Sylhet Today 24 PRINT

তামাকমুক্ত, ক্লিন ও গ্রিন সিটি নিশ্চিতে সামাজিক প্রতিরোধের আহ্বান ক্যাবের

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

চট্টগ্রামের হালিশহরে পানির লাইনে লিকেজ ও বাসা-বাড়ির সোয়ারেজের জন্য সেফটি ট্যাঙ্ক না থাকায় পানির লাইনের সাথে যুক্ত হয়ে ড্রেনেজে মিলেছে। আর এ কারণে গত বছর পুরো হালিশহর জুড়ে ডায়রিয়া ও জন্ডিস মহামারী আকারে ছড়ালেও চট্টগ্রাম ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কোন কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম। তামাকমুক্ত, ক্লিন ও গ্রিন সিটি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বন্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সমাজ পরিবর্তনকামি মানুষের প্রতি আহবান জানায় ক্যাব চট্টগ্রাম।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) নগরীর ন্যাশনাল হাউজিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১নং দক্ষিণ কাট্টলী ক্যাব ওয়ার্ড কমিটির অরিয়েন্টেশনে বিভিন্ন বক্তাগণ এ অভিযোগ করেন।

গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাব জানায়, বাসাবাড়ির মলমূত্র সরাসরি ড্রেনেজের সাথে যুক্ত হয়ে পুরো পরিবেশ যেমন দুষিত করছে, তেমনি বাতাস কলুষিত ও দুর্গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে আছে। আবার জলাবদ্ধতায় সমস্ত সড়কগুলি তলিয়ে গিয়ে মাটির সাথে মিশে আছে, ধুলাবালি ও আবর্জনায় পুরো হালিশহর যেন আবর্জনার স্তূপ, তেমনি হালিশহরে আবারও পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব হয়ে প্রাণহানির সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিলেও প্রশাসনও নির্বিকার।

এজন্যে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে হালিশহরবাসীকে চরম দুর্দশা থেকে মুক্তি দানের দাবি জানিয়েছেন।

বক্তারা আরও বলেন, ধূমপান বিষপান, ধূমপান ও তামাকজাত পণ্য সেবন যেমন মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তেমনি অনিরাপদ ও ভেজাল খাদ্য মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং জীনবরক্ষাকারী ভেজাল ওষুধের ছড়াছড়ির কারণে জীবন বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই মানুষের জীবন বাঁচানো, পরিবেশ দূষণ রোধ, নির্মল বায়ু, নিরাপদ ও সুপেয় পানি নিশ্চিত করা না হলে মহামারী ডায়রিয়া ও জন্ডিস পুনরায় প্রাণঘাতী ও ভয়ংকর হতে পারে। কিন্তু প্রশাসনের দায়িত্বশীল লোকজনের খামখেয়ালীপনায় যেন জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে না উঠে সে বিষয়ে যথাযথ নজরদারি নিশ্চিত না হলে সত্যিকারের সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

ক্যাম্পেইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস’র সহায়তায় পিপলস জুবিল্যান্ট এনগেজমেন্ট ফর টোবাকো ফ্রি চিটাগাং সিটি প্রকল্প, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের আয়োজনে অরিয়েন্টেশনে সভাপতিত্ব করেন ক্যাব ১১নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি নার্গিস আক্তার নীরা।

প্রধান অতিথি ছিলেন হালিশহর ক্যাবের উপদেষ্টা এস এম আজিজ, মুখ্য আলোচক ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সোনালী সন্দীপের উপদেষ্টা মিনহাজউদ্দীন কদভী, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব আকবর শাহ থানা সভাপতি ও লিও জেলা চেয়ারপার্সন ডা. মেসবাহ উদ্দীন তুহিন। আলোচনায় অংশ নেন সোনালী সন্দীপের উপদেষ্টা ডা. মোজাম্মেল হোসেন, ন্যাশনাল হাউজিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. জাফর আলম, ক্যাব হালিশহরের সভাপতি এমদাদুল করিম সৈকত, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন, আলোকিত সংস্থার সেক্রেটারি আবদুল লতিফ, বাদসাহ, আবু ইউসুফ সন্দীপি, আবদুল হালিম নাছির, মোসাদ্দেক আহমদ, ক্যাব ডিপিও জহুরুল ইসলাম, জেড এইচ শিহাব প্রমুখ।

ক্যাব ডিপিও জহুরুল ইসলামের মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনায় তামাকজাত পণ্য ও ধূমপানের বিজ্ঞাপন বন্ধে আইনি প্রতিকারের বিষয়ে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন এবং করণীয় নিয়ে আলোকপাত করেন।

বক্তারা বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের কোন উপকারিতা আজ পর্যন্ত আবিস্কার করতে না পারলেও সিগারেট কোম্পানিগুলি নানা উপায়ে বিজ্ঞাপন, উপঢৌকন ও প্রণোদনা দিয়ে তরুণদেরকে বিড়ি সিগারেট এ আসক্ত করছে। যার সর্বশেষ পরিণতি হচ্ছে একটি সম্ভাবনাময় জীবনের পরিসমাপ্তি। বিষয়গুলো জানার পরও মানুষ তামাকে আসক্ত হচ্ছে। নিজে ধূমপায়ী না হলেও পরিবারের অন্য ধূমপায়ীর পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক এখন মহামারী আকারে দাঁড়িয়েছে। তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ন্ত্রণে ধূমপান বিরোধী আইনের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই ধারা বিধান লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব ৩ মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবার বিধান থাকলেও আইন প্রয়োগের ঘটনা তেমন একটা দেখা যায় না। ফলে নগরজুড়ে ধূমপানের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা এমনকি প্রশাসন, আদালত, হাসপাতাল, ক্লিনিক, হোটেল-রেস্তোরায় প্রবেশ পথে ও মুদি দোকান, নগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও ধূমপানের বিজ্ঞাপন ও বিক্রি মুক্ত নয়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.