Sylhet Today 24 PRINT

আত্মগোপনে গিয়ে অপহরণের নাটক!

চট্টগ্রাম থেকে বড়লেখার সাফোয়ানকে উদ্ধার

বড়লেখা প্রতিনিধি |  ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৯

ব্যক্তিগত একটি সম্পর্কের টানাপোড়ন ও ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েছিলো মোহাম্মদ সাফোয়ান (১৫)। এরপর গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) আত্মগোপন করে সে। আত্মগোপনের পর অপহরণের নাটক সাজায় সাফোয়ান।

আত্মগোপনের পর দিন বড় ভাইয়ের মুঠোফোনে নিজেই অপহরণকারী সেজে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠায়। পরিবারের দৃষ্টি অন্যদিকে নিতে ক্ষুদে বার্তায় বিষয়টি থানা পুলিশকেও না জানাতে বলে।

এই ক্ষুদে বার্তার সূত্র ধরে বড়লেখা থানা পুলিশ আত্মগোপনের চার দিন পর তাকে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করে। এরপর ফাঁস হয় সাফোয়ানের সমস্ত সাজানো নাটক। পুলিশ মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) তাকে বড়লেখার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হরিদাস কুমারের আদালতে সোপর্দ করে। এরপর সে আদালতের কাছে ব্যক্তিগত একটি সম্পর্কের টানাপোড়নসহ নানা কারণে আত্মগোপনে যাওয়ার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পর আদালতের মাধ্যমে সাফোয়ানকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়।

মোহাম্মদ সাফোয়ান মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউপির সফরপুর গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। সে পিসি সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। বড়লেখা পৌরসভার বারইগ্রামে এলাকায় পরিবারের সাথে ভাড়া বাসায় সে থাকত।

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চাল কেনার জন্য বড়লেখা বাজারের উদ্দেশ্যে সে বাসা থেকে বের হয়। এরপর আর বাসায় ফেরেনি। অনেক রাত পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে তার খোঁজ করেন। না পেয়ে ওই রাতেই (বৃহস্পতিবার) তার বড় ভাই মোহাম্মদ সালমান বড়লেখা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর পুলিশ তার অনুসন্ধানে নামে। পরদিন বড় ভাই সালমানের মুঠোফোনে নিজেই (সাফোয়ান) অপহরণকারী সেজে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠায়। উপ পরিদর্শক (এসআই) মিন্টু চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ক্ষুদে বার্তার সূত্র ধরেই প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে অভিযান চালায়। এরপর রবিবার দিবাগত রাতে চট্টগ্রামে তাকে পাওয়া যায়। সোমবার (২ ডিসেম্বর) তাকে বড়লেখায় নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) তাকে বড়লেখার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হরিদাস কুমারের আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, তার ব্যক্তিগত ১৫ হাজার টাকা ঋণ আছে। সেই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে মায়ের কাছে টাকা চেয়েছে। মা বকাঝকা করেন। এছাড়া ব্যক্তিগত আরেকটি কারণে সে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। প্রথমে ঢাকা এবং পরে চট্টগ্রাম গিয়েছিল। তদন্ত কর্মকর্তা প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে ঢাকায় অভিযান করেন। এরপরে চট্টগ্রামে তার অবস্থান শনাক্ত করেন। পরে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়।

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বলেন, ‘তাকে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সে একেক সময় একেক রকম কথা বলেছে। পরে প্রকৃত ঘটনা খুলে বলে। মূলত ব্যক্তিগত ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে এবং ব্যক্তিগত অন্য একটি সম্পর্কের টানাপোড়নের কারণে বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। এ বিষয়ে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.