সিলেটটুডে ডেস্ক | ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
গুরুত্ব বাড়ছে পর্যটন খাতে, তাই পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ব্যাপক উন্নয়নের কাজ করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে মালদ্বীপের আদলে সাজানো হচ্ছে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনে সি-প্লেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এতে বছরজুড়ে পর্যটকরা সেখানে যেতে পারেন। তবে পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সীমিত পর্যটক সেখানে ভ্রমণে করতে পারবে। এজন্য পর্যটকদের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
এছাড়া কক্সবাজার টু মহেশখালী এবং কক্সবাজার টু টেকনাফ ক্যাবল কার স্থাপন করা হবে। এতে করে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের বিনোদনে যুক্ত হবে ভিন্ন মাত্রা। সরকারের এসব কাজে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এসব প্রস্তাব যেন ফাইল বন্দি না থাকে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যান কমডোর মোহাম্মদ নুরুল আবছার বলেন, ‘প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের জন্য মাস্টারপ্ল্যান চলছে। সেন্টমার্টিনকে কিভাবে পরিবেশবান্ধব করা যায়, পর্যটকদের জন্য কিভাবে ভালো বিনোদনের ব্যবস্থা করা যায়, কিভাবে টেকসই পদ্ধতিতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো যায়- এই পরিকল্পনা চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরইমধ্যে মালদ্বীপের রিসোর্ট গ্রুপগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে, তাদের কাছ থেকে কারিগরি পরার্মশ নিয়ে সেন্টমার্টিন কিভাবে সাজানো যায় তারও চেষ্টা চলছে। এরই অংশ হিসেবে সরকার সি-প্লেন ও ক্রজ চালুর পরিকল্পনা চলছে। এটি চালু হলে সারাবছর সেন্টমার্টিন যাওয়া যাবে। এখন মাত্র ৪-৫ মাস (পর্যটন মৌসুম) সেন্টমার্টিন যাওয়া যায়।’
কক্সবাজারে ব্যাপক উন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার জানিয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এরমধ্যে কক্সবাজার টু মহেশখালী এবং কক্সবাজার টু টেকনাফ ক্যাবল কার স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে বিশাল আন্ডার সি অ্যাকুরিয়াম, সার্কুলার বাস টার্মিনাল, মেরিনা বে রিসোর্ট, খুরুশকুল স্মার্ট সিটি, থিম পার্ক, ইকো রিসোর্ট, চৌফলদন্ডীতে রিভাররেইন ট্যুরিজম করা হচ্ছে।’
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই কার্যক্রম যেন ফাইল বন্দি না থাকে। পর্যটন নগরীর উন্নয়নের কাজগুলো বাস্তবায়ন হলে পর্যটন সেবায় যুক্ত হবে ভিন্ন এক মাত্রা।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান বলেন, ‘কক্সবাজারে একে একে বাস্তবায়ন হচ্ছে মেগা প্রকল্প। সামনে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া সি-প্লেন এবং ক্যাবল কার প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পর্যটন সেবা আরও উন্নত হবে। এরমধ্য দিয়ে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আরও ভালোভাবে সেবা দেওয়া যাবে। তবে এই কাজ যেন বন্ধ না হয়।’
টুয়াকে’র দফতর সম্পাদক ফারুক আজম জানান, পর্যটকসেবায় সি-প্লেন এবং ক্যাবল কার চালু হলে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। পাশাপাশি পর্যটনখাতে রোল মডেলে পরিণত হবে কক্সবাজার।
স্থানীয়রা জানান, কক্সবাজারে বসেই মালদ্বীপের স্বাদ পাওয়া যাবে যদি পর্যটন সেবায় সি-প্লেইন আর ক্যাবল কার বাস্তবায়ন হয়। এতে পর্যটন নগরী আরও অনেক বেশি উন্নত হবে। তবে প্রত্যাশা এই প্রস্তাবগুলো যেন ফাইল বন্দি হয়ে না থাকে। কারণ বাস্তবতায় দেখা গেছে, অনেক স্বপ্নের প্রকল্প এখনও ফাইল বন্দি হয়ে রয়েছে।
তবে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যত দ্রুত সম্ভব এই উন্নয়নগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে এবং মেগা প্রকল্পসহ অনেক প্রজেক্ট চলমান। কয়েক বছরের মধ্যে হাতে নেওয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলো শেষ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।