Sylhet Today 24 PRINT

দুই শিশুকন্যাকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৫ আগস্ট, ২০১৬

অবুঝ দুই শিশুকন্যাকে হত্যার পর বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন মা। পারিবারিক কলহের জেরে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়নের হারজী নলবুনীয়া গ্রামে রোববার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল থেকে মা নাজমুন্নাহার লাইজু (২৮) এবং দুই শিশু কন্যা মাইশা আক্তার কনা (২) ও  মাহিয়া আক্তার বেবির (৮ মাস) লাশ উদ্ধার করেছে।

কী কারণে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে তার সঠিক কারণ পুলিশ জানাতে পারেনি। দাম্পত্য কলহের জের ধরে মা তার দুই সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর নিজে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে এ ঘটনার পর গৃহবধূর স্বামী স্কুলশিক্ষক মনিরুজ্জামান ফরিদ খান পলাতক রয়েছেন। শিক্ষক মনিরুজ্জামান হারজী নলবুনীয় গ্রামের বাহার আলী খানের ছেলে। সে উপজেলার গুদিঘাটা সরোজিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী ধর্মীয় শিক্ষক পদে কর্মরত।

থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্কুলশিক্ষক ফরিদের সঙ্গে লাইজুর পারিবারিক সম্মতিতে তিন বছর আগে বিয়ে হয়। এ দম্পতির সংসারে দুই শিশুকন্যা- মাইশা ও মাহিয়া।

বিয়ের পর দুটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল। সম্প্রতি ফরিদ ও লাইজুর মধ্যে বিবাদ হলে ফরিদের শ্বশুর আবদুর রব বাড়িতে এসে মীমাংসা করে দেন।

রোববার ফরিদ নিজের কর্মস্থল স্কুলে চলে যান। ঘরে তখন স্ত্রী লাইজু ও তার দুই শিশুকন্যা মাইশা ও মাহিয়া ছিল। দুপুরের পর লাইজু পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে দুই শিশুকে বিষপান করিয়ে হত্যা করে। পরে সে নিজে বিষপান করে। এ সময় ঘরের দরজা বন্ধ ছিল।

বিকালে ফরিদ স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে মেঝেতে মা ও দুই শিশু সন্তানকে পড়ে থাকতে দেখেন। তার ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে।

স্থানীয় এক গ্রাম্য এক চিকিৎসক রিয়াজকে খবর দিলে তিনি এসে তিনজন মৃত বলে জানান। এরপর নিহত লাইজুর স্বামী ফরিদ পালিয়ে যান।

পরে প্রতিবেশীরা থানায় খবর দিলে পুলিশ সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে এসে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে লাইজুর বাবা আবদুর রব তালুকদার জানান, তার মেয়ে ও জামাতার মধ্যে দাম্পত্য বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি তিনি এসে উভয়ের মধ্যে সমঝোতা করে দিয়ে যান। এ সময় তার মেয়ে নিজের দুই কন্যাশিশুকে লালন-পালনে নানা সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছিল।

মঠবাড়িয়া থানার ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কী কারণে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে তার সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

তিনি জানান, মা ও দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় মঠবাড়িয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.