Sylhet Today 24 PRINT

করোনায় হঠাৎ নেতাশূন্য এলাকা, ভরসা প্রধানমন্ত্রীর অনুদান

এস এম স্বপন, বেনাপোল |  ৩০ মার্চ, ২০২০

করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) সারাবিশ্বের প্রায় দুইশ দেশে হানা দিয়েছে। আর এ কারণে করোনাকে বিশ্ব মহামারী হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সেই সাথে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিজেদের দেশকে লকডাউন ঘোষণা করেছেন। তারই জের ধরে করোনার সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আর এই ঘোষণার পর থেকে সারাদেশের ন্যায় যশোরের শার্শার সাধারণ খেটেখাওয়া মানুষও নিজেদেরকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন।

ছুটি ঘোষণার পর থেকেই হঠাৎ যেন নেতাশূন্য হয়ে গেছে পুরো শার্শা উপজেলা। কোথাও কোন নেতার আনাগোনা চোখে পড়ছে না। যেসব নেতাদের বড় বড় পোস্টারে ছেয়ে রয়েছে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের দু'পাশ জুড়ে। যারা বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হলে সামনের কাতারে থাকতো তাদের আজ দেশের ক্রান্তিলগ্নে পাশে না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শার্শার সাধারণ জনগণ। কয়েকজন নেতা বা বিভিন্ন সংগঠন থেকে গরীবদেরকে সাহায্য দেওয়া হলেও, সেলফির ভিড়ে তা যেন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এসব দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের দু'মুঠো ভাতের ব্যবস্থা করবে, এমন নেতার যেন বড়ই অভাব পড়েছে শার্শা উপজেলায়।

অনেকে বিদ্রূপ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন, "অমুক ভাই, তমুক ভাই, তাদের এখন দেখা নাই"। "কোথায় গেল রাস্তার দু'ধারে পোস্টার লাগানো নেতারা"। "করোনার ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছে নেতারা"। এরকম অনেক পোস্ট করছেন তারা।

"দিন মজুর, ভ্যান চালক, তারা তো এখন ভ্যান চালাতেও পারছে না। কাজও করতে পারছে না। তাই তাদেরকে সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করার আহবান জানান অনেকে।” তবে আশার আলো এই, 'ঘরে থাকার তৃতীয় দিনে' যশোরের শার্শা উপজেলার এক হাজার দুঃস্থ পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অনুদান পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মণ্ডল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১০০০টি দুস্থ পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তাকে ট্যাগ কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে প্রতিটি ইউনিয়নে এটি তদারকি করা হচ্ছে।

"প্রতিটি প্যাকেটে ১০কেজি চাল, ১কেজি ডাল,২কেজি আলু ও একটা সাবান রয়েছে।"

করোনাভাইরাসের জন্য সরকারি অনুদান বাগআঁচড়া ইউনিয়নের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের এরিয়া ম্যানেজার পলাশ চন্দ্র মণ্ডল ট্যাগ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন।

তিনি বলেন, বাগআঁচড়া ইউনিয়নে ৮০টি পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর অনুদান পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

চায়ের দোকানদার মহসিন (৪০) বলেন, ভোটের আগে নেতাদের দৌড়ঝাঁপ দেখা যায়। এখন না খেয়ে আছি, কেউ খোঁজ খবরও নিচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর অনুদান পাওয়ায় না খাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবো।

ভ্যান চালক আজিজ (৫০) বলেন, "এখন ভ্যান চালাতি পারছিনে, আয় রোজগার নেই। প্রধানমন্ত্রীর এই অনুদান আমার জন্যি আশীর্বাদ। অন্তত ছেলেপিলে নিয়ে দু'মুঠো খাওয়ার ব্যবস্থা হলো।"

বাগআঁচড়ার তাছলিমা খাতুন (৪৫) বলেন, আমাদের কোন জায়গা জমি নেই, হোটেলে কাজ করে সংসার চালায়। এখন হোটেল বন্ধ তাই না খেয়ে মরা ছাড়া উপায় নেই। সরকারি এই অনুদান পেয়ে আমরা খুব খুশি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.