পিকলু চক্রবর্ত্তী, শ্রীমঙ্গল

০৬ জানুয়ারি, ২০১৮ ১৮:৪০

পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল

শ্রীমঙ্গলের দৃষ্টিনন্দন স্থান গুলি এক নজর দেখতে মরীয়া দূরদূরান্ত থেকে আগত ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা। চলছে শীতকালীন ছুটি। রোদ-কুয়াশার লুকোচুরি খেলা আবহাওয়াটাও দারুণ উপভোগ্য। এসুযোগটা কাজে লাগাচ্ছেন ইট-পাথরের বেষ্ঠনিতে থাকা ব্যাস্ত নাগরিকরা।

তাই ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকের সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের সুনামধন্য পর্যটন এলাকা মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানা। ভিড় বেড়েছে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, চা-বাগানসহ শ্রীমঙ্গলের স্থানীয় দর্শনীয় স্থানসমূহে। পর্যটনে রাতের শহরে এবারো বাড়তি আনন্দ হয়ে যোগ হয়েছে বিজয় মেলা। ট্রেন-নৌকা রাইড, শিশু গেইমসহ শতাধিক রাউন্ড স্টলও রয়েছে মেলায়। রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির নিজস্ব স্টল, ক্লাসিক্যাল হোম টেক্স, রক ও কালেকশন এবং রেস্টুরেন্ট। দিনের বেলায় পর্যটন স্পটসমূহ ঘুরে দেখে রাতে শহরের বিপণি কেন্দ্র ও মেলায় প্রাণচঞ্চল সময় পার করছেন পর্যটকরা। বছরের শেষ সময়ে পর্যটক সমাগম বাড়ায় তারকা হোটেল, পর্যটন মোটেল, গেস্ট হাউসসহ আবাসিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে টানা পূর্ণ বুকিংসহ রেস্তোরাঁ এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বধ্যভূমি ৭১ বিভিন্ন চা বাগান এলাকার ঘুরে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকদের গাড়ি রয়েছে প্রায় শতাধিক। বাস, মাইক্রো বাস, প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি লক্ষ করা যায়। লাউয়াছড়ার ট্যুর গাইডরা জানান প্রতিদিন প্রায় তিন-শতাধিক এরও বেশী পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন।

গত শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিনগুলোতে চা বাগানের আশে পাশে পর্যটকদের বেশ সমাগম লক্ষণীয়। শ্রীমঙ্গলের হবিগঞ্জ রোডস্থ টি হ্যাভেন রিসোর্ট এর ব্যবস্থাপক ও পরিচালক আবু সিদ্দীক মুসা জানান, রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত ও প্রকৃতি অনুকূল থাকায় এবারের মৌসুমটা ভালই কাটছে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের। সব বয়সের মানুষ বেড়াতে আসছেন শ্রীমঙ্গলে। আমার হোটেলে ডিসেম্বর এর পূর্ব থেকেই আগাম বুকিং রয়েছে। জানুয়ারি ফেব্রুয়ারিতেও আগাম বুকিং রয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পর্যটকদের সংখ্যা বেশী। এছাড়াও আমাদের কনফারেন্স হলে বিভিন্ন কোম্পানির বার্ষিক সভার জন্য আগাম বুকিং রয়েছে।

বিজয় দিবসের ছুটির পর থেকে শহর ও আশে পাশের সকল হোটেলের প্রায় সমস্ত কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে যায়। চলতি সপ্তায় শহরের অনেক হোটেল পূর্ণ বুকিং হয়ে আছে। যেসব গেস্ট হাউস আগাম বুকিং হয়নি তারাও ওয়াকিং গেস্ট নিয়ে ভালই ব্যবসা করে যাচ্ছেন। ভ্রমণ পিপাসুরা সমান তালে শীত উপেক্ষা করেও মাধবপুর লেইক, শ্রীমঙ্গল বধ্যভূমি, মাধবকুণ্ড ও হাম হাম জলপ্রপাতেও বেড়াতে যান।

এদিকে আগের সময়ের চেয়েও পর্যটক সেবার প্রতি বাড়তি নজর দিচ্ছে প্রশাসন। সার্বক্ষণিক ট্যুরিস্ট পুলিশ পর্যটন এলাকায় টহলে রয়েছেন। পর্যটক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ট্যুরিস্ট পুলিশের মৌলভীবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম মোশারফ হোসেন জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় পর্যটন স্পটসমূহে নিয়মের চেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। রাতদিন ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা বিধান করছে পুলিশ। গত বছরের তুলনায় এবছর পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পর্যটকদের সংখ্যা আরো বাড়তে পাওে বলে মনে করছেন তারা।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত