Sylhet Today 24 PRINT

মুসল্লিদের জন্যে খুলল রাধামাধব মন্দিরের আঙিনা

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৮ অক্টোবর, ২০১৮

রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের নরন্ডী গ্রামের রাধামাধব মন্দির। দুটো আলাদা ঘরে রাধামাধব ও দুর্গার মূর্তি। বটগাছের নিচে চার শৌচাগার, একটি নলকূপ আর দুটো পানির টেপ; ওখানে নলকূপের পানিতে কেউ ওজু করছেন, কেউবা লাইন ধরে দাঁড়ানো শৌচাগারের সামনে, উন্মুক্ত মন্দিরের আঙিনা; মন্দিরে ভিড় জমানো সকলেই মুসলমান, সারছেন তাদের প্রাত্যহিকতা। এরপর ফিরে যাচ্ছেন ইবাদত-বন্দেগি-তাবলিগে।

মন্দিরে সামনের এই পরিবেশে ধূপের আবছায়ায় বসে আছেন পুরোহিত। কাঁসার ধ্বনি, প্রাত্যহিক পূজার আয়োজন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই নজির স্থাপন করল কেরানীগঞ্জের রাধামাধব মন্দির কর্তৃপক্ষ।

গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে কেরানীগঞ্জে জড়ো হয়েছিলেন তাবলিগ জামাতের আমির মাওলানা সাদ কান্দলভীর ঢাকা জেলার অনুসারীরা। সহস্রাধিক মুসল্লি খোলা মাঠে শামিয়ানা টানিয়ে দুই দিন অবস্থান করেন। পানি আর শৌচাগারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় আশপাশের সব ধর্মের লোকই তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। মাঠের এক কিনারে থাকা রাধামাধব মন্দিরও খুলে দেয় তাদের আঙিনা। তথ্যসূত্র প্রথম আলো।

প্রতিবেদনে প্রথম আলো জানায়, সাত বছর ধরে মন্দিরের পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করছেন সন্তোষ চক্রবর্তী। ইজতেমার মুসল্লিদের জন্য মন্দির প্রাঙ্গণ উন্মুক্ত করে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, হিংসা–বিদ্বেষের মধ্যে কিছু নেই। যার যার ধর্ম তার তার কাছে। এই মানুষগুলো এখানে এসে পানি পাচ্ছিলেন না ঠিকমতো, শৌচাগারেরও তেমন ব্যবস্থা ছিল না। সবকিছুর ঊর্ধ্বে মানবসেবা, তাই পুরো প্রাঙ্গণ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

রাধামাধবের মূর্তির ঘরের সামনে মেঝেতে বিছানা বিছিয়ে শুয়ে থাকা গেন্ডারিয়া থেকে আসা আবুল কাশেম বলেন, মুসল্লিদের সুবিধার জন্য শুক্রবার সারা দিন মন্দিরে ওরা কোনো পূজাই করেনি। রাতে বাইরের লোকজন এসে ঝামেলা সৃষ্টি করতে পারে, এমন খবর তাদের কাছে ছিল। তাই ২০ জনের দলে ভাগ হয়ে দুই ঘণ্টা করে সারা রাত তারা মন্দির পাহারা দিয়েছেন।

গাজীপুর থেকে ইজতেমায় অংশ নেওয়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, অনেক মানুষের ফায়দা হয়েছে। অনেকে দূর–দূরান্ত থেকে এসে কিছুটা বেকায়দায় পড়েছিলেন। মন্দিরের লোকজনই তখন ডেকে তাদের পানি ও শৌচাগার ব্যবহার করতে বলেছেন।

মন্দির কমিটির সদস্য রাধাগোবিন্দ মণ্ডল বলেন, মানবসেবা হচ্ছে বড় ধর্ম। মুসল্লিদের পাক-পবিত্রতার জন্য পানির প্রয়োজন ছিল। দূর–দূরান্ত থেকে তারা এসে কিছুটা বিপাকে পড়েছিলেন। মন্দির কর্তৃপক্ষ এর কিছুটা ব্যবস্থা করতে পেরে আনন্দিত।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.