নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
ভারত থেকে আরও ৩৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ। সূর্যমনি-কুমিল্লা নর্থ লিংকের মাধ্যমে জি টু জি-এর আওতায় এই বিদ্যুৎ আমদানি হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
মঙ্গলবার সিলেটের একটি হোটেলে বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা সংক্রান্ত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির পঞ্চাদশ সভা শেষে তিনি এ কথা জানান।
সূর্যমনি-কুমিল্লা নর্থ লিংকের মাধ্যমে বর্তমানে ভারত থেকে ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবারের সভায় ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে সব ধরনের সিডি, ট্যাক্স ও ব্যাট থেকে অব্যাহতি চেয়েছে বাংলাদেশ।
এছাড়া রাজনৈতিক কারণে বা ভারতীয় আইন পরিবর্তনজনিত কারণে আর্থিক সংশ্লেষের উদ্ভব হলে তা থেকে অব্যাহতি প্রদানেরও দাবি জানায় বাংলাদেশ। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে বিদ্যুৎ রপ্তানির বিষয়েও এ বৈঠকে আলোচনা হয়।
স্টিয়ারিং কমিটির পঞ্চাদশ এই সভায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ভারতের বিদ্যুৎ সচিব অজয় কুমার ভাল্লা।
সভায় বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা সংক্রান্ত বিরাজমান বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনা হয়।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক (জনসংযোগ) সাইফুল হাসান চৌধুরী জানান, সভায় ভেড়ামারা ও ত্রিপুরা ইন্টারকানেকশনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ আমদানির বর্তমান অবস্থা, ভেড়ামারা ইন্টারকানেকশনের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির অগ্রগতি, এইচভিডিসি ২য় ব্লক নির্মাণের মাধ্যমে অতিরিক্ত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি, সূর্যমনি-কুমিল্লা নর্থ লিংকের মাধ্যমে জি টু জি-এর আওতায় এনটিপিসি’র বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহ থেকে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আরো ৩৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি, প্রস্তাবিত কাটিহার-পার্বতীপুর-বড়পুকুরিয়া-বরানগর ৭৬৫ কেভি গ্রিড ইন্টারকানেকশন, বহরমপুর-ভেড়ামারা ৪০০ কেভি ২য় ট্রান্সমিশন লাইন ও সূর্যমনি-কুমিল্লা নর্থ লিংকের মাধ্যমে আরো বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যে কুমিল্লায় ব্যাক টু ব্যাক এইচভিডিসি সাব স্টেশন নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা হয়।
স্টিয়ারিং কমিটির সভায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ভারতীয় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে অংশগ্রহণ বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে ভারতে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে অংশগ্রহণের বিষয় আলোচনা ছাড়াও জিএমআর কর্তৃক নেপালে উৎপাদিত জল বিদ্যুৎ ভারতের এনভিভিএন এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আমদানি, ভুটানের হাইড্রো পাওয়ার প্রজেক্টে বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটানের যৌথ বিনিয়োগ ও এই প্রজেক্ট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আমদানিসহ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহযোগগিতার বিষয়সমূহ বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়।
এছাড়াও সভায় রামপালে বাস্তবায়নহীন মৈত্রি সুপার থারমাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি বিষয়েও আলোচনা হয়। সভায় রামপালে বাস্তবায়নহীন ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রি সুপার থারমাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ ও বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের ১৫ তম সভা সোমবার একই স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটি ও ওয়ার্কিং গ্রুপের ১৪ তম সভা এবছর জানুয়ারী মাসে দিল্লীতে অনুষ্ঠিত হয়।