Sylhet Today 24 PRINT

ফুলবাড়ি ট্র্যাজেডির এক দশক : পূরণ হয় নি ৬ দফা দাবি

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৬ আগস্ট, ২০১৬

উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল, জাতীয় সম্পদ রক্ষা ও বিদেশি কোম্পানি এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ি থেকে প্রত্যাহার সহ ৬ দফা দাবিতে ফুলবাড়ি-ঢাকা মোড় এলাকায় জমায়েত হওয়া হাজার হাজার জনতার ওপর গুলিবর্ষণের কালো অধ্যায়যুক্ত ফুলবাড়ি ট্রাজেডির আজ ১০ বছর। ফুলবাড়ি ট্র্যাজেডির এক দশক হয়ে গেলেও পূরণ হয় নি ৬ দফা দাবি।

আহতরা অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করে বিছানায় শুয়ে দিন কাটাচ্ছেন। আর নিহতের পরিবারগুলো এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে স্বজন হারানোর বেদনা।

২০০৬ সালের ২৬ আগস্টে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল, জাতীয় সম্পদ রক্ষা এবং এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ি থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে সকাল থেকেই ফুলবাড়ির ঢাকা মোড়ে ফুলবাড়ি, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ ও পার্বতীপুর উপজেলার হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হতে থাকে।

দুপুর ২টার দিকে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ও ফুলবাড়ি রক্ষা কমিটির নেতৃত্বে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল নিমতলা মোড়ের দিকে এগুতে থাকলে প্রথমে পুলিশ বাধা দেয়।

পুলিশ-বিডিআর'র ব্যারিকেড ভেঙ্গে মিছিলটি এগুতে থাকলে আন্দোলনকারীদের উপর টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ও গুলিবর্ষণ করে।

সে সময় বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর পুলিশ-বিডিআরের গুলিতে এ সময় নিহত হয় আল আমিন, সালেকীন ও তরিকুল। আহত হয় ২ শতাধিক আন্দোলনকারী জনতা। আহতদের মধ্যে অনেকেই এখন পঙ্গু।

এ দিনই প্রতিবাদী জনতা উত্তেজিত হয়ে ফুলবাড়িতে অবস্থিত এশিয়া এনার্জির কার্যালয় ভেঙে দেয়। শুরু হয় লাগাতার হরতাল। সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ফুলবাড়ি।

এরই মধ্যে ৩০ আগস্ট তৎকালীন সরকারের সঙ্গে আন্দোলন কমিটির সঙ্গে ৬ দফা চুক্তির পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

৬ দফা দাবির মধ্যে এশিয়া এনার্জিকে দেশ ত্যাগ করা, দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা যাবে না, নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদান, নিহতদের স্মরণে স্মৃতি সৌধ নির্মাণ, গুলি বর্ষণে দায়ীদের শাস্তি ও আন্দোলনকামী সব জনতার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করা।

দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার (২৬ আগস্ট) ফুলবাড়ির নিমতলা মোড়ে এক সমাবেশে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ৬ দফা দাবি একদশকেও পূরণ করা হয়নি। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, দালালদের দৌরাত্ম্য ও ৬ দফা দাবি পূরণ না হলে আগামীতে নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে।

নতুন ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ২৫ অক্টোবর নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও, ২১ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও এবং ২১ ডিসেম্বর অর্ধদিবস হরতাল পালন।

শুক্রবারের সমাবেশ শেষে ফুলবাড়ি রক্ষা আন্দোলনের নেতাকর্মী ও ফুলবাড়িবাসীর ব্যানারে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ এক শোক র‌্যালি ও শহীদদের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী বিডি রহমতুল্লাহ, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক কমরেড টিপু বিশ্বাস, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.