Sylhet Today 24 PRINT

আত্মহত্যার তিনদিন পর মিলল তরুণীর ‘চিরকুট’, গণধর্ষণের অভিযোগ

জাহাঙ্গীর আলম খায়ের, বিশ্বনাথ |  ১৪ অক্টোবর, ২০১৯

তিনদিন আগে গত বৃহস্পতিবার বড়বোনের বাড়ি থেকে নিজ বাড়ি ফিরেই আত্মহত্যা করেন পপি বেগম (২১) নামের এক তরুণী। বাড়ি ফেরার দু’ঘন্টার মধ্যেই ওইদিন জোহরের নামাজের সময় আত্মহত্যা করেন তিনি। ময়না তদন্ত শেষে পরদিন শুক্রবার পপিকে দাফন করেন তার স্বজনরা। দাফনের তিন দিনের মাথায় মেয়ের হাতব্যাগে নিজের লিখা একটি চিরকুট পান পপির মা জ্যোৎস্ননা বেগম।

এতে লেখা রয়েছে বুধবার রাতে বোনের বাড়িতে থাকা অবস্থায় পপিকে উঠিয়ে নিয়ে যায় বোন জামাইর পাশ্ববর্তি বাড়ির জাহাঙ্গীর আলম ও তার সহযোগীরা। পরে রাতভর গণর্ধষণের পর বৃহস্পতিবার ভোর রাত ৪টার দিকে বোনের বাড়ি দক্ষিণ সুরমার তেতলি এলাকার চেরাগী গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেয় তারা। রাগে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে। নিহত পপি বেগম সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের লালটেক গ্রামের শুকুর আলীর ৩য় মেয়ে।
   
সরেজমিন লালটেক গ্রামে পপিদের বাড়িতে গিয়ে জানা গেছে, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলি এলাকার চেরাগী গ্রামের ফয়জুল ইসলামের সঙ্গে পপির বড়বোন হেপি বেগমের বিয়ে হয়। সপ্তাহ খানেক আগে ১৬ মাস বয়সী মেয়ে মারিয়া ও তার স্বামী ফয়জুল ইসলামকে নিয়ে হেপি বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। এরপর মেয়ে মারিয়ার জ্বর হলে ছোটবোন পপি বেগমকে সঙ্গে নিয়ে তেতলীর চেরাগী গ্রামে স্বামীর বাড়ি চলে যান হেপি। এর ৪/৫দিন পর গত ৯ অক্টোবর বুধবার রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বোনের বসত ঘর থেকে বের হন পপি বেগম। এসময় আগে থেকে উৎপেতে থাকা ওই গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৩) তার সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে পপিকে উঠিয়ে নিয়ে যান এবং রাতভর ধর্ষণ করেন। ৫ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আবার তার বোনের বাড়িতে তাকে রেখে যান জাহাঙ্গীর। সকালে বোনজামাই ফয়জুলকে সঙ্গে নিয়ে তাড়াহুড়ো করে বাড়ি ফিরেন পপি। এর কিছুক্ষণ পরই তিনি আত্মহত্যা করেন।

পপির বাবা শুকুর আলী বলেন, তার মেয়ের বাড়ি তেতলি থেকে সকালে বাড়ি ফিরে বিকেলে পপি কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা তিনি জানেন না। এখন তার স্ত্রী তাকে বলেছেন তার মেয়ে ব্যাগে লিখে গেছে কে তার সঙ্গে কি করেছে।

পপির মা জ্যোৎস্না বেগম তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে বলেন, রোববার সকালে মেয়ের ব্যাগ হাতে নিয়ে দেখছিলাম। ব্যাগের চেইন খোলে দেখি পপির লেখা চিটি। ওই চিটিতে পপি লিখে গেছেন কি কারণে আত্মহত্যা করেছেন এবং কারা কারা তার সঙ্গে বর্বরতা করেছে।

বিশ্বনাথ থানার এসআই অরুপ সাগর চৌধুরী এ বলেন, ময়না তদেন্তর রিপোর্ট ছাড়া এই মুহুর্তে সঠিকভাবে কোনকিছু বলা যাচ্ছে না।

থানার ওসি শামীম মুসা বলেন, চিরকুটটি রোববার সন্ধ্যায় থানায় গিয়ে তার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন পপির বাবা-মা। এ বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবির্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.