Sylhet Today 24 PRINT

দুই কেন্দ্রে ‘নিয়মরক্ষার’ নির্বাচন শনিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১০ আগস্ট, ২০১৮

প্রধান দুই মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান বিশাল। ৪ হাজার ৬৮৬ ভোটের মধ্যে জয়ের জন্য আরিফুল হকের প্রয়োজন মাত্র ৮৬ ভোট। আর বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে জিততে হলে প্রায় সবগুলো ভোটই পেতে হবে। অথচ আরিফুল হক ইতোমধ্যে নাম ঠিকানা উল্লেখ করে জানিয়েছেন, এই দুই কেন্দ্রের ভোটারদের মধ্যে অন্তত তিনশ’ ভোটার হয় প্রবাসে আছেন নতুবা মারা গেছেন। ফলে আরিফুল হক চৌধুরীর বিজয় অনেকটা নিশ্চিতই।

তবু সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থগিত দুই কেন্দ্রে শনিবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জয় পরাজয় অনেকটাই নির্ধারিত হয়ে যাওয়ায় এ নির্বাচনকে নিময়রক্ষার নির্বাচন বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।

গত ৩০ জুলাই সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)-এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্র দখল ও ব্যালটবাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনায় গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হবিনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। শনিবার এই দুই কেন্দ্রে পুণরায় ভোটগ্রহণ হবে।

নির্বাচন অনেকটা নিয়মরক্ষার হয়ে পড়লেও তা নির্বিঘ্ন করতে প্রস্তুতির কমতি নেই নির্বাচন কমিশনের। নতুন করে ভোটগ্রহণের সব প্রস্ততি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।

এ দুই কেন্দ্র ছাড়াও ভোটের ফলাফল সমান হয়ে যাওয়ায় সংরক্ষিত ৭ নম্বর (১৯, ২০ ও ২১) ওয়ার্ডের ১৪টি কেন্দ্রে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদেও পুনঃভোট হবে শনিবার।

সিলেট সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান বলেন, ভোট সুষ্ঠু করতে নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ভোটারদের নিরাপত্তায় পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার সদস্যরা মাঠে থাকবেন; পাশাপাশি দুই প্লাটুন (প্রতি প্লাটুনে ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য) বিজিবি মোতায়েন করা হবে। এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতেৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে ভোটের মাঠে।

গত ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে ১৩৪ কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২ কেন্দ্রের ভোট গণনায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট ৯০ হাজার ৪৯৬। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান পান ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট। ফলে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর চেয়ে ৪ হাজার ৬২৬ ভোটে এগিয়ে আছেন।

স্থগিত হওয়া গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার ২ হাজার ২২১ জন; আর হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার ২ হাজার ৫৬৬ জন। সব মিলিয়ে এই দুই কেন্দ্রে ভোটের চার হাজার ৭৮৭ জন।
দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান স্থগিত দুই কেন্দ্রের ভোটের চেয়ে কম হওয়ায় ওই দুই কেন্দ্রে পুনঃভোটের আয়োজন করা হয়।

এদিকে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বৃহস্পতিবার ঢাকায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে দুই কেন্দ্রের পুনঃভোটে কোনোভাবেই যেন মৃত ও প্রবাসীদের ভোট না পড়ে সে বিষয়ে নজর দেওয়ার অনুরোধ জানান।

সিলেটে যে সকল ভোটার মৃত্যুবরণ করেছেন এবং প্রবাসে আছেন তাদের নামের একটি তালিকাও তিনি কমিশনে জমা দেন।

আরিফুল হকের দেওয়া তথ্য মতে, সিসিকের স্থগিত হওয়া গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২২২১ ভোটারের মধ্যে মারা গেছেন ৮০ জন ও বিদেশে আছেন ৮০ জন।  অন্যদিকে স্থগিত হওয়া হবিনন্দী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের  ২৫৬৬ ভোটারের মধ্যে মারা গেছেন ৮০ জন ও প্রবাসে আছেন ৮০ জন এবং ওয়ার্ড ছেড়ে চলে গেছেন আরো ২৫/৩০জন।

এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান বলেন, নির্বাচনের আগে কাউকে বিজয়ী ঘোষণা করার কথা আইনে নেই। ভোটার তালিকা নিয়ে কথা বলাও আমার এখতিয়ার বর্হিভূত।

ভোটের ব্যবধান আর স্থগিত দুই কেন্দ্রের ভোটার বিবেচনায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের জয়ের আশা একেবারেই ক্ষীণ। তারপরও গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে ভোটে অংশ নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।

কামরান বলেন, আওয়ামীলীগ গণতান্ত্রিক ধারাকে বিশ্বাস করে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে আমি ভোটে অংশ নেব। আশা করছি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.