Sylhet Today 24 PRINT

‘মা আমায় ক্ষমা করো, আমি আল্লাহর রাস্তায় চলে গেছি’

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৯ মার্চ, ২০১৭

সংগৃহীত

সদ্য ঢাকার দোহার থানাধীন এলাকা থেকে নব্য জেএমবির সারোয়ার তামিম গ্রুপের ৪ সদস্যকে আটক করার পর দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব।

মঙ্গলবার র‌্যাব ১০ এর একটি আভিযানিক দল দোহার থেকে মিজবাহ (১৯) ও তার ভাই মাহফুজ (১৬) কে আটক করে। তাদের কাছ থেকে জঙ্গি প্রশিক্ষণের বই ও যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করে। তার ছোটভাইয়ের কাছ থেকে একটি হাতে বানানো ছুরি উদ্ধার করে। মিজবাহকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দোহারের নারিশা এলাকা থেকে নব্য জেএমবির আরেক সদস্য তাইবুর রহমান (১৮) কে আটক করা হয়। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে আরও কয়েকজনের তথ্য পায় র‌্যাব। পরবর্তীতে মিজবাহ, মাহফুজ ও তাইবুরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হিজরতে থাকা ফয়সাল আহমেদ সানিলকে দোহারের জজপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।

মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নব্য জেএমবির তামিম-সারোয়ার গ্রুপের ফয়সাল আহমেদ সানিল (১৯) নামে এক জঙ্গি হিজরতে যায়। ঘটনা আঁচ করতে পেরে তার মা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর তাকে গ্রেফতারে কাজ শুরু করে র‌্যাব। কোনও নাশকতার আগেই সে ধরা পড়ে র‌্যাবের হাতে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। মিলছে তামিম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের আলামতও।

র‌্যাব-১০ এর এক কর্মকর্তা বলেন,‘আটককৃত ফয়সাল আহমেদ ২০১৫ সালে মাদ্রাসায় লেখাপড়া শেষ করে রানাকান্দা ইস্পাহানী কলেজে আবারও ভর্তি হয়। ২০১৬ সালের দিকে মিজবাহর কাছ থেকে সে উগ্রবাদের বিষয়ে দীক্ষা নেয়। ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে সে চট্টগ্রামের মহসিনের কাছে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেয়। গত ২৬ মার্চ সে হিজরতে যায়। তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে কেরাণীগঞ্জ থানায় গত ২৭ মার্চ তার মা জিডি করেন।’

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ফয়সাল হিজরতে যাওয়ার সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বাড়িতে রেখে যায়। তার ওই ফোনে মিজবাহ ফোন দেয়। তখন তার মা ফোনটি রিসিভ করেন। তখন মিজবাহ দুয়েকটা কথা বলে রেখে দিতে চায়। কিন্তু, ফয়সালের মা মিজবাহকে তার ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এরপর মিজবাহ ফেসবুকে ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করে থানায় জিডির বিষয়টি জানায়। এর প্রত্যুত্তরে কেন তার মোবাইল ফোন ফয়সাল ব্যবহার করেছে তা নিয়ে রাগ করে ফয়সাল। এরপর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ফয়সাল মিজবাহকে বলে, আমি আল্লাহর রাস্তায় আছি, মাকে বলবেন আমাকে যেন ক্ষমা করে দেয়।’

এদিকে তাইবুর ফয়সালের মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দিয়ে সে একা কেন হিজরতে গেল সে বিষয়ে অনুযোগ করে। এসব তথ্য র‌্যাব সংগ্রহ করেছে।

র‌্যাব জানায়, আটককৃত মিজবাহ বর্তমানে নবাবগঞ্জ সোনাহাজরা মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। পড়ালেখার পাশাপাশি সে একটি মোবাইল সার্ভিসিং দোকানে কাজ করতো। কথিত এক বড়ভাইয়ের মাধ্যমে সে জঙ্গিবাদে জড়ায়। ২০১৫ সালের শেষ দিকে সে তামিম-সারোয়ার গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০১৬ সালে একটি আঞ্চলিক মিটিংয়ে অপর জঙ্গিনেতা অলির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মিজবাহ মেকানিক হিসেবে কাজের আড়ালে জেএমবির সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠনের জন্য বিভিন্ন প্রকার ইম্প্রোভাইজ ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস (আইইডি) তৈরির কাজ শিখতো। অপরদিকে, মিজবাহর ভাই মাহফুজ জয়পাড়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। বড়ভাই মিজবাহর মাধ্যমে সেও জঙ্গিবাদে জড়ায়। মাহফুজ জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তাগুদ (শত্রু)দের হত্যার জন্য জিহাদে অংশগ্রহণ করছে তারা।

মিজবাহ বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে তামিম চৌধুরীর সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করেছে বলেও র‌্যাব দাবি করেছে।

জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, ‘নব্য জেএমবির চোখে কাফের হলো তারাই, যারা এই সরকারকে ভোট দেয়। সরকারের কাজ করে। এই ধরনের লোককে টার্গেট করে তাদের হত্যা করতে চায় তারা।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.