Sylhet Today 24 PRINT

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সিলেটে ড্যাব’র সংবাদ সম্মেলন

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৮ নভেম্বর, ২০১৯

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাতে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) সিলেট জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এসময় সিলেট জেলা ড্যাবের পক্ষ থেকে অবিলম্বে তার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবি জানানো হয়।  

সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ একটি অভিজাত হোটেলে সিলেট জেলা ড্যাব এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেট জেলা ড্যাব’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে ড্যাব’র সভাপতি বলেছেন, কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তার প্রাপ্য চিকিৎসা অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মারাত্মকভাবে অসুস্থ নেত্রীর অনতিবিলম্বে আরও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু বারবার দাবি সত্ত্বেও সেটি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। জামিনযোগ্য মামলাতেও তার কারামুক্তি হচ্ছে না। আর এটি সরকারের ইন্ধনেই ঘটছে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ইদানীং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। গত অক্টোবর মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তারা অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক ও পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা মনে করি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার অপপ্রয়াসে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে অসত্য তথ্য পরিবেশন করা হচ্ছে। যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। ড্যাব সিলেট এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতা ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মেডিকেল সায়েন্সের বিভিন্ন বিষয়াদি তুলে ধরে সিলেট ড্যাব’র পক্ষে জানানো হয়, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা খুবই সঙ্কটাপন্ন। অবিলম্বে তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা না হলে তার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। তার শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাত এবং পায়ের ছোট ছোট জয়েন্টগুলোসহ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট ফুলে গেছে এবং তাতে তীব্র ব্যথা অনুভূত হচ্ছে। যার কারণে জয়েন্টগুলি শক্ত এবং বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। যেটি অচিরেই স্থায়ীরূপ নিতে পারে। যার কারণে খালেদা জিয়া বর্তমানে অন্যের সাহায্য ছাড়া চলাফেরা, ওঠাবসা এমনকি নিজ হাতে খাবার পর্যন্তও খেতে পারছেন না।

লিখিত বক্তব্যে ড্যাব নেতা অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, বাস্তবিক অর্থে খালেদা জিয়া ধীরে ধীরে পঙ্গুত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের দাবি- ‘খালেদা জিয়া চিকিৎসায় সহযোগিতা করছেন না।’ এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি। আমাদের জানামতে বেগম খালেদা জিয়া সবসময়ই চিকিৎসকদের সহযোগিতা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে নিজ পায়ে হেটে জেলখানায় প্রবেশ করেন। নিজে হেটে দোতলায় তার নির্ধারিত কক্ষে যান। এমনকি জেলখানা থেকে মেডিকেলে আসার সময় গাড়ি থেকে নেমে নিজে হেটে হেটে লিফট পর্যন্ত গিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি আগের অবস্থায় নেই। এতেই প্রমাণিত হয় তিনি বিএসএমএমইউ’তে সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না। বিএসএমএমইউ পরিচালকের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি তিনি তার মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করুন। খালেদা জিয়ার প্রকৃত অবস্থা জাতির সামনে তুলে ধরুন। আমরা মনে করি তার জামিন বাঁধাগ্রস্ত করা এবং সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে সত্য গোপন করা হচ্ছে। প্রকৃত সত্যকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যদি তিনি সুস্থই হয়ে থাকে তবে- ড্যাব কর্তৃক মনোনীত চিকিৎসকগণকে খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে দেওয়া হোক।

ড্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপার্সনের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার তথ্যানুযায়ী দেখছি যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘স্বাস্থ্য বিষয়ক সংজ্ঞা’য় তিনটি উপাদান থাকার কথা; তার কোনোটিই বর্তমান শারীরিক অবস্থায় সন্তোষজনক নেই, তাই তিনি ভীষণ অসুস্থ। যথাযথ চিকিৎসা না পেলে তার শারীরিক স্থায়ী পঙ্গুত্ব এবং ডায়াবেটিস ও হৃদরোগজনিত বড় ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হবে। আমরা বলতে চাই, এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সম্পূর্ণ দায় বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকবৃন্দ এবং সরকারকেই নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সূচনা বক্তব্য রাখেন ড্যাব সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. শাকিলুর রহমান। অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি তৈয়মুর আলম খন্দকার, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ নাফি, যুগ্ম সম্পাদক ফাহমিদুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক রুসলান ইসলাম, প্রচার সম্পাদক সাউদ আল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক সৈয়দ হাফিজুর রহমান, সহ-দপ্তর সম্পাদক আফজাল হোসেন। সদস্যবৃন্দের মধ্যে ছিলেন মেহেদী হাসান অনিক, রায়হানুল ইসলাম তুহিন, ওমর শরীফ তুহিন, আমিনুর রহমান ইমন, শাহেদুল ইসলাম, আব্দুর রউফ প্রমুখ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.