ছাতক প্রতিনিধি | ২৭ এপ্রিল, ২০১৯
ছাতকের গোবিন্দনগর ফজলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার এক শিক্ষককের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছে ওই মাদ্রাসারই এক ছাত্রী। এ অভিযোগের কোনো নিষ্পত্তি না করায় শনিবার ওই ছাত্রীর হাতে লাঞ্ছিত হন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী।
শনিবার সকালে মাদ্রাসায় ক্লাস চলাকালিন সময়ে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে মাদ্রাসায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন।
এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী ও আলিম পরিক্ষার্থী ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদা আফসারীর কার্যালয়ে ডাকা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থী পৃথকভাবে বক্তব্য প্রদান করেন।
এসময় শিক্ষার্থী মাদ্রাসার ইংরেজি শিক্ষক রাজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করে। সে জানায়, অভিযুক্ত শিক্ষকের ব্যাপারে অধ্যক্ষের কাছে দু’দফা বিচার প্রার্থী হলেও তিনি কোন সমাধান দেননি। যার ফলে সে চলমান আলিম পরিক্ষায় অংশ নেয়নি। এজন্য ক্ষিপ্ত হয়ে সে (ছাত্রী) অধ্যক্ষের সাথে এরূপ আচরণ করে।
আর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী দু’দিন মোবাইল ফোনে হয়রানির বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলে স্বীকার করে জানান, বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। এ বিষয় নিয়ে গত ২৮ মার্চ মাদ্রাসায় একটি সভাও অনুষ্টিত হয়েছে।
তিনি জানান, শিক্ষার্থীর এমন আচরণে হতবাক হয়েছেন তিনি।
ইউএনও'র কাছে ওই শিক্ষার্থী জানায়, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে শিক্ষক রাজিবুর রহমানের বাসায় প্রাইভেট পড়তে যায় সে। এ সময় তার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়। নানাভাবে তাকে যৌন হয়রানির করেন এবং বিভিন্ন প্রলোভন দিয়েছেন ওই শিক্ষক। এতে সে ৬ দিন প্রাইভেট পড়ে এ শিক্ষকের কাছে পড়া বন্ধ করে দেয়। অধ্যক্ষের কাছে এ নিয়ে বিচার প্রার্থী হলে সে কোন বিচার পায়নি। এজন্য লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়ে আলিম পরিক্ষায় অংশ নেয়নি সে।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থী বাদী হয়ে শনিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। শিক্ষার্থীর পিতা থানায় অভিযোগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মাদ্রাসার ইংরেজি শিক্ষক রাজিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে জানান, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
ছাতক থানার ওসি আতিকুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদা আফসারী জানান, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ অধ্যক্ষের বক্তব্য শুনেছি। অভিযোগ দিলে শিক্ষার্থীকে সকলপ্রকার আইনি সহযোগিতা দেয়া হবে।