Sylhet Today 24 PRINT

ভিডিওকলে গরু বেচাকেনা

‘খোকাবাবু’র মূল্য ১০ লাখ টাকা

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি |  ১০ আগস্ট, ২০১৯

সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের জনতার বাজারের সিলেটের সর্ববৃহৎ গরু ছাগলের হাট বসেছে। ইতোমধ্যে জমে উঠেছে জনতার বাজারে কোরবানির পশুর কেনাবেচা। এদিকে প্রবাসীরা ভিডিও কলের মাধ্যমে কোরবানির পশু বাছাই করে পছন্দের পশুটি ক্রয় করছেন।

আগামী সোমবার (১২ আগস্ট) ঈদ-উল আযহা। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলাজুড়ে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। শনিবার (১০ আগস্ট) উপজেলার সর্ববৃহৎ ও বিভাগের অন্যতম বৃহৎ পশুর হাট উপজেলার দিনারপুর অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী গজনাইপুর জনতার বাজারে ছিল জমজমাট পশুর হাট। প্রায় ১০ হাজার গরু ও ছাগল হাটে নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। বাজারে টোল আদায়কারীরা জানান প্রায় ৪/৫ হাজার গরু ছাগল কিনা বেচা হয়েছে।

এছাড়াও নবীগঞ্জ পৌর এলাকার সালামতপুর, ইনাতগঞ্জ, সৈয়দপুর বাজার, নতুন বাজার, কাজির-বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পশুর হাট গুলোতে গরু কেনা বেচা হয়েছে। ক্রেতারা জানান এবার গরুর ছাগলের দাম খুবই বেশি। হাটগুলো ক্রেতাদের পদ চারণায় সরগরম থাকলেও দাম সাধ্যের বাইরে থাকায় অনেক ক্রেতাই দাম কমার আর ১ দিন অপেক্ষা করছেন। তবে একদিনের মধ্যে ক্রেতারা কোরবানির পশু কিনতে হবে। একদিনের মধ্যে ক্রেতারা মনে করছেন হাটে পশু বিক্রি করতে আসা গরু ছাগল বিক্রি করবেন ব্যবসায়ীরা।

সরজমিনে জনতার বাজারের পশুর হাটে ঘুরে কথা হয় ক্রেতা বিক্রেতাদের সাথে। অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি মনে করছেন এ হাটে আসা ক্রেতারা। লোক সমাগম অনেক হলেও বেচা বিক্রি জমে উঠেনি বলে জানালেন একাধিক বিক্রেতা।

ঈদে পশুর হাটের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। শেষ মুহূর্তে আরও বেশী ভিড় বাড়বে এবং রাতব্যাপী পর্যন্ত বেচা কেনা চলবে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা ও গরুর বাজার কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে বাজারগুলোতে জাল টাকা সনাক্ত করণে কোনো যন্ত্র না থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

সরজমিনে বিভিন্ন পশুর হাট-ঘুরে দেখা যায়, সম্পূর্ণ হাট ছিল গরু, ছাগলসহ বিভিন্ন পশুতে পরিপূর্ণ। তবে দাম বেশী থাকায় মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষকে হিমশিম খেতে দেখা গেছে। তবে অন্য বছরের তুলনায় দাম একটু বেশী। অনেক ক্রেতাদের কোরবানির পশু না কিনে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছে। তবে আর অপেক্ষা করে লাভ নেই, এখনই কোরবানির পশু কিনবেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। বাজারে দাম বেশী থাকায় অনেক বিক্রেতাকে ও তাদের আমদানিকৃত গরু বিক্রি না করে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে।

এদিকে ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি ছোঁয়ায় আরও একধাপ এগিয়ে জমে উঠেছে পশুর হাট। অনেকেই ইমো,স্কাইপিসহ বিভিন্ন অ্যাপ এর মাধ্যমে ভিডিও কলে বিদেশে অথবা বাড়িতে থাকা লোকজনকে গরু দেখাচ্ছেন এবং তারা ভিডিও কলে গরু দেখে দেখে পছন্দ করছেন কোনটা কিনবেন। এ ছাড়াও অনেকেই গরুর ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তাদের স্বজনদের শেয়ার করছেন। হবিগঞ্জ থেকে আসা খোকন মিয়া একটি ষাঁড় নিয়ে এসেছেন যার দাম ১০ লক্ষ টাকা দাবি করছেন। বিশাল এই ষাঁড়ের নাম তিনি দিয়েছেন ‘খোকাবাবু’ । তিনি তার ব্যক্তিগত খামারে এই ষাঁড়টি লালন পালন করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন তার ষাঁড়টি এখন পর্যন্ত ৪লাখ টাকা দাম হয়েছে।

উপজেলার গজনাইপুর গ্রামের ক্রেতা লুৎফুর রহমান জানান, দেশীয় গরু কিনতে বাজারে এসেছি, বাজারে দাম খুব বেশী তাই কোরবানির গরু কিনতে হিমশিম খাচ্ছি। আগামীকাল বাজারে দাম আরও কমতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

উপজেলার দেবপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাদির পশু বিক্রি করতে এসেছেন এ হাটে। তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, অনেকেই আসছেন কিন্তু দেখে দেখে চলে যাচ্ছেন। ক্রেতারা অভিযোগ করছেন গরুর দাম বেশি। তাই কোরবানির পশু না কিনে চলে যাচ্ছেন। যার ফলে আমরা আশানুরূপ বিক্রি না করতে পারায় সেগুলো নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। একটি গরু ৮০ হাজার টাকা দাম চাইলে ও ক্রেতারা ৫০/৬০ হাজার টাকা দাম করেছেন। তাই বিক্রি করতে পারিনি। তবে ঈদের আগের বাজার আরও অনেক ভাল হবে বলে আশা করছি।

জনতার বাজারে গরু বিক্রি করতে আসা আব্দুল গফুর জানান, দীর্ঘদিন ধরে গরু লালন-পালন করেছি লাভের আশায়,যদি ভারতীয় গরু বাজারে না আসে তাহলে আমাদের দেশীয় গরুগুলো ন্যায্য মূল্য পাবো বলে আশাবাদী।

কায়স্থগ্রামের গ্রামের আবুল খায়ের কায়েদ বলেন, নবীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী দিনারপুর জনতার বাজার পশুর হাটে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রেতারা পশু নিয়ে আসেন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর দাম একটু বেশি এবং ভারতীয় গরু বাজারে আসায় দেশীয় গরু বিক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছেন। তাই ক্রেতারাও দাম চড়া হওয়ায় গরু কিনতে পারছেন না। অনেকেই শেষ বাজারের অপেক্ষা করছেন। আমি একটি আমাদের পানিউমদা এলাকার খামাড়ি সোহাগ আহমেদ এর একটি গরু ৩লাখ টাকা দাম করেছে। তিনি ৫লাখ টাকা চাচ্ছেন।

নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুল বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও নির্বিঘ্নে ক্রেতা বিক্রেতারা পশু ক্রয় বিক্রয় করছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.