Sylhet Today 24 PRINT

হঠাৎ বাড়তি চাপে বিপাকে বিআরটিএ, ভোগান্তিতে গ্রাহক

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ০৯ আগস্ট, ২০১৮

হঠাৎ করেই ভিড় বেড়ে গেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)-এর সিলেট কার্যালয়ে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর থেকে লাইসেসন্স তৈরি ও গাড়ির কাগজপত্র নবায়নে অনেকে ভিড় করছেন বিআরটিএ কার্যালয়ে। চলমান ট্রাফিক সপ্তাহে পুলিশের নজরদারির কারণে এ ভিড় আরও বেড়েছে।

সেবাগ্রহীতাদের এই বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন অফিসটির কর্মকর্তারা। অপরদিকে, ভোগান্তির শিকার হওয়ার অভিযোগ সেবাগ্রহীতাদের। যান্ত্রিক ত্রুটির দোহাই দিয়ে দিনের দিন ঘুরানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।

সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বিআরটিএ’র অফিসে গত কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপচে পড়া ভিড় লেগে রয়েছে। আগতদের বেশিরভাগই এসেছেন যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষা, শিক্ষানবিশ লাইসেন্স ও লাইসেন্স তৈরি, লাইসেন্স নবায়ন ও হারানো লাইসেন্সের ডুপ্লিকেট কপি উত্তোলন, যানবাহনের ট্যাক্স পরিশোধ এবং যানবাহনের লাইসেন্স তৈরি ও নবায়ন করতে।

হঠাৎ করো সেবাপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে ভোগান্তিও। অনেকেই দীর্ঘক্ষন লাইনে দাঁড়িয়ে কাঙ্খিত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।

বিআরটিএ সহকারী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার কে. এম. মাহাবুব করিম বলন,  হঠাৎ করেই ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেস সনদ ও গাড়ির লাইসেন্স আবেদনের হিড়িক পড়েছে কার্যালয়ে। দীর্ঘ লাইনের কারণে সময়ক্ষেপন হচ্ছে। সেবাগ্রহিতার সংখ্যা বেশি হলেও কর্মকর্তাদের সংখ্যা বাড়েনি। ফলে সেবা প্রদানে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। একারণে কিছুটা বিলম্বও হচ্ছে।

বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা আরো জানান, নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন শুরুর পরই চালক লাইসেন্স এবং গাড়ির নতুন রেজিস্ট্রেশন তৈরি ও পুরাতন রেজিস্ট্রেশন নবায়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা বেড়েছে। এছাড়া ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর এ সংখ্যা আগের চেয়ে ১০ গুণ বেড়ে গেছে।

বুধবার বেলা ১টায় দিকে বিআরটিএ কার্যালয়ে দেখা গেছে, ভবনের নিচে কমপক্ষে ১০০ জন সেবাপ্রত্যাশী অপেক্ষা করছেন। তাদের বেশীরভাগই এসেছেন গাড়ির ফিটনেস চেক করাতে। এছাড়া ভবনের তৃতীয় তলার লাইসেন্স শাখায় প্রায় অর্ধশত সেবাপ্রত্যাশী অপেক্ষা করছেন। তাদের বেশির ভাগই এসেছেন মোটরসাইকেলের লাইসেন্স করানোর জন্য। অন্যরা এসেছেন মোটরসাইকেল ও গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করার জন্য।

বিআরটিএ সিলেট কার্যালয়ের মটরযান পরিদর্শক সাদিকুর রহমান বলেন, সকালে ভিড় সবচেয়ে বেশি থাকে। মূলত গত বৃহস্পতিবার থেকে বিআরটিএ অফিসে ভিড় বাড়তে শুরু করে। এরপর ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর রোববার থেকে এর চাপ আগের চেয়ে ১০ গুণ বেড়ে যায়।

বিআরটিএ অফিসে আসা সেবাপ্রত্যাশী আলী হোসেন  বলেন, দীর্ঘদিন মোটরসাইকেল চালালেও কখনও চালক লাইসেন্স না থাকার বিষয়টি গুরুত্ব দেইনি। গত রোববার বন্দবাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে নগরীর চৌহাট্টায় বিক্ষোভকারী একদল শিক্ষার্থী লাইসেন্স দেখতে চায়। তাদের লাইসেন্স দেখাতে পারিনি। তাই আজ বিআরটিএ অফিসে এসেছি লাইসেন্স করানোর জন্য।

আরেক সেবাপ্রত্যাশী কামাল হোসেন এসেছেন গাড়ির কাগজপত্র চেক করাতে। তিনি বলেন, দীর্ঘক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু ভিড়ের কারণে এখন পর্যন্ত কারও সঙ্গে কথা বলতে পারিনি।

অটোরিকশা মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, লাইসেন্স এবং গাড়ির নতুন রেজিস্ট্রেশন ও পুরাতন রেজিস্ট্রেশন নবায়নের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু এই অফিসের সামর্থ বাড়েনি। ফলে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব বলেন, ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত নগরীতে ১৩৩ টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজকে অভিযান চলচ্ছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.