Sylhet Today 24 PRINT

ক্যান্সারে আক্রান্ত শাহনাজের বাঁচার আকুতি

কুলাউড়া প্রতিনিধি |  ০৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

দুরারোগ্য ব্যাধি জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত শাহনাজ বেগম এখনো জীবনযুদ্ধে বেঁচে থাকার লড়াই করে যাচ্ছেন। তবে আর্থিক টানাপোড়নের মধ্যেও ঋণ করে চিকিৎসা করে সর্বস্ব হারিয়েছেন তিনি। কিন্তু জটিলতা কাটেনি এখনো। দারিদ্রতার কষাঘাতে আটকে গেছে চিকিৎসা। তিনিও চান সাধারণ মায়েদের মতো নিজের সন্তানদের নিয়ে বেঁচে থাকতে।

এর জন্য তিনি সমাজের বিত্তবানদের প্রতি মানবিক আকুতি জানিয়েছেন। তিনি ঝিয়ের কাজ করতেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে।

শাহনাজ বেগম (৩৮) তিন সন্তান নিয়ে কুলাউড়ার রেলওয়ে কলোনির পরীনগরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অভাব অনটনের সংসারে ছেলেকে অল্প বয়সে পাঠিয়েছেন ঢাকার একটি রেস্তোরাঁয় চাকরি করতে। মাস শেষে ছেলে যে টাকা পায় তা দিয়ে চলতো না তাদের সংসার। নিজে কুলাউড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসে করতেন ঝিয়ের কাজ। অফিসে কর্মরত স্টাফরা তাদের সামর্থ্যানুযায়ী সহযোগিতা করতেন। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বিছানায় কাতরাতে থাকেন তিনি।

চিকিৎসকের পরামর্শে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে জানতে পারেন তিনি জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে গ্রহণ করেছেন একটি কেমোথেরাপি। সেই খরচ সামলাতেও ঋণ করতে হয়েছে তাকে।

শাহনাজের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২ বছর পূর্বে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ডিভোর্সের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। এরপর থেকেই দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে সংসার চালাচ্ছেন শাহনাজ। নিজের অসহায়ত্ব ও অভাবের সংসার নিয়ে যখন হতাশার ধোঁয়াশা নিয়ে চলছিল দিনাতিপাত ঠিক এমন সময় জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় তাঁর জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্বিষহ।

কুলাউড়ার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তিনি সিলেটের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে চিকিৎসার কোনো উন্নতি না হওয়ায় ডাক্তার ইশরাত জাহানের পরামর্শে ঢাকার প্যানপ্যাসিফিক মেডিক্যালের গাইনী বিশেষজ্ঞ সারিয়া তাসনিমের কাছে যান। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে জরায়ু ক্যান্সার সম্ভাবনা দেখে ৫ জানুয়ারি রেফার্ড করা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের রেডিওথেরাপি বিভাগের প্রধান ও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জরায়ু ক্যান্সারের বিষয়টি নিশ্চিত হোন। পরে কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, সার্জারি দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। ইতিমধ্যে একটি কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছে। আরও ৬টিরও বেশি কেমোথেরাপি দেওয়া লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। একেকটি কেমোথেরাপিতে খরচ হয় সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার টাকা।

শাহনাজ বেগম জানালেন, ‘এমনিতেই খুব সংগ্রাম করে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে সংসার চালাচ্ছি। দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে চলছে মানবেতর সংসার। বাচ্চাদের অভিভাবক আমি ছাড়া কেউ নেই। আমার যদি কিছু হয়ে যায় তবে আমার বাচ্চাদের অনাগত দিনগুলো অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। অন্তত বাচ্চাদের জন্য হলেও আমি বাঁচতে চাই। কিন্তু এতো ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানো আমার পক্ষে সম্ভবপর নয়। আমার সন্তানদের জন্য আমাকে আরও কিছুটা দিন এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের কাছে মানবিক সাহায্য প্রার্থনা করছি।

উল্লেখ্য, জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত শাহনাজ বেগমকে কোনো সুহৃদয়বান ব্যক্তি সাহায্য করতে চাইলে যোগাযোগ ও (ব্যক্তিগত) বিকাশ করতে পারেন এই (০১৭৫৬-৩৬৩৯৭২) নম্বরে। এবং সোনালী ব্যাংকের মৌলভীবাজারের কুলাউড়া শাখায় শাহনাজ বেগম নামে একটি সঞ্চয়ী হিসাব (নং- ৫৮১০৭০১০২১২৬৬), এই একাউন্টে টাকা জমা করতে পারেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.