Sylhet Today 24 PRINT

রাতারগুল : জল-জঙ্গলের এক অদ্ভুত গল্প

রাজীব রাসেল  |  ৩০ জুন, ২০১৬

ছবিঃ সংগৃহীত

সোয়াম্প ফরেস্ট বা জলমগ্ন অরণ্য হয়তো সবার কাছে ঠিক সমান পরিচিত নয়। কারো কারো কাছে এই নামটাই নতুন ঠেকতে পারে। জানা হোক বা অজানা, এখানে দেবো তেমনই এক সোয়াম ফরেস্টের সন্ধান।

নাম রাতারগুল। সিলেট শহরের খুব কাছেই এর অবস্থান। শহর থেকে গাড়িতে করে যেতে সময় লাগে মাত্র আধাঘন্টা। যাত্রাপথ আম্বরখানা, চৌকিদেখি হয়ে বিমানবন্দরকে পেছনে ফেলে হাতের ডানদিকের রাস্তা ধরে সাহেববাজারের দিকে। আম্বরখানার ইস্টার্ন প্লাজার সামনে থেকে লোকাল সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ৫০ টাকা। পথের দু'ধারে থাকা মালনীছড়া আর লাক্কাতুরা চা বাগানের সবুজ চোখে মেখে দ্রুতই পৌছে যাবেন গন্তব্যে। সিএনজি আপনাকে নামিয়ে দেবে একেবারে রাতারগুলের দ্বারপ্রান্তে মোটরঘাট নামক স্থানে। আর নিজস্ব পরিবহনে গেলে সাহেববাজারের কাছে গিয়ে স্থানীয় অধিবাসীদের জিজ্ঞেস করলেই পেয়ে যাবেন রাতারগুল আর সেখানকার ফরেস্ট অফিসের খোঁজ। স্থানীয় অধিবাসীরা রাতারগুলকে বলেন সুন্দরবন।

জল-জঙ্গলে ঢোকার আগে চোখে পাড়ি দিতে হবে একেবেকে বয়ে চলা এক শান্ত নদী, নাম তার সিঙ্গেরখাল। নামের বিবর্তনে যা আজ স্থানীয়দের কাছে চ্যাঙ্গেরখাল। শীতে পানি থাকে অল্প, আর বর্ষায় ঠিক উল্টো।

ছবিঃ বেলাল আহমেদ

এপারে ঘন বন, আর ওপারে জনবসতি। নদীর তীর ধরে চলে গেছে অরণ্যের প্রবেশ পথ। ফরেস্ট অফিস আর কিছু পরিত্যক্ত ধ্বংসাবশেষ পেরিয়ে চলে যেতে হবে গভীর অরণ্যের দিকে। সেই জলারন্য আপনাকে কি রূপে দেখা দেবে তা নির্ভর করে সময়ের ওপর। যদি সময়টা হয় ঘোর বর্ষা, তবে তা সর্বত্রই জলময়। বনে ঘুরে বেড়াতে প্রয়োজন হবে নৌকার।

নৌকায় ৪/৫ জন সহজেই বসা যায়, ভাড়া নেবে চার থেকে পাঁচশ' টাকা। ছোট বৃক্ষেরা তখন জলের নিচে, বড় বৃক্ষের দল মাথা উঁচু করে অর্ধেকটা জলের উপর। চারপাশে বিষধর সাপেরা তখন আপনার জন্যেই অপেক্ষমান। তাই সতর্কতা হিসেবে নৌকার চারধারে ছিটিয়ে দিতে হবে কার্বলিক এসিড। আরো চোখে পড়বে নানান প্রজাতির ব্যাঙ, সরীসৃপ আর বানর। ঘুরতে ঘুরতেই দেখা হয়ে যাবে জল আর জঙ্গলের মিশেলে গড়ে উঠা এক অসম্ভব রূপবতী জলারণ্যের সাথে।

আর সময়টা যদি হয় শীতকাল, তবে দেখতে পাবেন অরণ্যের ভিন্নরূপ। উঁচু বৃক্ষেরা সব পত্রহীন দাঁড়িয়ে আছে, নীচে শুকনো পাতার গালিচা বিছানো। পায়ের তলে মচমচ শব্দ তুলে হেঁটেই ঘুরে বেড়াতে পারেন এই বিশাল সোয়াম্প ফরেস্টের অনেকটা অংশে। শীতে গেলে সময়টা বাছাই করতে হবে জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে। বর্ষা পরবর্তী কাদা শুকিয়ে রাতারগুল তখন থাকে ঝলমলে।

ছবিঃ একুশ তাপাদার

বৈচিত্র্য সন্ধানী পর্যটকেরা সহজেই একটা চক্কর দিয়ে আসতে পারেন দেশের একমাত্র এই সোয়াম্প ফরেস্ট থেকে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.