Sylhet Today 24 PRINT

লাশ আটকে প্রতিবেশির চাঁদা দাবি, ৩৯ দিন পর দেশে ফিরল আজিজের লাশ

কুলাউড়া প্রতিনিধি |  ১২ জানুয়ারী, ২০১৯

আরব আমিরাতের শারজায় নিজের প্রবাসী প্রতিবেশীর লাশ আটকে রেখে দেশে স্বজনদের কাছে টাকা দাবি করার অভিযোগ ওঠেছে আরেক প্রবাসীর বিরুদ্ধে। বিষয়টি চাউর হলে পরবর্তীতে নিজের প্রতারণার দায় স্বীকার করে মুচলেকা দিয়েছেন টাকা দাবিকারী ময়না মিয়া। এরপর দূতাবাসের উদ্যোগে মৃত্যু ৩৯ দিন পর দেশে ফিরেছে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার আবদুল আজিজের লাশ। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও চলছে সমালোচনার ঝড়।

জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের পাট্রাই গ্রামের আবদুল আজিজ (৫০) নামের এক বাংলাদেশি শ্রমিক গত বছরের (২০১৮) ২ ডিসেম্বর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজার একটি হাসপাতালে মারা যান। এ সময় একই গ্রামের ময়না মিয়া (৪০) নামের আরেক বাংলাদেশি নানা কৌশলে আজিজের লাশ আটকে রাখেন। একপর্যায়ে ময়না মিয়া লাশ দেশে পাঠানোর কথা বলে আজিজের স্বজনদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শারজায় বসবাসকারী বাংলাদেশি ও দুবাই কনসাল জেনারেলের উদ্যোগে ৩৯ দিন পর গত বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) আজিজের লাশ দেশে পাঠানো হয়। ময়নার বাড়িও একই এলাকায়। তিনি প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি লিখিত মুচলেকা দিয়েছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আজিজ ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে শারজায় ছিলেন। ২ ডিসেম্বর আজিজের স্বজনদের মোবাইলে তাঁর মৃত্যু সংবাদটি জানান ময়না। পরে ময়না আবারও ফোনে বলেন, আজিজের লাশ দেশে পাঠানোর ব্যাপারে তিনি চেষ্টা-তদবির চালাচ্ছেন। এতে প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ পড়বে। ওই টাকা না দিলে লাশ পাঠানো সম্ভব হবে না। তিনি স্বজনদের কাছে ওই টাকার ব্যবস্থা করে রাখতে বলেন। এ অবস্থায় তাঁরা উৎকণ্ঠায় পড়ে যান। স্বজনেরা বিভিন্নভাবে শারজায় বসবাসকারী কয়েক জন বাংলাদেশির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তাঁদের পরামর্শে দুবাইয়ে অবস্থিত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেলের কাছে লিখিত আবেদন পাঠান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৮ জানুয়ারি (২০১৯) কনসাল জেনারেল ইকবাল হোসেন খাঁন ময়নাকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে আনেন। এ সময় বাংলাদেশি বিভিন্ন কমিউনিটি সংগঠনের কয়েক জন নেতাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে ময়না প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি লিখিত মুচলেকা দেন। পরে কনসাল জেনারেলের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে আজিজের লাশ দেশে পাঠানো হয়। প্রতারণার বিষয়ে ময়নার দেওয়া লিখিত মুচলেকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক বলেন, ‘আজিজ ও ময়নার বাড়ি পাশাপাশি। ময়নার এ আচরণে আমরা খুবই ব্যথিত হয়েছি। এ কাজটা তাঁর মোটেই সমীচীন হয়নি। ময়নার মতো লোকেরাই বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেন। কনসাল জেনারেল উদ্যোগ না নিলে লাশ আসতে হয়তো আরও বিলম্ব হতো। জানাজা শেষে শুক্রবার সকালে আজিজের লাশ স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়ে গেছে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.