Sylhet Today 24 PRINT

সিসিকের কাজ করে ১৩ বছরেও বিল না পাওয়ার অভিযোগ ঠিকাদারের

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) কাজ করে সাড়ে ৪১ লাখ টাকা বকেয়া বিল আদায়ে ১৩ বছর ধরে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বলে অভিযোগ করেছেন জয়নাল আবেদীন মজুমদার নামে প্রথম শ্রেণির একজন ঠিকাদার।

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নগরীর মিরেরময়দানস্থ সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগের কথা জানান মেসার্স খাজা ট্রেডিং কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন মজুমদার।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, "সিলেট সিটি করপোরেশনের কাজ করে গত ১৩ বছরেও আমি আমার পাওনা টাকা পাইনি। উল্টো ঋণের বোঝা বইতে না পেরে বিলুপ্ত হয়ে গেছে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিও।"

এসময় তিনি সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানসহ আরো কয়েকজনকে দায়ী করে বলেন, "আমার এই পরিণতির জন্য দায়ী সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজ, ইঞ্জিনিয়ার মালেক, সাইফুল ইসলাম, শামছুল হক।"

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, "২০০৫ সালে সিলেট সিটি করপোরেশনের কাছে আমার ঠিকাদারি কাজের বিল বাবদ আমার পাওনা ছিল ৫৮ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের নির্দেশে নগরীর মেন্দিবাগ কবরস্থানের বাউন্ডারি ওয়াল ও দু’টি গেইট, মেন্দিবাগস্থ শামীমের বাড়ির রাস্তার ড্রেন ও স্লেব নির্মাণ, মেন্দিবাগ পাঠাগার নির্মাণ ও মিতালী হতে টিবি গেইট পর্যন্ত ড্রেন নির্মাণ করি। এইসব কাজ-বাবদ আমার পাওনা ছিল যথাক্রমে ১২লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, ৬ লক্ষ ২০ হাজার, ১২ লক্ষ ৫০ হাজার এবং ২৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা।"

তিনি আরো বলেন, "আমার পাওনা টাকা আদায়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের দ্বারস্থ হলে চেকের মাধ্যমে তিন কিস্তিতে আমাকে ১৩ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৯৬ টাকা পরিশোধ করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে দুই কিস্তিতে ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা আমাকে প্রদান করেন বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। কিন্তু, অবশিষ্ট ৪১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৬০৪ টাকা আমি এখনো পাইনি।"

জয়নাল আবেদিন বলেন, "কাজের জন্য যে টাকা খরচ হয়েছে তা ব্যাংক ঋণসহ বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু সময়মতো সিসিকের বিল না পাওয়ায় ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হই। ফলে ব্যাংকের সুদ বাড়ার পাশাপাশি ব্যাংক আমার উপর একটি মামলা হয়। এক পর্যায়ে মামলা চালানো, কিস্তি পরিশোধ, সংসার চালানো আমার পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।"

তিনি আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, "অনেকটা নিরুপায় হয়ে আমি বসতভিটা বিক্রি করে সেই সকল ঋণ পরিশোধেরও চেষ্টা করেছি। এখন আমি নিঃস্ব, আমার বিক্রি করার মতো আর কিছু অবশিষ্ট নাই। ছেলেদের লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে গেছে। নিজে অক্ষম হয়ে পড়ায় এখন তারা শ্রমিকের কাজ করছে।"

তিনি বলেন, "দুঃশ্চিন্তা আর ঋণের চাপে আমার ব্রেনস্ট্রোক হয়েছে। আমি আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। একদিন অন্য সবার মতো আমিও চলে যাবো আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে। সাবেক মেয়র কামরান যদি সময়মতো কাজের বিল পরিশোধ করতেন তাহলে আমাকে আজ এই অসহায় অবস্থায় দাঁড়াতে হতো না। বিলুপ্ত হত না আমার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স খাজা ট্রেডিং কোম্পানির ৯টি দোকান।"

এ অবস্থায় মাথাগোঁজার ঠাঁই, চিকিৎসা, সন্তানদের পড়ালেখা, দুমুঠো ভাতের নিশ্চয়তা ফিরে পেতে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.