Sylhet Today 24 PRINT

‘প্রেমের ফাঁদ পেতে গণধর্ষণ’, আটক ১

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি |  ১০ মার্চ, ২০১৯

বই মেলায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কথিত প্রেমিক, তার দুই বন্ধু ও এক পাহারাদার মিলে নির্জন পাহাড়ে নিয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত এক আসামীকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে আটক করেছে র‍্যাব-৯ এর সদস্যরা। আটক তোফায়েল মিয়া (২০) জেলার বাহুবল উপজেলাধীন বাঘেরখাল গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে গণধর্ষনের কথা স্বীকার করে নেয়। এছাড়াও ধর্ষণ পরিকল্পনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বর্ণনাও সে দেয় বলে জানিয়েছে র‍্যাব সূত্র।

র‍্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে তোফায়েল জানায়, বেশ কিছু কাল পূর্বেই এই গণধর্ষণের নীলনকশা প্রণয়ন করে তারা। পরিকল্পনা মোতাবেক প্রথমে মামুন ওই কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। তারপর পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ২১ ফেব্রুয়ারি কথিত প্রেমিক মামুন সিএনজি অটোরিকশা যোগে উপস্থিত হয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে থাকা পুটিজুরী এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর এই ছাত্রীকে বই মেলায় যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। এতে সে রাজি হলে তাকে নিয়ে অটোরিকশায় উঠে মামুন। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিল তোফায়েল ও শিপন। সিএনজিতে উঠিয়ে মেলায় না নিয়ে অন্য দিকে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে মেয়েটিকে ওরা জাপটে ধরে। ওই কিশোরী চিৎকারের চেষ্টা করলে তোফায়েলসহ তার অপর দুই বন্ধু মুখ চেপে ধরে। পরবর্তীতে বৃন্দাবন চা-বাগান এলাকার পাশের নির্জন পাহাড়ি স্থানে ছাত্রীটিকে নিয়ে মামুনসহ অন্যরা তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। শেষে ধর্ষকেরাই তাকে তার বাড়ির কাছাকাছি পাশে একটি রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে তোফায়েল আরো জানায়, এ কিশোরী ছাড়া আরো একাধিক তরুণীকেও প্রেমের ফাঁদে ফেলে গণধর্ষণের পরিকল্পনা ছিল তাদের।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে র‍্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের সহকারী পুলিশ সুপার ( এএসপি) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম জানান, চরম পেশাদার মানসিকতা সম্পন্ন এ ধর্ষক আত্মগোপনের জন্য গত ২০ দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেরিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে ধূলা দেওয়ার জন্য সে কোন মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকেও বিরত থাকে। তবুও প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং গুপ্তচর নির্ভর তথ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে তাকে আটক করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি। এ সময় ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সবধরনের সহিংসতা নির্মূল এবং ঘরে বাইরে নারীর প্রতিটি মুহূর্তকে নিরাপদ করার লক্ষ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন এই র‍্যাব কর্মকর্তা।

এ সময় মামলার অন্যান্য আসামিকেও আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, এ ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি ধর্ষিতা নিজে বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে বাহুবল থানায় মামলা দায়ের করেন। মিডিয়ায় ঘটনাটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হবার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসামীদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে। তারই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব কর্তৃক আসামি তোফায়েলকে গ্রেপ্তার করা হল।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.