দেবব্রত চৌধুরী লিটন, গোলাপগঞ্জ থেকে ফিরে | ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
গোলাপগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী দিয়েছে কেবল আওয়ামী লীগ। আর কোনো দলের প্রার্থী নেই। বিএনপির দুই নেতা দলীয় প্রার্থী না হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের আরেক নেতাও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন এখানে।
দলের নেতা দলীয় প্রতীকে প্রার্থী না হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রসঙ্গে টেনে পৌরসভার সরস্বতী এলাকার ভোটার কামাল হোসেন বলেন, এখানে নির্বাচনে দলের চাইতেও গোষ্ঠী বড় ফ্যাক্টর। ব্যক্তির গ্রহণযোগ্যতা আর গোষ্ঠীর প্রভাব দেখে ভোট দেন এখানকার ভোটাররা।
গোলাপগঞ্জের অতীতের পৌর নির্বাচনগুলো গোষ্ঠীগত ভোটই বড় ফ্যাক্টর হয়ে ওঠেছিলো বলে জানান তিনি।
কেবল কামাল হোসেন নয়, রোববার গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকা ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজনের সাথে কথা বলে এই একই ধরণের কথাই শোনা গেছে।
মূলত দুটি গোষ্ঠীই পৌর এলাকায় প্রভাশালী। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই দুটি গোষ্ঠীতেই বিভাজন দেখা দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন ভোটাররা।
আগামী ৩ অক্টোবর গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই দিন রাত এক করে প্রচার-প্রচারণায় ও পথসভায় অংশ নিচ্ছেন প্রার্থীরা।
রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গোলাপগঞ্জে ঘুরে দেখা যায়, পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের রণকেলি এলাকার দক্ষিণ ভাগ ও লামা দক্ষিণ ভাগে গণসংযোগ করছেন মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে জানান, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে আমি আশাবাদী।
ভোটাররা আমার বিগতদিনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্যে নৌকা প্রতীকে ভোট দেবে বলে আমার বিশ্বাস, বলেন পাপলু।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মহিউস সুন্নাহ চৌধুরী নার্জিস নারিকেল গাছ প্রতিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের টিকরবাড়ি এলাকায় তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, নির্বাচনী গণসংযোগে যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই সমর্থন পাচ্ছি। আমি এই এলাকার মানুষের জন্য অতীতে কাজ করেছি। নীতি নৈতিকতা বিরোধী কোন কাজ করিনি; তাই পৌরবাসী আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেবেন না বলে আমি আশাবাদী।
নির্বাচনে এই দুই প্রার্থী ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আমিনুল ইসলাম রাবেল, তার প্রতীক জগ। এছাড়াও মোবাইল প্রতীকে নির্বাচন করছেন পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহিন। এই দুই প্রার্থীও জয়ের ব্যাপারে তাদের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
গোলাপগঞ্জ নূর ম্যানশনের ব্যবসায়ী আনিস আহমদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচন খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। এই চার প্রার্থীর যে কেউই জিততে পারে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মে গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সিরাজুল জব্বার চৌধুরী মৃত্যুবরণ করায় মেয়র পদটি শূন্য হয়। এরপর শূন্য পদে উপনির্বাচনের জন্য তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফশিল অনুযায়ী আগামী ৩ অক্টোবর মেয়র পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ৬শ ৩২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৯শ ৫৮জন এবং ১০ হাজার ৬শ ৭৪জন।