Sylhet Today 24 PRINT

এসআইইউ’র পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ০৪ অক্টোবর, ২০১৮

সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এসআইইউ) দুই ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্কট নিরসনসহ ৫ দফা দাবিতে আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেছে এম.বি.এর শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে এমবিএ ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী পল্টু কুমার রায় জানান, আমাদের সহপাঠীদের উপর অন্যায় বহিষ্কারাদেশ নীরবে মেনে নিয়ে আমরা পরীক্ষার হলে বসতে পারি না, প্রশাসন আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে গায়ের জোর দেখিয়েছে। এবার তো জোর করে পরীক্ষা নিতে পারবে না। আমরা কোন ধরণের টিউশন ফি জমা দেই নি,পরীক্ষাও দিব না।

অবিলম্বে দাবি আদায় না হলে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

প্রসঙ্গত, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ খালি রেখেই শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সিলেটের ১ম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে মালিকানার দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। পরবর্তীতে এ দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা তৈরি হয় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। গেল কয়েক বছরে তা চরম আকার ধারণ করেছে। মালিকানার দ্বন্দ্বে প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও গঠন করা হয়নি সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টি। এসবের প্রভাব পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে। থমকে আছে অবকাঠামো উন্নয়নও।

এদিকে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে রেড এলার্ট ও ভর্তি সংক্রান্ত সতর্কতা জারি করে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

এরপর থেকে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সঙ্কট নিরসনসহ ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে চলতি বছরের ১৮ জুলাই ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরসন সংকটের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

পবর্তীতে আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের মতামত সংগ্রহ করে জরিপ করে। সেই জরিপে দেখা যায় প্রায় ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সংকট নিরসনের কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। এই জরিপের ভিত্তিতে ফের নতুন করে আন্দোলন নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৪ সেপ্টেম্বর ভারপ্রাপ্ত ভিসির কাছে স্মারক লিপি দিয়ে পাঁচ দফা দাবী পেশ করে শিক্ষার্থীরা। সেসময় ভিসি সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেন।

এর তিনদিনপর পার হওয়ার পরেও কোনো সিদ্ধান্তে না আসলে শিক্ষার্থীরা এই বিষয়টি নিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর আবারো ভারপ্রাপ্ত ভিসির সঙ্গে দেখা করতে গেলে তারা লাঞ্চিত হয় বলেও অভিযোগ উঠে আন্দোলনরত দুই শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়।

পরদিন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা তারেক উদ্দিন তাজের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হেনস্তার অভিযোগ এনে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুই ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করা হলে কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ করার ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে নগরীতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মশাল মিছিল বের করে। এদিন এ প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে তারা  ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

পরে ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের নিয়োগসহ যাবতীয় প্রশাসনিক জটিলতা নিরসন ও আন্দোলনে জড়িত থাকা দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবী জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।

এরপর ২৯ অক্টোবর আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী গান ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশি বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.