Sylhet Today 24 PRINT

ভূগর্ভস্থ হলো বিদ্যুৎ লাইন, সরিয়ে ফেলা হচ্ছে তারের জঞ্জাল

সিলেট নগরী

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ০৫ জানুয়ারী, ২০২০

তারের জঞ্জাল কমিয়ে নগরীকে একটি স্মার্ট ডিজিটাল সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে একধাপ এগিয়ে গেলো সিলেট সিটি করপোরেশন। চালু হলো ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতের লাইন। সিলেট সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের হযরত শাহজালাল (রা.) মাজার এলাকায় পূর্ণাঙ্গ ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইনের সরবরাহ শুরু হয়। সেই সাথে এই এলাকার বিদ্যুতের খুটিসহ অন্যান্য সার্ভিস লাইনের তারও অপসারণ করা হয়। ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন চালুর মাধম্যেই সিলেট নগরী থেকে তারের জঞ্জাল সরার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

রোববার (৫ জানুয়ারি) সকালে পূর্নাঙ্গ সরবরাহ ও বিদ্যুতের খুটি অপসারণের কাজ পরিদর্শন করেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিসিকের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা ও শাহজালাল দরগাহ এলাকার ব্যবসায়ীবৃন্দ।

সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, হযরত শাহজালাল (রা.) মাজার এলাকা থেকে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের সফল সরবরাহ চালু হয়েছে। উন্নত রাষ্ট্রের আদলে দেশের প্রথম ভূ গর্ভে বিদ্যুৎ লাইন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তুলে নেয়া হচ্ছে রাস্তার দুপাশের বিদ্যুতের খুঁটি ও অন্যান্য সার্ভিসেস লাইনের তার। ফলে তারের জঞ্জাল থেকে মুক্ত হয়েছে শাহজালাল মাজার এলাকা। বেড়েছে এই এলাকার সৌন্দর্য।

মেয়র বলেন, গত ১৫-২০ দিন ধরে পরীক্ষামূলক সরবরাহ পর্যবেক্ষণের পর আজ থেকে পূর্ণ সরবরাহ চালু করা হয়েছে। শাহজালাল মাজার এলাকা থেকে কোর্ট পয়েন্ট পর্যন্ত পাইলট প্রকল্পে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতের লাইন চালু করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সব এলাকায় বাস্তবায়ন করা হবে এই সুবিধা।  

মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, এখন থেকে কোন ব্যক্তি বা সার্ভিসেস প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ বিভাগ ও সিটি করপোরেশনকে অবিহিত না করে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন গিয়েছে এমন রাস্তা খুঁড়াখুঁড়ি করতে পারবেন না। যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখা যায় তার জন্য সকলের সহযোগিতা চান সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

সিলেট সিটি করপোরেশনের এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদি বলেন, সিলেট নগরীকে ডিজিটাল নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সিসিক এক ধাপ এগিয়ে গেল। ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিলো। প্রকল্পটি এই ওয়ার্ড থেকে শুরু করায় সিসিক কর্তৃপক্ষ তথা সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব বলেন, দেশের প্রথম এই প্রকল্প সিলেটে বাস্তবায়ন করায় আমরা খুশি। দ্রুততম সময়ে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতায়ন চালু করায় সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশন, বিদ্যুৎ বিভাগ তথা সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি।

তিনি বলেন, শাহজালাল মাজার এলাকা সব সময় পর্যটক, ভক্ত-আশেকানদের পদচারণায় মুখর থাকে। ভূ গর্ভে বিদ্যুৎ লাইন চলে যাওয়ায় শাহজালাল (রা.)মাজার এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বিদ্যুৎ লাইনসহ অন্যান্য সার্ভিস লাইনের তারের জঞ্জাল মুক্ত হয়েছে।

সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. নূর আজিজুর রহমান বলেন, ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন চালু করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। যা অত্যন্ত সফলতার সাথে বিদ্যুৎ বিভাগ, সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় সম্পন্ন করতে পেরেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন করতে বিদ্যুৎ বিভাগকে সার্বক্ষণিক নজরদারী রাখতে হবে। এর জন্য সিলেট সিটি করপোরেশন সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ও সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পাইলট প্রকল্পে নগরীতে ১১ কেভি ২৫ কিলোমিটার, শূন্য দশমিক ৪ কেভি ১৮ কিলোমিটার ও ৩৩ কেভি ২ সার্কিট কিলোমিটার ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হবে। নগরীর ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকার বিদ্যুৎ সাব স্টেশন কেন্দ্র থেকে ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন আম্বরখানা হয়ে যাবে চৌহাট্টায়। চৌহাট্টা থেকে একটি লাইন যাবে নগরীর জিন্দাবাজার-কোর্ট পয়েন্টে হয়ে সিলেট সার্কিট হাউজ পর্যন্ত। আরেকটি লাইন চৌহাট্টা থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত যাবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.