Sylhet Today 24 PRINT

ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে চোখ হারালো স্কুলছাত্র রাসেল

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১০ মে, ২০১৮

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফের রাবার বুলেটে আহত বাংলাদেশি স্কুলছাত্র রাসেল মিয়া (১৫) ডান চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। সে ওই চোখ দিয়ে কখনই আর পৃথিবীর আলো দেখতে পাবে না।

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের  চিকিৎসকের বরাত দিয়ে রাসেল মিয়ার বড় ভাই রুবেল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিকেলে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আহত রাসেল মিয়া বর্তমানে ঢাকায় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রাসেল মিয়া কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বালাটারী (নোয়াখালিটারী) গ্রামের আব্দুল হানিফ মিয়ার ছেলে। সে বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র।

গত ৩০ এপ্রিল বিকালে ফুলবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশের ২০ গজ অভ্যন্তরে গবাদি পশুর ঘাস সংগ্রহ করতে গিয়ে বিএসএফের রাবার বুলেটের আঘাতে স্কুল ছাত্র রাসেল মিয়া আহত হয়। ঘটনার দিনই রাসেলকে রংপুরের প্রাইম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে ৪ মে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার শেরেবাংলা নগরের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে বর্তমানে ২৩৬ নং রুমের ৯ নং বেডে চিকিৎসাধীন।

এদিকে, চোখ নষ্ট হওয়ার খবর জানতে পেয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে ১৪ বছরের স্কুল ছাত্র রাসেল মিয়া। ওই হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুধু চোখের জলে বুক ভাসাচ্ছে সে।

রাসেল মিয়ার বড় ভাই রুবেল ইসলাম জানান, ছোট ভাই রাসেল মিয়ার এক চোখের দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। অপর চোখে সামান্য দৃষ্টিশক্তি রয়েছে মাত্র। ভারতীয় বিএসএফ শুধু রাসেলের চোখ নয়, তার পুরো ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিয়েছে।

রুবেল আরো জানান, রাসেলের মুখমণ্ডলে এখনও প্রায় ৪০টির বেশি গুলির চিহ্ন রয়েছে। যেগুলো অপারেশন ছাড়া বের করা সম্ভব নয়। বর্তমানে তার চিকিৎসা খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে তার পরিবার।

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. মোশারফ হোসেনের বরাত দিয়ে রুবেল ইসলাম জানান, রাসেলের দুই চোখেই বুলেটের আঘাত রয়েছে। তার ডান চোখের ভিতর প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়েছে। ডান চোখে বুলেটের দুটি স্প্লিন্টার এবং বাম চোখে একটি স্প্লিন্টার রয়েছে যা অপারেশন করে বের করতে হবে। অপারেশনের পর বাম চোখে সামান্য দৃষ্টিশক্তি থাকলেও ডান চোখে আর কখনই দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবে না রাসেল মিয়া।

রাসেলের বাবা আব্দুল হানিফ কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ছেলে রাসেল মিয়া বারবার হাসপাতালের বেডে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে- 'বাবা আমার এখন কি হবে! আমিত চোখে কিছুই দেখছি না বাবা। হে আল্লাহ তুমি আমার চোখের আলো ফিরেয়ে দাও!'

আব্দুল হানিফ আরও জানান, গত কয়েক দিনেই ছেলের চিকিৎসা বাবদ ধার-দেনা ও গুর-ছাগল বিক্রি এবং শেষ সম্বল ত্রিশ শতক জমি বন্ধকের টাকাসহ মোট দেড় লাখ টাকা নিমিষেই চলে গেল।

তিনি বলেন, তার ছেলের চিকিৎসার জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতার আবেদন জানাচ্ছি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.