Sylhet Today 24 PRINT

বানিয়াচংয়ে পল্লী বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিল

বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি করা হচ্ছে সাধারণ গ্রাহকদের

বানিয়াচং প্রতিনিধি |  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

শায়েস্তাগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন বানিয়াচং উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের লাগামহীন ভূতুড়ে বিলে গ্রাহকরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে আগস্ট মাসের বিদ্যুৎ বিলের কপি হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গ্রাহকরা।

বিগত কয়েক মাসের তুলনায় আগস্ট মাসে হঠাৎ বিলের পরিমাণ দুই থেকে তিনগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রাহকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক গ্রাহকদের অভিযোগ, পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি লোকসান দেখিয়ে একদিকে যেমন সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে, অন্যদিকে গ্রাহকের মাথায় ভৌতিক বিলের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত মুনাফা। সেবার নামে গ্রাহকের সাথে চরম প্রতারণা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করছেন বানিয়াচং উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা।

পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক জমির উদ্দিন জানান, মে, জুন ও জুলাই মাসে বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ কম ছিল। কিন্তু তার আগস্ট মাসের বিল দুই তিনগুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিল পরিশোধে তিনি চরম বিড়ম্বনার স্বীকার হচ্ছেন।

আরেক গ্রাহক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সোলায়মান খান জানান, জুন ও জুলাই মাসে তার ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বিল এসেছিল। কিন্তু আগস্ট মাসে তার দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৮৯৪ টাকা করা হয়েছে।

ব্যবসায়ী সুমন গাজী জানান, যেখানে আমার দোকানে বিল ১ হাজারের ভিতরে থাকার কথা গত দুই মাসে বিদ্যুৎ বিল ৪ হাজার টাকার উপরে পরিশোধ করেছি। একমাসের বিল আরেক মাসের বিলের সাথে যোগ করে দেয়। তাই বিলের পরিমাণ বেশি হচ্ছে।

বানিয়াচংয়ের একাধিক গ্রাহক আরও জানান, আবেদন থেকে শুরু করে সংযোগ দেয়া পর্যন্ত নানা সমস্যা দেখিয়ে গ্রাহকদের হয়রানি করে টাকার বিনিময়ে সংযোগ মিলছে পল্লী বিদ্যুতের। অভিযোগ রয়েছে সেবা পেতে অফিসের গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রাখার পর শেষ এক রুম থেকে আরেক রুমে পাঠানো হয় সেবাপ্রত্যাশীদের। তারপরও অমুক স্যার নাই তমুক স্যার নাই কাল আসেন বা পরশু আসেন এই বলে হয়রানি করা হয় গ্রাহকদের। বাড়তি বিল যোগ করে দিলে সেটা অফিস থেকে ঠিক করে আনতে গেলে যেমন সময় ব্যয় হচ্ছে অন্যদিকে আর্থিক ভাবেও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে গ্রাহকরা।

সাধারণ গ্রাহকরা বলছেন, দিনের পর দিন নতুন নিয়ম আর বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি শিকার করা হচ্ছে আমাদের। আর এই পুরো প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হয় পল্লী বিদ্যুতের কিছু অলিখিত দালালদের মাধ্যমে। অন্যদিকে দালাল ব্যতীত কোন গ্রাহক যদি নতুন সংযোগের জন্য আবেদন করেন, তাহলে সে সংযোগ কখন মিলবে বা আদৌ মিলবে কিনা এমন প্রশ্ন এখন বিদ্যুতের নতুন সংযোগ প্রত্যাশীদের ।

গ্রাহক মোস্তাকিম মিয়া জানান, আগস্ট মাসের বিলের কপি হাতে পেয়ে এক প্রকার হতবাক হয়েছি। আমার মতো শতশত গ্রাহক হাজার হাজার টাকা ভূতুড়ে বিল পরিশোধ করতে গিয়ে সর্বশান্ত হচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমিতির একাধিক গ্রাহক জানান, মাঠ পর্যায়ে মিটার রিডাররা অনেক সময় গ্রাহকের বাড়িতে না গিয়ে আন্দাজের উপর রিডিং উঠিয়ে নিয়ে এসে বিল বিলি করে দেয়। সেই চাপ সামলাতে গিয়ে সাধারণ গ্রাহককে হিমশিম খেতে হয়। সমিতির ভূতুড়ে বিলের জন্য গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন।

এ বিষয়ে বানিয়াচং পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন জানান, বিদ্যুৎ ব্যবহার বেশি হওয়ায় বিল বেশি আসতে পারে। তবে অসামঞ্জস্য কিছু ত্রুটি থাকলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.