Sylhet Today 24 PRINT

জুম চাষে বিপর্যয়, সাজেকে তীব্র খাদ্য সংকট

প্রান্ত রনি, রাঙামাটি |  ০১ মে, ২০১৭

পাহাড়ের পাদদেশে জুম চাষ, বাঁশ ও বনজ সম্পদ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে সাজেকের দুর্গম গ্রামগুলোর ৪১০টি পরিবার। কিন্তু এ বছর জুম চাষে বিপর্যয় এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উৎস হ্রাস পাওয়ায় প্রাক-বর্ষা মৌসুম থেকে সাজেকের প্রায় ৪০টি দুর্গম গ্রামে আর্থিক অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে ওইসব গ্রামগুলোতে। 

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রাথমিক পর্যায়ে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুকুলে ১০ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দিয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আরও বরাদ্দ দেওয়া হবে।

রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা বলেন, আমরা বরাদ্দের কাগজ হাতে পেয়েছি। বিষয়টি সাজেক ইউয়িনের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। আশা করছি, মঙ্গলবারের মধ্যে চেয়ারম্যানকে বরাদ্দ বুঝিয়ে দিতে পারবো।

এদিকে, খাদ্য সংকট মোকাবেলায় গত ২১ এপ্রিল সাজেক ইউনিয়নের ব্যাটলিং তারুং পাড়ায় বাঘাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলার সব ইউপি চেয়ারম্যানদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেওয়া ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

সাজেকের কজতলী পাড়ার গ্রাম্য প্রধান কালা চাঁন ত্রিপুরা জানান, তার গ্রামবাসীর প্রধান জুমিয়া পরিবার আর্থিক অনটনের কারণে তীব্র খাদ্য সংকটে পড়েছে। তারা জুম চাষ ও পাহাড় থেকে বনজ সম্পদ আহরণ করে জীবিকা চালায়। কিন্তু বিগত সময়ে জুম চাষে ফসল কম হওয়ার কারণে গত চৈত্র মাস থেকে কজতলী গ্রামসহ অনেক গ্রামে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। দ্রুত যদি ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে খাদ্যের অভাবে লোক মারা যেতে পারে।

সাজেক ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার দহিন্দ্র লাল ত্রিপুরা জানান, সাজেকের পুরান জোপুই, নতুন জোপুই, উদলছড়ি, পুরান থাঙনঙ, নতুন থাঙনঙ থারুম পাড়া-সহ ২০টির মতো গ্রামের মানুষ আর্থিক অভাবের কারণে চাল কিনতে পারছে না। সাজেকের অধিকাংশ গ্রামে এখনও পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নাই। যার কারণে ৯০ কি.মি. পথ পায়ে হাঁটা তাদের একমাত্র মাচালং বাজার থেকে কোনও পণ্য ক্রয় করে ওইসব গ্রামে নেওয়া পর্যন্ত খরচ পড়ে ক্রয়মূল্যের তিনগুণ। ফলে এসব গ্রামে প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১১০ টাকা। যার কারণে সাজেকের অধিকাংশ গ্রামের মানুষ খাদ্য কিনতে পারছে না।

সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা জানান, খাদ্য সংকটের কথা শুনে গত ২১ এপ্রিল দুর্গত এলাকার ৪১০ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। ইতোমধ্যে জেলা পরিষদের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় ১০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দিয়েছে। এগুলো দ্রুত বিতরণ করা গেলে খাদ্য পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.