Sylhet Today 24 PRINT

‘বন্ধন এক্সপ্রেসে’র উদ্বোধন করলেন হাসিনা-মোদি

সিলেটটুডে অনলাইন ডেস্ক |  ০৯ নভেম্বর, ২০১৭

খুলনা থেকে কলকাতা পর্যন্ত চলাচলকারী মৈত্রী ট্রেনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘দ্বিতীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস’ বন্ধন ট্রেনের উদ্বোধন করেন তারা। পাশাপাশি ঢাকা-কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী ট্রেনের ওয়ানস্টপ সার্ভিসও উদ্বোধন করেন তারা।

ভিডিও কনফারেন্সের শুরুতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।  এরপর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্রেনটির উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায়  বলেন, ‘এই দুটি ট্রেন চালুর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ঢাকা-কলকাতা ও খুলনা-কলকাতার যাত্রীদের সাফল্য কামনা করছি। আজ দুই দেশের মধ্যে নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘রেল খাতে দুই দেশের গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। আমাদের সম্পর্ক শুধুমাত্র সড়ক, রেল, নদী বা আকাশ পথে সংযুক্ত নয়। আমাদের সম্পর্ক এখন ইন্টারনেট ও ব্যান্ডউইথের সঙ্গেও সংযুক্ত।’এসময় ১৯৬৫ সালের আগে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যেসব রেলসড়ক নির্মিত হয়েছিল ধাপে ধাপে সেগুলো চালুর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। এই রেল সংযোগ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভারতের যাতায়াতের পথ সহজ করে দেবে বলেও তিনি আশা করেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে মোদি বলেন, ‘আরও আগে থেকেই আমি মনে করি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিবেশীর মতোই সম্পর্ক থাকা উচিত। মন চাইলেই কথা বলা উচিত, সাক্ষাৎ করা উচিত। প্রটোকলের বাধা থাকা উচিত না।...আজ এই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আমরা গুরুত্বপূর্ণ একটি কানেকটিভিটির উদ্বোধন করছি।’ এর আগে বাংলায় বাংলাদেশবাসীকে শুভেচ্ছাও জানান তিনি।

এর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হলো। গত ৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি এই ট্রেনের পরীক্ষামূলক উদ্বোধন করেন। দ্বিতীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস নামে এই ট্রেন সার্ভিস চালুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক ট্রান্স-এশিয়ান রেলরুটে অন্তর্ভুক্ত হবে বাংলাদেশ।

আগামী শুক্রবার (১০ নভেম্বর) থেকে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রীদের ইমিগ্রেশন, কাস্টমসসহ যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হবে যাত্রা স্টেশনেই। এ ক্ষেত্রে যারা কলকাতা যাবেন তাদের ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন এবং কলকাতা থেকে যারা বাংলাদেশে আসবেন তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কলকাতা স্টেশনেই সম্পন্ন করা হবে। ফলে মৈত্রী এক্সপ্রেসের মধ্যপথে আর কোথাও বিরতির প্রয়োজন হবে না। ট্রেনটি ননস্টপ চলাচল করবে।

এখন পর্যন্ত মৈত্রী ট্রেনের যাত্রীদের বাংলাদেশের দর্শনা ও ভারতের গেদে স্টেশনে ইমিগ্রেশন কাজ সারতে হয়। এ সময় যাত্রীদের সব মালামাল নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা সেরে আবারও মালামাল নিয়ে ট্রেনে উঠতে হয়। ইমিগ্রেশনের কাজ সারতে মাঝপথে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। বিষয়টি অনেক সময় যাত্রীদের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালুর পর এই সমস্যা আর থাকবে না।

রেল সূত্র জানায়, মৈত্রী ট্রেনে ঢাকা  থেকে কলকাতা পৌঁছাতে প্রায় ৩৭৫ কিলোমিটার দূরত্ব ভ্রমণ করতে হয়। এখন বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাতায়াতে যেখানে প্রায় ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা সময় লাগে সেখানে ওয়ানস্টপ ব্যবস্থা চালুর পর ভ্রমণ সময় ৯ থেকে ১০ ঘণ্টায় নেমে আসবে।

দুই বন্ধু প্রতিম দেশের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সহযোগিতার সম্প্রসারণে দীর্ঘ ৪৩ বছর পর ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল মৈত্রী ট্রেনের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত রেল যোগাযোগ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার ছাড়া ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে এখন সপ্তাহে ৬ দিন মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করে। এটি এখন সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ভাড়া ভ্রমণ করসহ ১৬৩৩ টাকা। প্রাপ্ত বয়স্কদের সঙ্গে ৫ বছরের নিচের বয়সের শিশুদের ৫০ শতাংশ কম ভাড়ায় যাতায়াত করতে পারে। প্রতিদিন উভয় দিক থেকে প্রায় ৫ শতাধিক যাত্রী এই ট্রেনে যাতায়াত করেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.