Sylhet Today 24 PRINT

সিলেট সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি

আসামে নাগরিক তালিকা প্রকাশ

শাকিলা ববি |  ৩১ আগস্ট, ২০১৯

ফাইল ছবি

ভারতের আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রকাশের পর সিলেটের কয়েকটি সীমান্তে নজরনদারি বাড়িয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি)। এছাড়া সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশও।

নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়া ভারতীয়রা যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে তাই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

শনিবার আসামের বহুল আলোচিত এই নাগরিক তালিকা প্রকাশিত হয়। তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ নাগরিক। এনআসি প্রকাশের ফলে এরা বস্তুত রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়লেন। তবে বাদ পড়ারাও ১২০ দিনের মধ্যে আপিলের সুযোগ পাবেন৷ ভারতের বিজেপি সরকার না বললেও দল হিসেবে বিজেপি এদের বাংলাদেশের নাগরিক বলে আসছে অনেক দিন ধরেই৷

সিলেটর গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার অবস্থান ভারতের সীমান্ত এলাকায়। এরমধ্যে কানাইঘাট, বিয়ানীবাজার ও জকিগঞ্জের সাথে আসামের সংযোগ রয়েছে। ফলে এসব সীমান্তে নজরদারি সবচেয়ে বাড়িয়েছে বিজিবি।

বিজিবি'র ১৯  ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্নেল সাঈদ হোসেন সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আসাম ইস্যুতে আমাদের সীমান্তে ওইরকমভাবে নিরাপত্তা জোরদার করার কোনো নির্দেশনা আসে নি। তবে আমরা সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ভারতের দিক থেকে দৃশ্যমান কোনো থ্রেড এখনো নেই। যাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে তাদেরকে এখনো জেলে বন্দি বা কোনো ধরনের সংঘর্ষে জড়ায়নি ভারতীয় সরকার। এমনকি ভারত সরকারের পক্ষ থেকেও আমাদের সীমান্তে কাউকে পুশ করা হচ্ছে না। তাই এখন পর্যন্ত আমাদের সীমান্তে কোনো শঙ্কা নেই। তবে যদি ভারতে পরিবেশ উত্তপ্ত হয় তবে আমারাও প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

তিনি আরও বলেন, এই আসাম ইস্যু ছাড়াও আমাদেরকে সীমান্তের নিরাপত্তা ও নজরদারি বাড়াতে হচ্ছে। কারণ ভারত ও বাংলাদেশ দুই সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গাদের পাচার, মাদক পাচার, চোরাচালান ঠেকাতে সবসময়ই আমাদের এর্লাট থাকতে হয়।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মো. আবু নাসের বলেন, সীমান্ত এলাকায় সবসময়ই পুলিশের সতর্কতা থাকে। তবে আসামের বিষয় নিয়ে এখনও আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদ বলেন, আসামের বিষয়টা আমাদের নজরে রয়েছে। সেই অনুযায়ী আমাদের প্রাথমিক প্রস্তুতিও রয়েছে।

এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, এটা আন্তর্জাতিক বিষয়। তাই এ ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারবো না। সিলেটের সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়েও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।  

প্রসঙ্গত, শনিবার (৩১ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ১০ টায় অনলাইনে ও এনআরসি সেবাকেন্দ্রে আসামের চূড়ান্ত  নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ আবেদনকারীর মধ্যে তালিকায় স্থান পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ নাগরিক। ১৯ লাখ চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, বাদপড়ারা আগামী ১২০ দিনের মধ্যে আপিলের সুযোগ পাবেন। তালিকায় নাম আছে কিনা জানা যাবে এনআরসি সেবাকেন্দ্রে গিয়ে। জেলাশাসকের দপ্তরেও দেখা যাবে এনআরসি তালিকা। এনআরসির ওয়েবসাইটে গিয়ে এআরএন নম্বর টাইপ করেও দেখা যাবে নাম আছে কিনা। আবেদনকারীদের জন্য বিশেষ টোল ফ্রি নম্বরেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে (আসামের জন্য-১৫০১৭, আসামের বাইরের জন্য ১৮০০৩৪৫৩৭৬২) । তালিকায় নাম না থাকলেও অবশ্য এখনই ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে না। এক হাজার ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল খোলা হয়েছে। যেখানে গিয়ে ১২০ দিনের মধ্যে নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণে তথ্য পেশ করতে পারবেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.