Sylhet Today 24 PRINT

সিলেটে ডিজেল সংকট, বিক্ষোভে পরিবহন শ্রমিকরা

দেবকল্যাণ ধর বাপন |  ১৭ নভেম্বর, ২০১৯

সিলেটে আকস্মিকভাবে দেখা দিয়েছে ডিজেল সংকট। মূলত তেলবাহী ওয়াগন না আসায় সিলেটে এ ডিজেল সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে সিলেটে জ্বালানি তেলের এ সংকট দেখা দেয়ায় বিপাকে পড়েছে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা। ইতোমধ্যে বিপাকে পড়া পরিবহন শ্রমিকরা বিক্ষোভ করতে শুরু করেছেন।

জ্বালানি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা, পদ্মা ও মেঘনার সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, সিলেটে সাতদিন ধরে কোনো তেলবাহী ওয়াগন না আসায় ডিজেলের সংকট দেখা দিয়েছে। ডিপোতে যে পরিমাণ ডিজেল রয়েছে, তা দিয়ে আরও এক-দুদিনের যোগান দেয়া যাবে। এরই মধ্যে ওয়াগন না এলে ডিজেলের সংকট প্রকট আকার ধারণ করবে।

এদিকে সিলেট পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল বলেন, ‘গত ৯ নভেম্বর সর্বশেষ তেলবাহী ওয়াগন সিলেট এলেও  ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবা ও সিরাজগঞ্জে ট্রেন দুর্ঘটনার অজুহাতে আর কোন ওয়াগন সিলেটে এসে পৌঁছেনি।’

‘সিলেটে ডিজেল সরবরাহ ওয়াগন নির্ভর হওয়ায় প্রায়ই এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়’ বলেও জানান তিনি। ‘সিলেটে ডিজেল সরবরাহ ওয়াগন নির্ভর না রেখে বহুমাত্রিক করা উচিত’ বলে দাবি জানান তিনি।

এ সংকট নিরসনে চাহিদা মাফিক একাধিক ডিজেলবাহী ওয়াগন সরবরাহ এবং বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বনের দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জানা যায়, ইঞ্জিন সংকটের কারণে একটি ওয়াগন আখাউড়া স্টেশনে আটকা পড়ে আছে।  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় দুর্ঘটনাকবলিত একটি ট্রেনে ওয়াগনের ইঞ্জিন যুক্ত করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে সাধারণ মানুষ মনে করছেন ২/১ দিনের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে ডিজেলের এ সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করার পাশাপাশি সামনের বোরো আবাদও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। একইসাথে সেচ মৌসুমে এই জ্বালানি তেলের সংকট দুর করতে না পারলে বোরো চাষে ব্যাপক প্রভাব পড়বে।

তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন জ্বালানি তেল বিপণন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানির পক্ষ থেকে সংকট নিরসনের প্রচেষ্টা চলছে।

যমুনা ওয়েল কোম্পানি সিলেটের মার্কেটিং ম্যানেজার মো. আব্দুল বাকী জানান, রেলওয়ের সংকটের কারণে সিলেটে ডিজেল সংকট দেখা দিয়েছে। সিলেটে ডিজেল সরবরাহ ট্রেন নির্ভর না রেখে বহুমাত্রিক করতে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

পদ্মা ওয়েল কোম্পানির সিলেটের ডিপো ইনচার্জ মো. সোহেল ইদ্রিস জানান, ‘সিলেট অঞ্চলে প্রতি মাসে ৪৫ থেকে ৫০ লক্ষ লিটার ডিজেলের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আমাদের চাহিদা অনুযায়ী না হলেও আগে প্রতি মাসে রেলওয়ের ওয়াগন দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ লিটার ডিজেল সরবরাহ করা হতো। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে কোনো ওয়াগনই আসছে না সিলেটে। ফলে পদ্মা, মেঘনা এবং যমুনা অয়েল কোম্পানির ডিপোগুলো প্রায় তেল শূন্য হয়ে পড়েছে।’

এমন চলতে থাকলে দুই-এক দিনের মধ্যেই সিলেটের অনেক পাম্পে ডিজেল বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করেছেন পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।

এ ব্যাপারে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক হুমায়ুন আহমেদ বলেন, বিপণনকারী কোম্পানি যমুনা,পদ্মা ও মেঘনায় বারবার যোগাযোগ করেও জ্বালানি তেল পাচ্ছেন না পেট্রোল পাম্প মালিকরা।

এদিকে তেল সরবরাহ বন্ধ থাকায় অনেকটাই বেকার হয়ে পরেছেন টেংক লরির চালক ও শ্রমিকরা। রোববার দুপুরে সিলেট শহরের বাবনা পয়েন্ট এলাকায় বিক্ষোভ করে দ্রুত সমাধান দাবি করেছে শ্রমিকরা। এসময় তারা দায়ী করছেন রেল কর্তৃপক্ষ ও বিপণনকারী কোম্পানির কর্মকর্তাদের উদাসীনতাকে।

এ বিষয়ে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আতাউর রহমান জানান, রেলের ইঞ্জিন সংকটের কারণে নিয়মিত তেলবাহী ওয়াগন সিলেট আসছে না, তাই এ সংকট হয়েছে। তবে শিগগির এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া  চট্টগ্রাম থেকে তেলবাহী ওয়াগন এলেই তা দ্রুত সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.