Sylhet Today 24 PRINT

সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ বন্ধ, ফের আবর্জনার ভাগাড় ধোপাদিঘী

শাকিলা ববি |  ২৩ জানুয়ারী, ২০২০

দখল দূষণে মৃতপ্রায় ধোপাদিঘীকে নান্দনিক রূপ দিতে সৌন্দর্যবর্ধনের উদ্যোগ নিয়েছিলো সিলেট সিটি করপোরেশন। এজন্য ভারতীয় সরকারের অনুদানে 'ধোপাদিঘী এরিয়া ফর ব্যটার ইনভারমেন্ট এন্ড বিউটিফিকেশন' নামে একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ২১ কোটি ৮৫ লক্ষ ৬০ হাজার ৫শ টাকা।

তবে অর্থ ও সীমানা সংক্রান্ত জটিলাতায় আটকে আছে এই প্রকল্পের কাজ।

জানা যায়, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে সিলেট সিটি করপোরেশন। সৌন্দর্যবর্ধনের লক্ষ্য উচ্ছেদ করা হয় দিঘী ভরাট করে নির্মিত বেশ কিছু স্থাপনা। দিঘীর জমি উদ্ধারের পর গার্ডওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করে সিলেট সিটি করপোরেশন। এরপরই আটকে যায় প্রকল্পের কাজ। ফলে আবারও আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে ধোপাদিঘী। আগের মতোই পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে দিঘীটি। রাতদিন সিটি করপোরেশনের আবর্জনাবাহী ট্রাকও রাখা হয় এই দিঘীর পাশে।

জানা যায়, সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরুর পর এতে আপত্তি জানায় কারা কর্তৃপক্ষ। কারা কর্তপক্ষের সাথে দিঘীর সীমানা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এছাড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে অর্থ চাড়েও জটিলতা দেখা দেয়। ফলে আটকে আছে দিঘীর কাজ।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে দিঘীর চারদিকে ওয়াকওয়ে নির্মাণ, বসার জন্য বেঞ্চ, শিশুদের জন্য রাইড, দিঘীতে নামার জন্য দুটি দৃষ্টিনন্দন ঘাট নির্মাণ করা হবে। এছাড়া দিঘীর নোংরা পানিকে পরিষ্কার করা হবে এবং সেই সাথে পুকুরের মধ্যে ঘোরার জন্য থাকবে প্যাডেল বোট, দিঘীর চারপাশে লাগানো হবে সবুজ গাছ, মধ্যখানে থাকবে নৌকার আদলে ভাসমান রেস্তোরা।

২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা থেকে এই প্রকল্পের পরিকল্পনা ও নকশা উন্মোচন করা হয়। প্রকল্পের নকশা উন্মোচনের পরপরই দেখা দেয় বিপত্তি। দিঘীর মাঝখানে রেস্তোরাসহ স্থাপনা নির্মাণের বিরোধীতা করেন পরিবেশবাদীরা।  

তখন সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দিঘীতে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা হবে না বলে জানানো হয়। সিটি কর্মকর্তারা তখন জানিয়েছিলেন, ‘বর্তমানে দিঘীটির মধ্যে পানির চারিধার আছে ৩.৪১ একর। দীঘির দখলকৃত জায়গা উদ্ধারের পর প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দিঘীর পানির চারিধার বৃদ্ধি পেয়ে কমপক্ষে ৩.৭৫ একরে উন্নীত হবে।’

সরজমিনে দেখা যায়, দিঘির একাংশে সিসিকের আবর্জনাবাহী ট্রাক রাখা রয়েছে। আর বাকি অংশে ময়লা, ঘাস ও কচুরিপানায় ভরাট। আবারও আশেপাশের দোকানপাট গড়ে তোলে দিঘির জায়গা অবৈধভাবে দখল হচ্ছে। দিঘীর একপাশে সিটি করপোরেশনও বহুতল মার্কেট নির্মাণের জন্য সাইনবোর্ড টানিয়েছে। তবে বিপুল অর্থ ব্যয়ে দিঘীর সৌন্দর্যবর্ধণ উন্নয়নের কথা বললেও এখনও আগের মত পরিত্যক্ত রয়েছে ধোপাদিঘী।

সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, 'ধোপাদিঘী এরিয়া ফর ব্যটার ইনভারমেন্ট এন্ড বিউটিফিকেশন' নামে এই প্রকল্পে মোট ২১ কোটি ৮৫ লক্ষ ৬০ হাজার ৫শ টাকা ব্যয় হবে। গত বছর ধোপাদিঘীর চারপাশে হাঁটার পথ (ওয়াকওয়ে) নির্মাণ করার জন্য কাজ শুরু হয়েছিল। দিঘীর মাঝখানে বহুতল রেস্টুরেন্ট নির্মাণের জন্যও কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে এই প্রকল্পের জন্য ব্যয়কৃত অর্থ পেতে দেরি হওয়ায় উন্নয়ন কাজ থেমে যায় ধোপাদিঘীর। এছাড়াও কারা কর্তৃপক্ষের সাথে সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা ও রয়েছে।

তবে সব সমস্যা সমাধান করে শীঘ্রই ধোপদিঘীর কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন, প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যায়ে ধোপদিঘীর সৌন্দর্যবর্ধণের জন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে প্রকল্পের টাকা পেতে কিছুটা জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। একারণে ধোপাদিঘীর সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ বন্ধ আছে। এছাড়া কারা কর্তৃপক্ষের সাথে সীমানা সংক্রান্ত জটিলতাও রয়েছে। সব মিলিয়ে কাজ শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে শীঘ্রই দিঘীর সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.