Sylhet Today 24 PRINT

১০ সপ্তাহ ধরে মজুরি পাচ্ছেন না কালিটি বাগানের শ্রমিকরা

এস আলম সুমন, কুলাউড়া |  ০২ এপ্রিল, ২০২০

পুরনো ছবি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে অবস্থিত কালিটি চা-বাগানের শ্রমিকদের মজুরি ১০ সপ্তাহ ধরে বন্ধ। এতে শ্রমিকেরা পরিবারকে নিয়ে চরম দুর্ভোগে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। মজুরি না পেয়েও নিয়মিত কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে চা শ্রমিকদের।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কালিটি বাগানটিতে মোট ৫৩৬ জন শ্রমিক আছেন। প্রত্যেক শ্রমিক দৈনিক ১০২ টাকা করে মজুরি পান। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার তা পরিশোধের কথা। কিন্তু কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ১০ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকেরা মজুরি পাচ্ছেন না। এছাড়াও বাগানের শ্রমিক সরদারদের নয় মাসের বেতন আটকা পড়ে আছে।

বাগান শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির সম্পাদক উত্তম কালোয়ার বলেন, ‘শ্রমিকেরা এমনিতেই সামান্য মজুরি পান। এরপর ১০ সপ্তাহ থেকে কেউ সেই মজুরি পাচ্ছেন না। কাজ করেও মজুরি মিলছে না। ঘরে চাল-ডাল নেই। উপোষ দিন কাটাতে হচ্ছে। বাগান কর্তৃপক্ষ আজ দিচ্ছি, কাল দিচ্ছি বলে সময়ক্ষেপণ করছে।’

উত্তম কালোয়ার অভিযোগ করেন, বাগানে দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যা। শ্রমিকদের আগের মজুরিরও বেশ কিছু টাকা বকেয়া পড়ে আছে। অনেক শ্রমিক জরাজীর্ণ কাঁচাঘরে বাস করছেন। এসব ঘর মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অবসরে যাওয়া শ্রমিকেরা তহবিলের টাকা পাচ্ছেন না। অথচ প্রত্যেক শ্রমিকের মজুরি থেকে সাত শতাংশ করে ভবিষ্যৎ তহবিলের টাকা কেটে রাখা হয়। এর সঙ্গে মালিকপক্ষ আরও সাত শতাংশ যোগ করে মোট ১৫ শতাংশ টাকা শ্রম অধিদপ্তরে জমা দেওয়া কথা। বাগান কর্তৃপক্ষ তা-ও করছে না। বাগানে চিকিৎসক নেই। শ্রমিকেরা বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করালে বাগান কর্তৃপক্ষ বিলের টাকা দেয় না। বাগানে বিরাজমান এসব সমস্যার কথা তুলে ধরে এর প্রতিকার চেয়ে ৫ জানুয়ারি তারা শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

মজুরি বন্ধের বিষয়ে কালিটি বাগানের ব্যবস্থাপক প্রণব কান্তি দেব জানান, কোম্পানির কাছ থেকে যথাসময়ে টাকা না পাওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ৬ এপ্রিল শ্রমিকদের একসঙ্গে পাঁচ সপ্তাহের মজুরি দেওয়া হবে। এ ছাড়া অন্যান্য সমস্যারও পর্যায়ক্রমে সমাধান হবে।

তিনি বলেন, তিনিসহ বাগানের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নয় মাসের বেতন বন্ধ আছে।

শ্রম অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কালিটি বাগানের অবস্থা খুবই খারাপ। বাগানের শ্রমিকদের প্রভিডেন্ড ফান্ডের অন্তত ৫০ লাখ টাকা এখনো জমা হয়নি। শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি দ্রুত পরিশোধ ও প্রভিডেন্ড ফান্ডের টাকা জমা দেওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাগানের ব্যবস্থাপককে একাধিকবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এখনো মজুরি পরিশোধ না করা হলে তা দুঃখজনক। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.