Sylhet Today 24 PRINT

সিসিকের ভাগাড়ে অবিক্রিত ২০ ট্রাক চামড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১৪ আগস্ট, ২০১৯

নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে কোরবানির বর্জ্যের সাথে অবিক্রিত প্রায় ২০ ট্রাক চামড়া সংগ্রহ করে তা ভাগাড়ে পুঁতে ফেলেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। কোরবানিদাতা ও বিভিন্ন মাদ্রাসা এসব চামড়া বিক্রি করতে না পেরে রাস্তায় ফেলে দিলে তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে নগরীর বিভিন্ন এলাকাতে। পরে সিসিক নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এ সকল পরিত্যক্ত চামড়া সংগ্রহ করে তা সিসিকের নির্ধারিত ময়লা ফেলার স্থান পারাইরচকে পুতে ফেলে।

প্রতিবারের মতো এবারও ঈদুল আযহায় নগরী ও নগরীর বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পশুর চামড়া সংগ্রহ করে বেশ কয়েকটি মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দিনশেষে এর ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার প্রতিবাদ করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, সিলেটের চামড়া ব্যবসায়ীরা প্রতি পিস চামড়ার দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকার বেশি দিতে রাজি হননি। এমনকি অনেক ব্যবসায়ী বাকিতে চামড়া কিনতেও রাজি না হওয়ায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ রাস্তায় চামড়া ফেলে প্রতিবাদ করে। পরে চামড়াগুলো ময়লার সাথে তুলে নেয় সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।

এদিকে দিন শেষে সবাই একই ভাবে প্রতিবাদ জানাতে থাকলে অবিক্রিত চামড়া নিয়ে সিলেট জেলার বেশির ভাগ এলাকাতেই মানুষ বিপাকে পড়েন। মঙ্গলবার সকালে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে চামড়ার স্তূপ চোখে পড়ে। পরে সেগুলো ভাগাড়ে নিয়ে যায় কর্তৃপক্ষ।

চামড়ার এমন দামের কথা জেনে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও দাবি করলেন সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি চামড়া বাজার।

সিসিকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হানিফুর রহমান বলেন, ‘নগরী থেকে প্রায় ২০ ট্রাক চামড়া ডাম্পিং করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন মোড়ে এসব চামড়া রাখা ছিল। পরে সেগুলো ডাম্পিং করা হয়।’

এবার এত চামড়া কেন অবিক্রিত রয়ে গেল তা বোধগম্য নয় বলেও জানান তিনি।

এদিকে, কোরবানির ঈদে পশুর চামড়ার পাইকার না পাওয়ায় বালাগঞ্জে কুশিয়ারা নদীতে চামড়া ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা। এমন ঘটনা ঘটেছে সিলেটের আরও বেশ কয়েকটি উপজেলায়। চামড়া কেনার লোক না পাওয়ায় সারাদিন এবং রাতে পাহারা দিয়ে অপেক্ষার পর বাধ্য হয়েই মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার পাঁচটি মাদরাসার প্রায় চার শতাধিক চামড়া কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেয়া হয়।

এছাড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান বালাগঞ্জ ফিরোজাবাগ মাদরাসার ১১৯টি, বালাগঞ্জ মহিলা মাদরাসার প্রায় ১০০টি, তিলকচানপুর আদিত্যপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার ৩৪টি, নতুন সুনামপুর মাদরাসার ৭০টি ও দক্ষিণ গৌরীপুর মাদরাসার ২৭টি চামড়া নদীতে ফেলে দেয়া হয়। সবমিলে প্রায় কয়েক হাজার পশুর চামড়া নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। এ সময় মাদরাসার ছাত্রদের কাঁদতে দেখা যায়।

অন্যদিকে ফিরোজাবাগ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোরবানি দেয়া পশুর চামড়া সংগ্রহ করে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মাদরাসার রাস্তায় রাখা হয়। কেউই এসব চামড়া কিনতে আসেনি। চামড়ার দুর্গন্ধে বাসাবাড়ি থেকে বের হতে পারছিলেন না মানুষ। এজন্য এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে কুশিয়ারা নদীতে চামড়াগুলো ভাসিয়ে দেয়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.