কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন শাহজীবাজার রাবার বাগানের শ্রমিকরা

বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফআইডিসি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান শাহজীবাজার রাবার বাগানে ৩ শতাধিক রাবার শ্রমিকের দুঃসময় চলছে। যে শ্রমিক রাবার গাছ থেকে কষ সংগ্রহ করে এক সময় রাবার শিল্পকে সমৃদ্ধি করেছিল আজ এই শ্রমিক অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। যে বেতন পাচ্ছেন তা দিয়ে পরিবার-পরিজন চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

শাহজীবাজার রাবার শ্রমিক লুৎফুর রহমান বলেন, গাইবান্ধা থেকে ১৯৯০ সালে ৬০০ টাকা বেতনে যুবক বয়সে রাবার বাগানে শ্রমিকের চাকুরী নিয়েছিলাম। আশা ছিল একদিন ভাল বেতন পেয়ে সংসার চালাবো কিন্তু ২৮ বছর হয়ে গেল এখনো আশানুরূপ কোন বাড়েনি। যে স্বল্প বেতন পাই তা দিয়ে থাকা খাওয়ার খরচ বাদে বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান, মা-বাবার জন্য যে টাকা পাঠাই তা অতি নগণ্য।

একই অবস্থা প্রায় সাড়ে ৩শ শ্রমিকের। এ কারণে রাবার শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষও শ্রমিকদের মজুরীর বিষয়ে কোন কথা বলছে না। কোন শ্রমিক এ নিয়ে কথা বলতে গেলে বদলি ও বরখাস্ত করার হুমকি দেওয়া হয়।

শ্রমিকদের অভিযোগ, সারা দেশে রাবার বাগানের কাঁচা রাবার বিক্রি করে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকে সঞ্চয় করে রাখা হয়েছিল। এ টাকার লভ্যাংশ হিসেবে ২০১১-২০১২ অর্থ বছরে প্রত্যেক শ্রমিক ৩৬ হাজার টাকা করে লভ্যাংশ পান। কিন্তু এরপর থেকে আর কোন লভ্যাংশ দেওয়া হচ্ছে না। যেন কোন জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নেই।

শাহজীবাজার রাবার বাগান শ্রমিক কর্মচারীর সভাপতি আলামিন জানান, বর্তমান সরকার সম্প্রতি মজুরী কমিশন করে ইস্পাত, চিনি, বস্ত্র, রাসায়নিক এবং রাবার শ্রমিকদের বেসিক বেতন ৮ হাজার ৭শ টাকা করার ঘোষণা দিলেও বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফআইডিসি) এর বাস্তবায়ন করছে না। এতে করে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই স্বল্প বেতনে চাকুরী করে শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে দুঃসময় কাটাচ্ছেন। মজুরী কমিশন বাস্তবায়িত হলে শাহজীবাজার রাবার বাগানে শ্রমিকদের কষ্টের দিন কেটে যেত। ঘোষিত মজুরী কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য শ্রমিকরা মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচি পালন করেছে।

শাহজীবাজার রাবার বাগানের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মর্তুজ আলী জানান, রাবার গাছের বয়সের পাশাপাশি শ্রমিকদেরও বয়স বেড়েছে। এখন রাবার শিল্পের দুঃসময় চলছে। প্রতি বৎসর রাবার বাগানে অর্ধেক টাকা লোকসান দিতে হয়। তবে শ্রমিকদের মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন করা হলে তাদের দুঃখ কষ্ট দূর হবে।