Sylhet Today 24 PRINT

বড়লেখায় শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতের প্রতিবাদে সহপাঠীদের সড়ক অবরোধ

বড়লেখা প্রতিনিধি |  ১৭ জুলাই, ২০১৮

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বোনকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় কলেজ শিক্ষার্থী তোফাজ্জুল হোসেন রাব্বিকে (১৭) ছুরিকাঘাতে আহত করার অভিযোগ করা হয়েছে। রাব্বি বড়লেখা ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র এবং উপজেলার দাসেরবাজার ইউনিয়নের সুড়িকান্দি বাদেজঙ্গল গ্রামের মৃত ফারুক উদ্দিনের ছেলে।

মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) দুপুর দুইটার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাকে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে এই হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা প্রায় এক ঘণ্টা কুলাউড়া-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের বড়লেখা উত্তর চৌমোহনা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রাব্বি।

অভিযোগ করা হয়েছে, তোফাজ্জুল হোসেন রাব্বি দুপুর দুইটার দিকে পৌর শহরের উত্তরবাজার এলাকায় আসলে তার উপর হামলার ঘটনাটি ঘটে। এ সময় রেহান আহমদ (১৫) ও তার দলের ৭-৮জন রাব্বীর ওপর হামলা করে। হামলাকারীরা তার মাথায় ছুরিকাঘাত ও মারধর করে পালিয়ে যায়। পরে উপস্থিত লোকজন তাকে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

রেহান পাখিয়ালা গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে।

রাব্বি এই ঘটনায় বড়লেখা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তোফাজ্জুল হোসেন রাব্বির বোন বড়লেখা ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী। তাকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদের জের ধরে এই হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

তোফাজ্জুল হোসেন রাব্বি জানিয়েছেন, তার বোনকে ক্লাসে কিছু ছেলে উত্ত্যক্ত করে। তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। উত্ত্যক্তকারীরা রেহান আহমদের বন্ধু। রেহান উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দরের ভাতিজা। অভিযোগ দেওয়ায় রেহানসহ অন্যরা তার উপর ক্ষিপ্ত হয়েছে। ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণে রেহান ও তার দলের ছেলেরা এই হামলা করেছে।

রাব্বির সহপাঠী কলেজছাত্র মিশকাত আহমদ, মাসুদ আহমদ, আদনান, মিজান, মাহিন আহমদ, নওশাদ ও নোমান আহমদ অভিযোগ করে বলেন, রাব্বি খুবই ভালো ছেলে। রাব্বির বোনসহ কলেজের মেয়েদের বখাটেরা উত্যক্ত করে। রাব্বি এর প্রতিবাদ করায় রেহান তার দলবল নিয়ে তাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, রেহান কলেজ ছাত্র নয়। সে প্রতিদিন ৮-১০জন বহিরাগত যুবককে সাথে নিয়ে কলেজে আসে। কলেজে এসে শিক্ষার্থীদের উত্যক্ত করে। প্রতিবাদ করলে সে ছুরি দেখিয়ে ভয় দেখায়। অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে প্রতিবাদ করে না।

রেহান উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাতিজা হওয়ায় সে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। যাকে তাকে ভয় দেখাচ্ছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সহিদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘কলেজের শিক্ষার্থীকে কয়েকজন যুবক মেরেছে। প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে। জড়িতদের গ্রেপ্তারের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। কারা জড়িত যাচাইবাছাই করা হচ্ছে। রাব্বী একটা অভিযোগ দিয়েছিল। হয়তো অথেনটিক না। আবার নিয়ে গেছে। দেখি কি করা যায়।’

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দর মুঠোফোনে বলেন, ‘ঘটনাটি কলেজ কর্তৃপক্ষ কিংবা পুলিশ কেউ আমাকে জানায়নি। রেহান আদৌ এ ঘটনার সাথে জড়িত কিনা তাও আমি জানি না। আমি সিলেটে আছি।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.