Sylhet Today 24 PRINT

২২৯ বছর পর নতুন ঠিকানা পাচ্ছেন সিলেট কারাগারের বন্দিরা

শাকিলা ববি |  ১১ জানুয়ারী, ২০১৯

২২৯ বছর পর ঠিকানা পাল্টাচ্ছে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিদের। উদ্বোধনের তিন মাস পর বন্দি স্থানান্তর হচ্ছে সিলেটের সদর উপজেলার বাদাঘাটে নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কারাগারে। আজ শুক্রবার সিলেট নগরের জেলরোডস্থ পুরাতন কারাগার থেকে নতুন কারাগারে বন্দি স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে। বন্দি স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তাজনিত কারণে ১০, ১১ ও ১২ জানুয়ারি বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করার নির্দেশনা দিয়েছে জেল কতৃপক্ষ। পাশাপাশি বন্দি স্থানান্তরের সময় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।

তিন মাস আগে সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলণ কক্ষে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নতুন কারাগারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারগারের নির্মান কাজ পুরোদমে শেষ হয় গত বছর জুলাই মাসে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর সমন্বয় বৈঠকের মাধ্যমে বন্দি স্থানান্তর করার কথা ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ জানুয়ারি সমন্বয় বৈঠক করা হয়। সেই বৈঠকেই শুক্রবার ও শনিবার দুই দিন বন্দি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

কারাগার সূত্র জানায়, আধুনিক নানা সুবিধা নিয়ে বাদাঘাটে নির্মাণ করা হয় নতুন কেন্দ্রীয় কারাগার। এখানে রয়েছে দুই হাজার বন্দি ধারণ ক্ষমতা। পাশাপাশি রয়েছে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, একশ শয্যার পাঁচতলা বিশিষ্ট হাসপাতাল, ২০ শয্যার মানসিক হাসপাতাল, ২৫ শয্যার টিবি হাসপাতাল, স্কুল ও লাইব্রেরী ভবন ছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রয়েছে ১৩০টি ফ্ল্যাট।

এ ব্যাপারে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাছির উল্লাহ খান বলেন, ‘বন্দিদের নতুন কারাগারে নেওয়ার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। গত ৬ তারিখ জেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় বন্দি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল জলিল বলেন, ‘বন্দিদের স্থানান্তরের বিষয়টি গোপনীয়। নিরাপত্তাজনিত কারণে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে নতুন কারাগার প্রস্তুত আছে। কারাগারের বিদুৎ, গ্যাস, পানির সংযোগ দেওয়া হয়েছে। বন্দিদের স্থানান্তরের জন্য এখন পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে নতুন কারাগার।’

এ ব্যাপারে মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা বলেন, ‘বন্দিদের স্থানান্তরের জন্য সার্বিক নিরাপত্তা দিবে মহানগর পুলিশ। এই নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি আমরা।’

উল্লেখ্য, ১৭৮৯ সালে আসামের কালেক্টর জন উইলিশ সিলেট শহরের কেন্দ্রস্থল ধোপাদিঘীর পাড়ে ২৪ দশমিক ৭৬ একর জমির ওপর কারাগার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৭ সালের ৩ মার্চ এটি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রুপান্তরিত হয়। তখন কারাগারের ধারণ ক্ষমতা দাঁড়ায় ১ হাজার ২১০ জনে। বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। জারাজীর্ন অবস্থার পাশাপাশি কারাগারে রাখা হয়েছে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুন বন্দিকে। বন্দিদের মানবেতন জীবনযাপনের বিষয়টি বিবেচনায় এনে সিলেট নগর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার বাদাঘাটে ৩০ একর জমির উপর নতুন কারাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১১ সালে দু’শ ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এ কারাগার নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। তবে ওই বছর আগষ্টে ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করা হলেও ২০১২ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়াদ ২০১৬ সালের জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কারাগারের সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এর কাজ, পুকুর খনন ও গ্যাস সংযোগ ছাড়া বাকী সব কাজ ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়ে যায়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.