Sylhet Today 24 PRINT

বান্দরবানের নতুন শোভা ‘গোল্ডেন বৌদ্ধ বিহার’

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০২ মে, ২০২২

গোল্ডেন টেম্পল বৌদ্ধবিহার। স্বর্ণাভাব আকর্ষণীয় এই মন্দিরটি এখন শোভা বাড়িয়ে তুলেছে পুরো বান্দরবানের। অপরূপ কারুকার্যমন্ডিত অনন্য স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন এই মন্দিরটিতে রয়েছে পদ্ম ফুলের উপর দণ্ডায়মান দেশের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধমূর্তি। এটি উচ্চতায় ৫৫ ফুট। সেইসাথে এখানে রয়েছে বড় বিহার, ড্রাগন, সিংহ ও হাতির মূর্তি। বিহার টিতে কিছুদিনের মধ্যে বসানো হবে ৬ ও ৪ ফুট উচ্চতার ৩টি পিতলের বৌদ্ধমূর্তি।

শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে বান্দারবান কেরানিরহাট সড়ক সংলগ্ন যৌথ খামার ও কানা পাড়ার মাঝামাঝি পাহাড়ের উপর নির্মিত স্বর্ণাভাব দণ্ডায়মান মূর্তিটি পুরো এলাকাকে সৌন্দর্যমন্ডিত করে তুলেছে। সেইসাথে বৌদ্ধ বিহারটিকে দিয়েছে এক অনন্য রূপ।

বান্দরবান সংসদীয় আসন থেকে ছয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং তার নিচ জায়গায় এই বৌদ্ধ বিহারটি নির্মাণ করেছেন। বৌদ্ধ বিহারটি এখন শুধু বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কাছেই নয় এটি এখন পর্যটকদের কাছেও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২ শ ফুট উচ্চতায় এই বৌদ্ধ বিহারটি নির্মাণ করতে ৩ বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। এই বিহারটির নাম গোল্ডেন টেম্পল বৌদ্ধবিহার হলেও স্থানীয় মারমা ভাষায় এটি “শৈ ফারা ক‍্যং” নামে পরিচিত।

দেশের বহু সংখ্যক বৌদ্ধ মূর্তি ও বিহারের নির্মাতা পটুয়াখালীর খিং মং রাখাইন ও চকরিয়ার হারবাং এলাকার মংহ্লা রাখাইন ও তার ভাই হ্লামং রাখাইন মিলে বৌদ্ধ বিহারটির মূর্তি ও স্থাপনাগুলো নির্মাণ করেছেন। এরা পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমারের আরাকান প্রদেশ থেকে নির্মাণশৈলীর ওপর কাজ শিখেছেন বহু আগে। এর আদলেই এদেশে বহুসংখ্যক বৌদ্ধবিহার ও মূর্তি নির্মাণ করেছেন তারা।

মংহ্লা রাখাইন জানান উখিয়ায় শুয়া অবস্থায় যে বৌদ্ধমূর্তি রয়েছে তার দৈর্ঘ্য ১২৫ ফুট অন্যদিকে পটিয়ায় বৌদ্ধমূর্তিটি শুয়া অবস্থায় প্রায় ১০০ ফুট। এছাড়া পদ্মাসনে বসা বান্দরবানের তাইংখালিতে যে মূর্তিটি রয়েছে তার উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট। এছাড়া খাগড়াছড়িতে যে মূর্তিটি রয়েছে সেটি বৌদ্ধ মন্দিরের ওপর বসানো। এটিও প্রায় ৫৫ ফুট।

অন্যদিকে বান্দরবানের গোল্ডেন টেম্পল বৌদ্ধ বিহারে যে মূর্তিটি বানানো হয়েছে তা মাটি থেকে উচ্চতা ৫৫ ফুট। পদ্ম ফুলের উপর দণ্ডায়মান হিসেবে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মূর্তি। আর এই মূর্তিটিকে ঘিরে বৌদ্ধবিহার এবং অন্যান্য স্থাপনাগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পাঁচশটির বেশি বৌদ্ধ মূর্তি বানানো এই মংহ্লা রাখাইন বললেন তার বানানো সবচেয়ে সুন্দর মন্দির গুলোর মধ্যে অন্যতম এই গোল্ডেন টেম্পল বৌদ্ধবিহার। এটি শুধু পুণ্য লাভের স্থানই হবে না সেই সাথে পর্যটকদের কাছেও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

বৌদ্ধ বিহারটির সম্পর্কে বলতে গিয়ে পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি জানিয়েছেন তার বাবা লাল মোহন বাহাদুরের মৃত্যুর পর ওই এলাকায় একটি জাদি নির্মাণের স্বপ্ন ছিল। জায়গা কিছু কম থাকায় পরে আরও কিছু জায়গা কিনে সেখানে জাদি নির্মাণের সময় একটি বড় বৌদ্ধ মূর্তি নির্মাণ করার ইচ্ছা জাগে। আর বৌদ্ধমূর্তিটি নির্মাণ করতে গিয়ে বিহারের প্রসঙ্গও উঠে আসে। এখন এটি একটি পরিপূর্ণ বৌদ্ধবিহার। একদিকে পূণ্য লাভ অন্যদিকে বান্দরবানের সৌন্দর্যকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে স্বপ্ন থেকে এই বাস্তবায়ন বলে বীরবাহাদুর জানিয়েছেন।

এদিকে এবারের ঈদের টানা ছুটি রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় এবার বিপুল সংখ্যক পর্যটকের ঢল নামবে বান্দরবানে। আর পর্যটকদের কাছে এবার বান্দরবানের নতুন আকর্ষণই হল স্বর্ণীল আভায় আলোকিত গোল্ডেন টেম্পল বৌদ্ধবিহার।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.