Sylhet Today 24 PRINT

চার রাজাকারের প্রাণদণ্ড: মৌলভীবাজারে মিষ্টি বিতরণ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি |  ১৭ জুলাই, ২০১৮

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার পাঁচগাও গ্রামের চার জনের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে মৌলভীবাজারবাসী। জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাসেলের নেতৃত্বে আনন্দ মিছিল এবং মিষ্টি বিতরণ করেছে ছাত্রলীগ। জেলাবাসী জানিয়েছেন এই রায়ের মধ্যে কলঙ্কমুক্ত হল মৌলভীবাজার।

গতকাল (সোমবার) রায় ঘোষণার সময় নির্ধারণের পর থেকেই জেলাবাসী অপেক্ষায় ছিল কুখ্যাত চার যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায়ের।

অবশেষে আজ মঙ্গলবার সকালে এই চার রাজাকারের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে দণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- আকমল আলী তালুকদার, আব্দুন নূর তালুকদার ওরফে লাল মিয়া, আনিছ মিয়া ও আব্দুল মোছাব্বির মিয়া। এদের মধ্যে আকমল আলী তালুকদার কারাগারে আছেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন।

দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষক আকমল ও লাল মিয়া সে সময় মুসলিম লীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। সেই সাথে আকমল ছিলেন পাঁচগাও ইউনিয়ন শান্তি কমিটির সদস্য।

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে লাল মিয়া, আনিছ ও মোছাব্বির পালিয়ে যান। তার আগে তারা জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন বলে জানা গেছে। এলাকাবাসীর দাবী, যতদ্রুত সম্ভব পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তার করে রায় কার্যকর করার।

রাজনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আসকির খান জানান, এই রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। জনমনে স্বস্তি এসেছে। আসামীদের গ্রেপ্তার করে রায় কার্যকর করা হউক।

মৌলভীবাজার জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জামাল উদ্দিন আনন্দ প্রকাশ করে জানান, এই রায়ে মৌলভীবাজার কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। এত বছর পরেও আমরা বিচার পেয়েছি তাই আনন্দিত। দ্রুত রায় কার্যকরের দাবী জানাই।

মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান জানান, সরকারকে ধন্যবাদ জানাই এদের বিচারের জন্য। আজ মৌলভীবাজার কলঙ্কমুক্ত হল। অচিরের রায় কার্যকর হবে বলে আমরা আশাবাদী।

মামলার সাক্ষী এবং ৭১-এ আসামীদের গুলিতে আহত পাঁচগাও গ্রামের বারীন্দ্র মালাকার ও সুবোধ মালাকার দুইজনই বর্তমানে বার্ধক্যজনিত রোগে অসুস্থ।

ঠিক মত কথাও বলতে না পারলেও তারা জানান, জীবন শেষ পর্যায়ে এসে একটি খুশির খবর পেয়েছেন। এত বছর পরেও তারা ন্যায় বিচার পেয়ে সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। অনতিবিলম্বে পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তার করে রায় কার্যকরের দাবী জানান তারা। জীবনের শেষ ইচ্ছা আসামীদের রায় কার্যকর দেখা বলেও জানিয়েছেন তারা।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ওইদিনই রাজনগরের পাঁচগাও গ্রাম থেকে আকমল আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত এই উপাধ্যক্ষকে পরে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ চার আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর গত বছরের ৭ মে অভিযোগ গঠন হয়। সূচনা বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ৪ জুলাই।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.