Sylhet Today 24 PRINT

রোজায় দেশে আসবেন, মেয়েকে কথা দিয়েছিলেন জয়নাল

জাহিদ উদ্দিন, গোলাপগঞ্জ |  ২৪ এপ্রিল, ২০১৯

২০ বছর ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যবসা করছিলেন জয়নাল আবেদীন। এই রমজানেই বাড়িতে আসার কথা ছিল তাঁর। সোমবার (২২ এপ্রিল) একমাত্র মেয়ে সাইফার (১০) সাথেও কথা হয়েছিল।

মেয়েকে জয়নাল জিজ্ঞাস করেছিলেন, 'দেশে আসার সময় তোমার জন্য কি আনবো মা?' মেয়ে একটি ভিডিও গেমস ও চকলেট আনার আবদার করেছিলো বাবার কাছে। কিন্তু চকলেট আর ভিডিও গেমস আর আনা হল না তারা। জয়নাল আবেদীন ঠিকই দেশে ফিরবেন, কিন্তু মেয়ের জন্য চকলেট আর ভিডিও গেমস নিয়ে নয় বরং লাশ হয়ে কফিনবন্দি হয়ে ফিরবেন দেশে।

বাবা আর নেই তা এখনও বুঝতে পারছে না ছোট্ট সাইফা। তবে খারাপ কিছু একটা যে হয়েছে তা সকলের কান্না দেখে অনুমান করছে। তাই কেঁদেকেটে পরিবারের সকলের কাছে তার জিজ্ঞাসা- 'বাবা কখন আসবেন? বাবা কেন ফোনে আর আমার সাথে কথা বলছেনা? সবাই কেন কাঁদছে?'

জয়নাল আবেদীন মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাপটাউন এলাকায় বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টার দিকে একটি মুদির দোকান থেকে বের হওয়ার সময় ১০ থেকে ১৫ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে আহত হলে তাৎক্ষণিক আফ্রিকার একটি সরকারি হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। তিনি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপাশা ইউনিয়নের জাঙ্গালহাটা গ্রামের মৃত মতছির আলী দ্বিতীয় পুত্র।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) জয়নাল আবেদীন জাঙ্গালহাটাস্থ গ্রামের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকের মাতম বইছে। পরিবার পরিজনের মধ্যে চলছে কান্নার রোল। স্ত্রী বার বার মূরছা যাচ্ছেন।

এসময় কথা হয় জয়নাল আবেদীনের বড় ভাই সাহাব উদ্দিনের সাথে। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে সিলেটটুডে টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, 'রমজানে আমার ভাই বাড়িতে আসার কথা ছিল। আমাদের সকলের সাথে ঈদ করবে বলেও জানিয়েছিল। ভাই ঠিকই দেশে আসবে তবে লাশ হয়ে। সন্ত্রাসীরা আমার ভাইকে বাঁচতে দিলোনা।

জয়নাল আবেদীনের মামা শাহ আলম জানান, জয়নালের লাশ দেশে আনতে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। দু'তিন দিনের মধ্যে আশা করছি লাশ দেশে আনা হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.