়েছি বলেও জানিয়েছেন অভিযুক্তের এই সহপাঠী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাকাম মাহমুদের আরেক এক সহপাঠি সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন, ক্লিনিক্যাল রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছুই বলে যাচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন, তদন্ত রিপোর্ট এবং ক্লিনিক্যাল রিপোর্ট আসলেই বিষয়টা পরিষ্কার হওয়া যাবে। তখন আইন যেটা বলবে সেটাই হবে। আমরা কেউই আইনের উর্ধে নই।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার এ কে এম মাহবুবুল হক এ ব্যাপারে বলেন,  ‘ভিকটিমকে ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে। মাকামে মাহমুদকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিকালে তদন্ত কমিটি হবে। এছাড়া সব ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ফুটেজ সংগ্রহ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.