Sylhet Today 24 PRINT

সুনামগঞ্জে ছেলে সেজে মৃত ২ মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকা উত্তোলন

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি |  ১৭ জুন, ২০১৯

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের কাবিলাখাই গ্রামের পরিমল পাল মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। দেশ স্বাধীনের কয়েক বছর পর তিনি ও তার দুই ভাই ভারতে চলে যান। সেখানেই মারা যান পরিমল পাল। কিন্তু একই গ্রামের মৃত সাধন পালের ছেলে সন্তোষ পাল মুক্তিযোদ্ধা পরিমল পালের ছেলে সেজে কয়েক বছর ধরে ভাতা উত্তোলন করছেন।

এ ঘটনায় এলাকার সলফ গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা গেদা আলীর ছেলে ইসমাইল আলী গত ১৯ মার্চ জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে ভাতা উত্তোলনকারী সন্তোষ পালের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে সন্তোষ পাল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নয় বলে জানিয়েছেন তারই আপন চাচা অনিল পাল। তিনি বলেন, তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন সাধন পাল। তবে সাধন পাল বা তাদের পরিবারের কেউ মুক্তিযোদ্ধা নন।

এদিকে উপজেলার কান্দিগাঁও গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা যতিন্দ্র কুমার অবিবাহিত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। অথচ তার ছেলে সেজে তার ভাতা উত্তোলন করছেন তার ভাই বিধুভূষণ দাসের ছেলে নান্টু দাস। নান্টুকে এসব কাজে সহায়তা করে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন একই গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার রাধাকান্ত তালুকদার।

নান্টু দাসের ভাতা প্রদান বন্ধের জন্য গত বছরের ৭ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কাদির।

ভাতা উত্তোলনকারী নান্টু কান্ত দাস বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা যতিন্দ্র কুমার দাসের পালিত (পোষ্য) ছেলে। মুক্তিযোদ্ধা রাধাকান্ত তালুকদার আমার কাগজপত্র ঠিক ও ভাতা উত্তোলন করে দিয়েছেন। আমি ভাতার তিন ভাগের মাত্র একভাগ পেয়েছি। দুই ভাগ নিয়েছেন রাধাকান্ত তালুকদার ও অঞ্জন কুমার দাস। তবে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার রাধাকান্ত তালুকদার ও মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন কুমার দাস দাবি করেছেন এসব অভিযোগ মিথ্যা।

দীর্ঘদিন ধরে সন্তান সেজে মৃত দুই মুক্তিযোদ্ধার ভাতা ভোগ করছেন দুই প্রতারক। অভিযোগ আছে তাদের এই জাল-জালিয়াতিতে সহযোগিতা করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের নেতারা। সন্তোষ পালকে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলনে সহযোগিতা করেছেন সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আতাউর রহমান। নান্টুকে এসব কাজে সহায়তা করে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন একই গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার রাধাকান্ত তালুকদার। তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তারা।  দক্ষিণ সুনামগঞ্জের এ দুই ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর অভিযোগের তদন্ত করছেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সফিউল্লাহ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর পরই দুজনের ভাতা প্রদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সমাজসেবা অফিসার বিষয়টি তদন্ত করছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সরকারি অর্থ আদায়সহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.